(ইংরেজী থেকে অনুবাদ)
Md Max
বইটিকে ঠিক কোন ধারার বইয়ের কাতারে ফেলা উচিত তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে।
পড়ার পর আমার মনে হবে আসলেই তো, কী নেই এখানে! জীবন, দর্শন, তত্ত্ব, ধর্ম, নারী, মাদক, যুদ্ধ, অপরাধজগৎ, অন্ধকার, আলো সবকিছু নিয়েই মোটের উপর উপন্যাস হিসেবেই বাজারে প্রচলিত।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের কোবার্গ শহরে অবস্থিত ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি প্রিজন ‘পেন্টরিজ’। গল্পের মূল চরিত্র একসময় ছিলেন হিরোইনে আসক্ত একজন ব্যাংক ডাকাত, তার ১৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়, আর তাকে রাখা হয় এই জেলখানায়। সেখান থেকে দিনে-দুপুরে দেয়াল টপকে পালিয়ে ভারতে আসেন। তারই জবানীতে পুরো উপন্যাসের যাত্রা, যেখানে প্রতিটা সংলাপে আপনি পাবেন ভিন্ন মাত্রা। ঘটনাক্রমে পরবর্তী দশ বছরে তিনি হয়ে উঠেন, অস্ট্রেলিয়ার মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান। Lindsay Ford নামে নকল পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে আসলেও পরবর্তীতে বোম্বে আন্ডারওয়ার্ল্ডে তিনি লীন বা শান্তারাম নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
অপরাধী হিসেবে জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতায় তিনি লীন থেকে শান্তারাম কীভাবে হয়ে উঠেন সেই যাত্রার বর্ণনা উঠে আসে উপন্যাসে। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে তার মানবিক পরিবর্তন ঘটে, সাথে ঘটে আত্মিক উন্নতি। যাদের সংস্পর্শে এ সকল পরিবর্তন ঘটে এই উপন্যাসে, কিংবা বোম্বে আন্ডারওয়ার্ল্ডে, কোনোটিতেই তাদের ভূমিকা কম নয়। তবে তার আগে বোম্বে’র বস্তিতে বসবাসরত সাদা চামড়ার মানুষ লীন কীভাবে বস্তির মানুষের সাথে মিশে যায়, মারাঠি ভাষা শিখে, এসবের দৈনন্দিন নিটোল বিবরণ শুনতে শুনতেই গল্প জমে যাবে।
এই উপন্যাসের৩ টি পার্ট আমি প্রথমবারের মত সিবিএন পাঠকদের জন্যে বাংলা অনুবাদ করেছি।
যেহেতু বইটি প্রায় ৯৩০ পৃষ্ঠার তাই আমি খুব আলোচিত ২ টি অংশের সাথে এ-র শুরু টি আর জেল থেকে পালানোর পর্বটি অনুবাদ করেছি।
পর্ব ১
প্রকৃত ভালবাসা,ঘৃণা আর আমরা কি চাই আর এই পৃথিবীটাকে জানতে আমার অনেকদিন লেগেছিল কিন্ত তার আসল রুপটা আমার কাছে হঠাৎ করেই ধরা দেয়, তখনই যখন আমাকে দেওয়ালের সাথে চেইন দিয়ে আটকে দেওয়া হয় আর নির্যাতন করা হয়ে।
এই চেইন পরা, আর রক্তেমাখা অসহায়ত্বের মাঝেও আমি মুক্ত, যারা আমাকে অত্যাচার করছে তাদের ঘৃণা করতে বা ক্ষমা করে দিতে আমি মুক্ত।
এটি তেমন কিছুনা, কিন্তু
চেইনের আঘাতের ভয়ে তুমি যখন জর্জরিত সেখানে স্বাধীনতা প্রায় অসম্ভব।
আর ক্ষমা করবে নাকি ঘৃণা করবে সেটাই তোমার জীবন হয়ে দাড়ায়।
আমার ক্ষেত্রে, তা অনেক লম্বা আর আঠালো কাহিনি।
আমি একজন বিপ্লবী যার মতাদর্শ হেরোইনে শেষ হয়ে গিয়েছে, একজন দার্শনিক যার সততা অপরাধে ধংশ হয়েছে আর একজন কবি যার আত্না কারাগারে হারিয়ে গিয়েছে।
আমি যখন দুই টাওয়ারের মাঝ দিয়ে, সামনের দেওয়াল দিয়ে ঐ জেলখানা থেকে পালালাম তখন আমি আমার দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান।
ভাগ্য আমার সাথে সারা ভারতবর্ষে ঘুরে বেড়াল আর আমি বোম্বে মাফিয়ার সাথে জড়িত হয়ে গেলাম।
আমি বন্দুকবাজ, চোরাইকারবারী আর জালবাজ।
আমাকে ৩ টি ভিন্ন মহাদেশে চেইন পরা হল, মারা হল, ছুরি দিয়ে আঘাত করা হল আর উপোস রাখা হল।
আমি যুদ্ধ করেছি, শত্রুর আক্রমণে পরেছি আর আমি বেঁচে গিয়েছি যেখানে আমার আশপাশের সবাই মৃত।
তারা সবাই আমার চেয়েও অনেক ভালো ছিল, যাদের জীবন ভুলে ছিটকে গিয়েছে, জীবন খোয়া গিয়েছে আরেকজনের ঘৃণার বশির্বতী হয়ে, ভালোবাসা আর উদাসীনতার পদতলে।
আমি সবাইকে অন্ত্যষ্টক্রিয়া করিয়েছি, তাদের দুখে কান্না করেছি, তাদের জীবনের সাথে মিলিয়েছি।
কিন্ত আমার জীবন তাদের বা মাফিয়াদের নিয়ে শুরু হয়নি।
এটি আমার বোম্বেতে প্রথম দিন দিয়েই শুরু করাবে। ভাগ্য আমাকে এই খেলায় নিয়ে এসছে।
ভাগ্যের তাস আমাকে কার্লা সারানীনের কাছে নিয়ে এসেছে।
আর আমি খেলাটা প্রথম তার হাত আর তার সবুজ চোখের দিকে দেখার পর থেকেই প্রারম্ভ করেছিলাম।
আর এই কাহিনি এক নারীর, এক শহরের আর ভাগ্যের।
বোম্বেতে যে জিনিসটা প্রথমেই আমি খেয়াল করলাম তা হলো বাতাসের গন্ধের ভিন্নতা।
আমি তা দেখার আগেই আমি শুকতে পারি, এমনকি যে যে বিমানবন্দর আর নাভির করিডর দিয়ে প্রথম হাঠছিলাম তখনও।
আমি এতে খুবই শিহরণ অনুভব করেছি আর জেল থেকে পালিয়ে এসে বোম্বাইতে আমার প্রথম মুহূর্ত আর নতুন বিশাল পৃথিবী।
কিন্তু আমি তা চিনতে পারিনি, এখন বুঝতে পারছি তা হল প্রত্যাশার সুন্দর মিষ্টি গন্ধ যা ঘৃণার বিপরীত।
এটি লোভের ঠকময় গন্ধ,যেটি প্রেমের বিপরীত।
এটি হল দেবতা, দানব, সাম্রাজ্য, সভ্যতা আর পুনরুজ্জীবনের গন্ধ।
এটি চিকন নীলাভ সাগরের গন্ধ, আর শহরের যে প্রানেই থাকনা কেন মেশিনের গন্ধ।
আর এটি হল ৬ কোটি প্রানির ঘুম আর ক্রীড়ানকের গন্ধ তার অর্ধেক মানুষ আর অর্ধেক ইঁদুর।
এটি হৃদয়ভাংগার আর বেঁচে থাকতে লড়াইয়ের গন্ধ, আর ব্যার্থতায় যে সাহস আমাকে জোগায় তার গন্ধ।
এটি ১০ হাজার রেষ্টুরেন্ট, ৫ হাজার মন্দির, মাজার, গির্জা আর মসজিদের গন্ধ।
আর হাজারো বাজার যেখানে মসলা, পারফিউম, ফুল আর ধুপের গন্ধ।
কার্লা একসময় বলেছিল এটি পৃথিবীর খুব বাঝে আর ভালো গন্ধ, ঠিকই বলেছিল, আসলে তাই।
যাইহোক গন্ধ আর সবকিছু ছাড়াই আমি যখন বোম্বেতে ফিরে আসি মনে হয় আমি ঘরেই এসছি যা আমাকে স্বাগত জানাই।
পরের যে জিনিসটা আমি লক্ষ্য করলাম তা হল, গরম, আমি বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে ৫ মিনিটই দাড়ায়নি আমার জামা ঘামে ভিজে গিয়েছে।
আমার মন এই নতুন আবহাওয়ায় পরাজিত।
প্রতেকটি নিশ্বাস আমার যেন জয়। আর জানলাম যে এই গরম থামার নয়, এটি আদ্রতা যা দিনে রাতে বয়ে যায়।
এই বিষম আদ্রতা আমাদেরকে উভয়চর প্রাণী বানিয়ে ফেলে, পানিতেই যেন বাতাস নিচ্ছি, আর কিভাবে করে তা শিখে ফেলছ,না হয় পছন্দ করছ অথবা ছেড়ে চলে যাচ্ছ।
এরপর মানুষ আর মানুষ, আসামিজ, জেট, পাঞ্জাবী, মানুষ রাজস্থান, বেংগল, তামিলনাড়ু, পোস্কার, কোচিন, কণারাক, যুদ্ধা ব্রাক্ষ্মন, স্পর্শাতীত হিন্দু, মুসলমান, ক্রিস্টান, বৌদ্ধ, পারসী, জেইন, এনিমিস্ট, সুন্দর চামড়া, কালো চামড়া, সবুজ চোখী, বাদামি, কালো সব,কতরকমের যে চেহারা যা সীমাহীন বৈচিত্রতা অতুলনীয় ভারতীয় সৌন্দর্য।
( অনেক অংশের পর)।
আমি দিনের বেলায় জেল থেকে পালিয়েছিলাম, তাদের কথা অনুযায়ী দুপুর ১ টায়, সামনের দেওয়াল দিয়ে দুই টাওয়ারের মাঝ দিয়ে।
একদিক দিয়ে পরিকল্পনাটি খুবই কঠিন ছিল আর সেটি খুবই যত্নের সাথে কার্যকর করা হয়েছে,অন্য দিক দিয়ে পালানো সফল হয়েছিল কারন এটি ছিল খুবই ভয়ংকর আর নির্মম।
আমাদের একটাই লাইন ছিল, আমরা যখন শুরু করি তা সফল হতেই হবে, যদি ব্যার্থ হয় তাহলে, পানিশম্যান্ট ইউনিটের গার্ডরা আমাদের লাথি দিয়ে মেরে ফেলতে সক্ষম।
আমরা দুজন ছিলাম,আমার বন্ধু, বড় হৃদয়ের মানুষ, খুবই উগ্রও বটে , ২৫ বছরের তরুণ, হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছে।
আমরা আরও অনেককে আমাদের সাথে পালাতে রাজি করাতে চেয়েছিলাম,খুবই শক্তিশালী ৮ জনকে, যাদের আমরা চিনি, যারা ১০ বছরের সাজা কাটছে বিভিন্ন অপরাধের।
তারা একে একে সবাই আমাদের একটা না হয় একটা অযুহাত দেখাল।
আমি তাদের দোষ দিচ্ছিনা।
আমি আর আমার বন্ধুর ছিল প্রথম জেল জীবন আর আমাদের কোন অপরাধের পুর্বতিহাস ও নেই।
আমরা বড় সাজা ভোগ করছিলাম আর আমাদের জেলে কোন সুনাম ও নেই, আমরা যে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলাম তা সফল হলে অনেকেই এটাকে বীরোচিত বলে, আর ব্যার্থ হলে পাগলামি, আর পরিশেষে আমরাই একাকীই হয়ে যাব।
আমরা দুতলা অফিসের নিরাপত্তা ফোর্স বিল্ডিংয়ের ইন্টোরোগেশন ব্লকের পাশে, প্রধান ফটকের নতুন ভবন সংস্করনের কাজের সুবিধাকে ব্যাবহার করেছি।
আমরা বাগানের পরিচর্যার কাজ করতেছিলাম। শিফট বদল করা রক্ষীরা আমাদের প্রতিদিনই দেখতেন।
পলায়নের দিন যখন আমরা যথারীতি কাজ করতে গেলাম, তারা কিচ্ছুক্ষণের জন্যে আমাদের দিকে তাকালেন তারপর চোখ সরিয়ে ফেললেন।
সিকিউরিটি ফোর্স ভবন খালি, কারন শ্রমিকরা সবাই লাঞ্চে গিয়েছে।
প্রতিদিনের বিরক্তিকর কিছু সময়ের মাঝে, আমাদের চেনার কারনের আমরা তাদের আড়ালে গেলাম আর আমাদের নড়াচড়া শুরু করলাম।
আমরা আমাদের পথে পরা চেইনের পথ কেটে ফেললাম যেটি নির্মানকাজের কাছে ছিল, খালি ভবনের একটা দরজা ভেঙে ফেললাম আর উপরের উঠলাম।
ভেতরের অংশ কাজের কারনে ফাকা ছিল।
প্লাস্টারবিহীন দেওয়ালের সাথে লোড নেওয়া বীম।
খালি তক্তার সিড়ি ইট, প্লাস্টারের ধুলুতে সাদা হয়ে গিয়েছে।
উপরের ছাদে একটি ম্যানহোল ছিল,আমার বন্ধুর কাধে উঠে গাছের দরজা পাঞ্চ করে তা সরালাম আর উপরে উঠলাম।
আমার একটি অতিরিক্ত কর্ড ( এক্সটেনশন কর্ড) ছিল আমার কাজের পোশাকের ভেতরে।
আমি তা খুলে লম্বা করলাম, ছাদের একটি বীমের কোণায় তা বাধলাম আর অন্যদিকটা নীচে আমার বন্ধুকে দিলাম।
সে তা ব্যাবহার করে ছাদের খালি জায়গায় উঠে আসল।
ছাদটি আঁকাবাঁকা ছিল, আমরা হামাগুড়ি দিয়ে সংকীর্ণ পথ দিয়ে ছাদের যে অংশটি জেলের প্রধান ফটকের দিকে লাগানো সেখানে।
আমি একটি স্পট ঠিক করলাম, তার ভেতরে কেটে বের হওয়ার জন্যে, আর আশা করেছিলাম যে এর এই অংশটি গান টাওয়ার কে ফাকি দিতে পারে।
ছাদের এই খালি জায়গায় এমনিতে অন্ধকার আর এই সংকীর্ণ অংশটি আরো আঁধার।
আমাদের সিগারেট লাইটারের আলো দিয়ে আমরা শক্ত, ডাবল কাঠটি কাটতে লাগলাম, যেটি আমাদের কে একটি টিন দিয়ে ছাদের উপরে আসার বাধাগ্রস্ত করছিল।
একটি লম্বা স্ক্রড্রাইভার, একটি বাটালি আর টিনের পোচ ছিল আমাদের একমাত্র অস্ত্র।
প্রায় ১৫ মিনিট মত হিজিবিজি কেটে আর স্ক্র্যাপ টেনে আমরা যা কাটলাম তা ছোট একটি চোখের মত সাইজের হবে।
আগুনের লাইটার দিয়ে এদিক ওদিক করতে করতে আমরা এই ছিদ্র দিয়ে বাইরে ছাদের অংশ দেখতে পেলাম।
কিন্ত কাঠ ছিল খুবই শক্ত আর পুরু। আর এই যন্ত্র দিয়ে আমাদের মানুষের আকার সমান গর্ত করতে ঘন্টার পর ঘন্টা লাগবে।
কিন্তু আমাদের এত সময় হাতে নেয়।
আমার ধারনামতে হাতে ছিল মাত্র ৩০ মিনিট বা তারচেয়ে সামান্য বেশি, গার্ডদের নিয়মিত এই এলাকায় টহল দেওয়ার আগ পর্যন্ত।
এর মধ্যেই আমাদের কে কাঠ কাটতে হবে, টিনের গর্ত করতে হবে, ছাদে উঠে আমাদের কর্ডটি রশি হিসেবে ব্যাবহার করে নীচে স্বাধীন পথে পা বাড়াতে হবে।
সময় ফুরিয়ে আসছে, আর আমরা সিকিউরিটি বিল্ডিং এর ফাদে আটকা পরা।
যেকোন সময় গার্ড কাটা বেস্টনী দেখে ফেলবেন, ভাংগা দরজা দেখবেন আর পরিত্যক্ত ম্যানহুল চোখে পরতে পারে।
যেকোন সময় তারা ম্যানহুলের ভেতর দিয়ে এসে কালো গহবরে আমাদের দেখে ফেলবেন।
‘ আমাদের ফিরে যাওয়া দরকার’ বন্ধুটি আমায় বলল।
‘ আমরা কখনো এই কাঠের ভেতর দিয়ে যেতে পারবনা’ ফিরে যায় আর এমন ভাব করি যে এদিকে আমরা আসিই নি’।
আমরা কিছুতেই ফিরে যেতে পারবনা, আমি বললাম, যদিও চিন্তাটা আমার মাথায় ও আসছিল।
।
তারা যখন সব কাটা জিনিসপত্র দেখবেন আর, তারা জানবেন যে এটি আমাদেরই কাজ।
শুধুমাত্র আমাদের এই এলাকায় প্রবেশাধিকার আছে, আমরা ফিরে গেলে ১ বছরের জন্যে আমাদের স্লটে রেখে দিবে।
স্লট হল জেলখানার ভাষায় ‘শাস্তির ইউনিট’ ।
ঐ সময়ে এই ইউনিট ছিল, ঐ দেশের, ঐ জেলে অমানবিক নির্যাতনের জায়গা।
এটি হল নিয়মিত পিশাচ মারধরের জায়গা।
তাদেরই সিকিউরিটি বিল্ডিং এর, যে ইউনিট গার্ডরা সেখানেই থাকেন, পালানো ব্যার্থ হলে আমাদের ইউনিটে দয়াহীন মার দেওয়া হবে।
তাহলে আমাদের কি করার আছে? আমার বন্ধুটি যত জোরে পারে বলছে গলার আওয়াজ ছাড়া।
তার মুখ দিয়ে ঘাম ঝরছে, ভয়ে তার হাত এতই ভিজে গেল যে সে সিগারেটের লাইটার ধরতে পারছিলনা।
আমি বললাম, দুটো উপায় আছে।
কি কি?
আমরা ঐ মইটা কাজে লাগাতে পারি যেটি নীচে দেওয়ালের সাথে চেইন দিয়ে আটকানো।
আমরা আবার নীচে যেতে পারি, চেইন কেটে কর্ডটির সাথে লাগিয়ে, দেওয়ালের সাথে তাক দিয়ে, উপরে উঠে কর্ডের অপর অংশ অন্য দিকে ছুড়ে দিব।
তারপর নীচ দিয়ে বেয়ে রাস্তার দিকে যাব।
তাই?
এটি প্রথম পরিকল্পনা।
কিন্তু তারা আমাদের দেখবে, আমার বন্ধু বাধা দিয়ে বলল।
তা ঠিক।
তারপর তারা আমাদের গুল করবে।
তুমি তাই বলছ।
আমি মরেই যায়, সে বলল, এটি দুবার চিন্তা করা দরকার, এটি বহির্দিকের পয়েন্ট, তাই নয় কি? আমি ঠিক করলাম আমাদের একজন গুলি খাবে আর একজন পালাতে পারবে, ফিফটি ফিফটি।
আমরা এই সম্ভাবনাটা কিছুক্ষণ নীরবতার মাঝে বিবেচনা করলাম।
আমি এই পরিকল্পনাকে ঘৃণা করি, বন্ধু বলল।
আমি ও।
দ্বিতীয় প্লান কি?
তুমি কি এদিকে আসার পথে কাঠ কাটার একটি করাতের মেশিন দেখেছ?
এটি দিয়ে আমরা টিন কেটে আমরা আসল প্লানে ফিরে যাব।
কিন্তু তারা আওয়াজ শুনতে পাবে, বন্ধুটি কানে কানে বলল, আমি তাদেরকে টেলিফোনে কথা বলতে শুনেছি, আমরা এত কাছে।
আমরা করাত আনলে আর আর বিদ্যুতের সংযোগ দিলেই তা হ্যালিক্যাপ্টারের মত আওয়াজ করবে।
আমি জানি, কিন্তু তারা মনে করবে যে শ্রমিকরা কাজ করছে।
কিন্তু শ্রমিকরা এখানে নেই।
হ্যা, কিন্তু গেইটের শিফট পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন রক্ষী ডিউটিতে আসছে।
এটি আমাদের বড় সুযোগ, কিন্তু আমি মনে করি আমরা তা করলে তারা শ্রমিক লোকদের কাজ মনে করবেন স্বাভাবিকভাবেই।
তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে এই করাতের, হাতূড়ির আওয়াজ শুনে আসছেন, আর আমরা করছি তা ভাবার কোন সুযোগ নেই।
তারা কোনদিনই চিন্তা করতে পারবেন না যে প্রধান গেইটের পাশে কেউ এই পাওয়ার শ ব্যাবহার করবে।
এটিই আমাদের সেরা সুযোগ।
আমি নাই বলব, সে আপত্তি জানাল, কিন্ত এখানে কোন বিদ্যুৎ নেই, তারা কাজের জন্যে তা বন্ধ করে দিয়েছে।
একমাত্র পাওয়ার পয়েন্ট বাইরে, কর্ডটি বাইরে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কিন্তু বিদ্যুতের লাইন বাইরে।
আমি জানি, আমি জানি, আমাদের কোন একজনকে নীচে নামতে হবে, যে দরজা আমরা খুলেছি তার বাইরে হামাগুড়ি দিয়ে এই কর্ডটি লাগিয়ে দিতে হবে।
এটিই একমাত্র পথ।
কে যাবে নীচে?
আমি আত্নবিশ্বাসের সাথে বললাম আমিই যাব, হয়তোবা আমি মিথ্যে বলেছিলাম কারন শরীর তা বিশ্বাস করছেনা, তা মুখ দিয়ে এসে গেছে।
আমি হামাগুড়ি দিয়ে ম্যানহুলের উপর দিয়ে গেলাম।
টেনশন, আতংক আর পেশি সংকোচনে আমার পা কঠিন হয়ে আছে।
আমি কর্ডের পেছনে আসলাম, সিড়ি দিয়ে নীচের তলায় সারা পথ কর্ড বিছিয়ে।
এটি দরজা পর্যন্ত পৌছাল আরো অনেক বেচে গিয়েছে।
দরজার পাশেই মেশিনটি।
আমি মেশিনের হাতলে কর্ডটি বাধলাম আর দৌড়ে সিড়ির দিকে গেলাম।
আমার বন্ধু ম্যানহুল দিয়ে মেশিন নিল আর আমাকে কর্ডটি ফেরত দিল।
আমি আরেকবার দরজার নীচে গেলাম, আমার শরীরকে একেবারে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে ভারী নিশ্বাস নিচ্ছিলাম, দরজা খোলার সাহস করলাম।
অবশেষে হৃদয় মোচড়ানো হরমোন নিসৃত করে, দরজা ফাঁক করলাম আর নিজেকে মেলে দিয়ে কর্ড সকেটে লাগালাম।
অস্ত্রধারী রক্ষীরা নিজেদের মধ্যেই কথা বলছিলেন, দরজা থেকে ২০ মিটার ও দূরে নয়।
কেউ আমার দিকে আসলেই খেলা শেষ।
আমি দেখলাম তারা আমার দিক ছাড়া সবদিকেই দেখছেন।
তারা দরজার আশপাশে কথা বলছেন আর হাটছেন আর কৌতুক শোনছেন।
কেউ আমাকে দেখেননি।
আমি বিল্ডিং এর ভেতরে ঢুকলাম, বাঘের মত হামাগুড়ি দিয়ে ৪টি সিড়ি টপকালাম,ম্যানহুল দিয়ে কর্ড নিয়ে আসলাম।
অন্ধকারে আঁকাবাঁকা ছাদের খালি জায়গায় আমার বন্ধু লাইটার জ্বালাল।
দেখলাম যে সে মেশিনের সাথে কর্ড লাগাল, সে কাটতে প্রস্তুত।
আমি লাইটার নিলাম, তার জন্যে ধরলাম।
কোন ধরনের দ্বিদা ছাড়াই সে মেশিন স্টার্ট দিল।
মেশিন রানওয়ের জেট ইঞ্জিনের মত বিকট আওয়াজ দিল।
সে আমার দিকে তাকাল, দাত বের করে হেসে দিল।
তার চোখ আলোতে ঝলক মারছে।
এরপর সে কাঠ কাটতে লাগল, ৪ টি অংশ কেটে সে সত্যিকারের একটি টিনের গোলাকার গর্ত করল।
আমরা নীরবে অপেক্ষা করলাম, আমাদের কানে হ্রাস হয়ে আসা ধ্বনী, আমাদের কলিজা বুকের সাথে লেগে গেল।
কিছুক্ষণ পরে আমরা টেলিফোন বাজার আওয়াজ শুনলাম প্রধান গেইটে, আমরা ভাবলাম আমরা শেষ হয়ে গিয়েছি।
কেউ একজন ফোন রিসিভ করলেন, একজন গেইটের রক্ষী।
আমরা তাকে হেসে আর আরাম করে কথা বলতে শুনলাম।
আহ ঠিক আছে, আমরা নিরাপদ।
তারা অবশ্যই মেশিনের আওয়াজ শুনেছেন, কিন্তু আমি যা ভেবেছিলাম, তারা এটিকে শ্রমিকদের কাজ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।
এরপর আমি টিনে স্ক্রড্রাইভার দিয়ে গর্ত করলাম, সূর্যের আলো সরাসরি আমাদের মুখে এসে পরল।
আমি গর্ত বড় করলাম আর টিনের টুকরো দিয়ে ৩ দিকে আরো কাটলাম।
চারটি হাত দিয়ে আমরা চ্যাটালো টিন বাইরে ফেলে দিলাম, আর গর্ত দিয়ে আমার মাথা ঢুকিয়ে দিলাম।
আমরা দেখলাম যে সত্যিই আমরা আমাদের ছাদের পথের সন্ধান পেলাম।
এই V আকারের বিশাল অংশটি চক্ষুর আড়ালের জায়গা।
আমরা যদি সংকীর্ণ জায়গাটিতে শুয়ে পরি তাহলে আমরা টাওয়ারের গার্ডদের দেখবনা আর তারাও আমাদের দেখতে পাবেন না।
আমাদের একটি কাজ বাকি ছিল।।
পাওয়ার কর্ডটি তখনও সকেটে আটকানো, বিল্ডিং এর বাইরে, নীচে।
আমাদের কর্ডটি খুবই দরকার।
এটি ছিল আমাদের রশি।
এটি দিয়েই আমরা জেলের বাইরের গেইট দিয়ে নীচে রাস্তায় নামব।
আমাদের কাউকেই নীচে যেতে হবে,গেইট খুলে রক্ষিদের সামনে দিয়ে সকেট থেকে কর্ড আনপ্লাগ করে আবার ছাদে আসতে হবে।
আমি আমার বন্ধুর দিকে তাকালাম, সে ঘামে যেন গোসল সারছে, গর্ত করে যা হয়েছে তার, আর আমি জানতাম আমাকেই যেতে হবে।
নীচে আমার পিঠ ঠেকিয়ে ভেতরের দেওয়াল দিয়ে দরজার পাশে যেতে আমি একটু থামলাম, আমি রাজ্যের শক্তি আনার চেষ্টা করলাম যাতে পা আর হাত দিয়ে দরজা খুলতে পারি।
আমি এতই জোরে শ্বাস নিচ্ছিলাম যে আমার মনে হচ্ছে আমার বমি আর ঝিমুনি আসছে।
আমার ফাঁদে পরা পাখির মত কলিজা আমার পাটার সাথে নিক্ষিপ্ত।
অনেক্ক্ষণ পর আমি বুঝতে পারলাম এই কাজ টি করা সম্ভব নয়।
আমার বুঝার সাবধানতা আর কুসংস্কার সব কিছু আমাকে না যেতে বলছে আর আর আমি পারিইনি।
আমার কর্ডটি কেটে ফেলতে হল, তাছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা।
আমি পকেট থেকে বাটালি বের করলাম, খুবই ধারালো ছিল সেটি, যেটি দিয়ে আমরা কাঠ কেটেছিলাম এরপরে ও।
দরজার ওপাশে বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকা কর্ড আমি কাটতে গেলাম, আমার হাত চমকে উঠল, আমি ভেবেছিলাম যদি আমি তা কাটতে যায় তাহলে বিশাল এলার্মের মত শব্দ হবে আর একজন রক্ষী এসে চেক করতে পারেন।
কোন ব্যাপার ছিলনা তা, কারন আমার অন্য কোন উপায় ছিলনা।
আমি জানি যে আমার সেখানে যাওয়া অসম্ভব। আমি যথেষ্ট হাতে শক্তি রেখে কর্ড কেটে ফেললাম, আর নীচের দরজা দিয়ে সেটি গড়িয়ে নিয়ে আসলাম আর অপেক্ষা করলাম কোন আওয়াজ হয় কিনা তা দেখতে।
কিছুই হলনা, কিছুই না, আমি নিরাপদ।
আমি ছেড়া কর্ডটি নিলাম আর দৌড়ে উপরের ছাদে গেলাম, আর নতুন ম্যানহুল যেটি আমরা ছাদে কেটেছি, সেখানে ভারী একটি কাঠের বীমে আমরা কর্ড বাধলাম।
এই গর্ত দিয়ে আমার বন্ধু ঢুকল।
যখন সে টিনের ছাদের অর্ধেক পথ পর্যন্ত গেল,তাকে দাড়াতে হল।
সে সামনেও যেতে পারছেনা আর পেছনেও যেতে পারছেনা, সে জোর দিয়ে সব শক্তি নিয়ে চেষ্টা করছে, কিন্তু কোন কাজ হলনা, সে দ্রুতই আটকে গেল।
তার শরীর গর্ত ঢেকে দিয়েছে তাই এখানে আবারও অন্ধকার হয়ে গেল।
আমি ময়লার মাঝে হাতরাতেই লাইটারটি খুজে পেলাম, জ্বালানোর পরে দেখলাম কেন সে আটকে গেল।
তার পকেটে থাকা তামাকের থলি যা তার চামড়ার ব্যাগে ছিল, তাদের শখের গ্রুপে সে বানিয়েছিল।
তাকে দাড়াতে বলে আমি বাটালি দিয়ে তার পকেট কেটে দিলাম আর এটি নীচে পরে আমার হাতে আসল আমার বন্ধু ছাদে উঠে যেতে পারল।
আমি ও এরপরে টিনের ছাদে উঠে গেলাম।
পোকার মত কিলবিল করে আমরা জেলের দুর্গের সামনের দেওয়ালে আসলাম।
হাটু গেড়ে দেওয়াল দিয়ে দেখলাম, আমাদের কয়েক সেকেন্ডের জন্যে দেখা যাচ্ছে কিন্তু টাওয়ারের গার্ডরা আমাদের দিকে তাকান নি।
জেলের এই অংশকে বলা যায় মানসিকভাবে, খালি জায়গা, রক্ষীরা তা উপেক্ষা করে গেলেন, কারন তার বিশ্বাস করেননি যে কেউ এদিকে দিয়ে দিনের বেলায় সামনের দেওয়াল দিয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।
ঝুকি নিয়ে আমরা নীচে রাস্তার দিকে তাকালাম, দেখলাম জেলার বাইরে গাড়ির লাইন।
তারা সবাই ডেলিভারি দিতে এসছে, অপেক্ষা করছে প্রধান গেইট দিয়ে ঢুকতে।
কারন প্রত্যেকটি গাড়ি তল্লাসী চালানো হয়, নীচে আয়না দিয়ে, লাইনটা খুবই আস্তে যাচ্ছে।
আমি আর আমার বন্ধুটি আমাদের এখনকার অপশন নিয়ে ভাবছিলাম।
‘ নীচে অনেক লোক।
আমি বলছি এখনই যাই’ , সে বলল।
আমি পাল্টা বললাম, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
আর না, কর্ড ছুড়ে দাও আর যায়।
আমি আস্তে বললাম, না, নীচে অনেক লোক।
তাতে কি?
কেউ নায়ক হতে চাইবে বলে দিয়ে ।
তাকে নায়ক হতে দাও, আমরা তার আগেই চলে যাব।
সেখানে অনেক লোক।
বাদ দাও তাদের, তাদের সামনে দিয়েই যাব, তারা কি হবে বুঝতেই পারবেনা, না হয় আমরা না হয় তারা দোস্ত।
আমি চুড়ান্তভাবে বললাম না।
আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, যখন নীচে কেউ থাকবে না আমরা তখনই যাব, অপেক্ষা করতেই হবে।
আর আমরা তাই করলাম, প্রায় ২০ মিনিটের অনন্তকাল, বারবার আমি নিজেকে চোখে পরার ঝুকি নিয়ে নীচের দিকে তাকাচ্ছিলাম।
অবশেষে আমি দেখলাম রাস্তা দু’দিকেই পুরু খালি।
আমি আমার বন্ধুকে ইশারা দিলাম।
সে হামাগুড়ি দিয়ে দেওয়ালের উপরে গেল, নীচে নামতে।
আমি নীচু হয়ে দেখতে গেলাম, তার নীচে নামা দেখতে, কিন্তু ততক্ষণে সে রাস্তায় পৌছে গেল।
তাকে জেলের বিপরীতে একটি সংকীর্ণ লেনের ভেতর দিয়ে অদৃশ্য হতে দেখলাম।
আর আমি এখনও ভেতরে ছাদে।
আমি নীল পাথরের প্রাচীর দিয়ে আরোহন করলাম, কর্ড নিলাম।
দেওয়ালের বিপরীতে পা রেখে আর দু’হাতে কর্ড নিয়ে আমি রাস্তার দিকে পিঠ দিয়ে আমার বাম দিকে গান টাওয়ারের দিকে তাকালাম।
রক্ষী টেলিফোনে কথা বলছে আর হাত নাড়ছে।
তার কাধে অটোমেটিক রাইফেল ছিল।
আমি অন্য টাওয়ারের দিকে তাকালাম, তার সাথেও রাইফেল, তিনি জেলের ভেতরে অন্য এক গার্ডের সাথে গেইট এলাকায় কথা বলছেন।
তিনি হাসছিলেন আর রিল্যাক্স ছিলেন।
আমাকে দেখা যাচ্ছিলনা, আমি দেশের সবচেয়ে কড়া জেলখানার সামনের দেওয়ালে আর আমাকে দেখা যাচ্ছেনা।
আমি পা বাড়িয়ে নামতে লাগলাম কিন্ত আমার হাত স্লিপ করল ঘামের কারনে, আমি কর্ডটি হারিয়ে ফেললাম, পরে গেলাম।
এটি অনেক উঁচু দেওয়াল ছিল।
আমি জানতাম নীচে পরলেই মরতে হবে।
হতাশা আর ভয়ের মানসিক যন্ত্রণা থেকে আমি কর্ড ধরে ফেললাম।
আমার হাত আমাকে পরা থেকে ব্রেক করাল।
আমার হাতের তালু আর আংগুল ছিড়ে গেল। তা খুবই পুড়ছিল, তারপরও আস্তে আস্তে আমি মাটি ছুলাম, রাস্তার দিকে হাটলাম আর আমি স্বাধীন!
আমি আরেকবার জেলের দিকে তাকালাম, কর্ডটি তখনও সেখানে ঝুলছে।
রক্ষীরা তখনও কথা বলছেন টাওয়ারে।
একটি কার রাস্তা দিয়ে গেল আর ড্রাইভার গাড়িতে গান শুনছেন।
আমি ফিরে একটি লেনের ভেতর দিয়ে আসলাম, একটি শিকারী জীবনে আসলাম যার কারনে আমার সব হারাতে হয়েছে, যাদের আমি ভালবেসেছিলাম।
আমি যখন ডাকাতি করতাম তখন মানুষকে ভয় দেখাতাম।
তখন থেকেই, আমার অপরাধ আর জেল জীবন আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে।
রাত আসলে আমি আতংকে থাকতাম যে কখন রক্ত আর ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে।
যে ভয় আমি মানুষকে দেখাতাম তা আমার কাছে ১০, বার ৫০ বার বা হাজার আমার কাছে রাতে আতংক হিসেবে এসেছে।