মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও হত্যাযজ্ঞ সহ সমস্ত অপরাধকর্ম নিয়ন্ত্রণে শহরের সাহিত্যিকা পল্লী এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে। বৃহত্তর সাহিত্যিকা পল্লী এলাকা কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শহরের মধ্যে হলেও পাহাড়ি এলাকা ও দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে থানা থেকে এখানে পুলিশ এসে অপরাধীদের ধরার আগেই তারা অনেক সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। যা আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়। তাই এ এলাকার সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে এখানে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর বিকেলে শহরের সাহিত্যিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসচেতনতা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজারের স্বনামধন্য পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম একথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন জয় বাংলা বাহিনী’৭১ এর প্রধান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব কামাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আদিবুল ইসলাম, সদর মডেল থানার সদ্য যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আবু মোঃ শাহজাহান কবির, একই থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ খায়রুজ্জামান।
প্রধান অতিথি এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম এলাকাবাসীর উদ্দেশ্য বলেন-আপনারা আমাকে ৪/৫ টি কক্ষের ব্যবস্থা করে দিন। আমরা অফিসিয়ালি মাসিক ভাড়া দেবো। সেখানে পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হবে।
তিনি অপরাধীদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন-এলাকায় কেউ সন্ত্রাস-ইভটিজিং তথা কোন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হলে তাদের এমন শিক্ষা দেয়া হবে, যাতে তারা দ্বিতীয়বার অপরাধ করার দুঃসাহস না পায়।
পুলিশ সুপার প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরো বলেন, এই এলাকায় যারা সন্ত্রাসী আছে তাদেরকে চিহ্নিত করে পুলিশকে খবর দিন। পুলিশ সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা যতই শক্তিশালী হউক না কেন, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করতে কক্সবাজার পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে। এই এলাকার সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে আপনারা পুলিশকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। অযথা নিরীহ, নিরপরাধ লোকজনের নাম দিয়ে তাদের হয়রানি করবেননা।
সাহিত্যিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আল ফারুক ইসলামিয়া মাদ্রাসার যৌথ ব্যবস্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উক্ত সভায় সাহিত্যিকা পল্লীর বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদের সন্তান কক্সবাজার টেকনিক্যাল স্কুল এণ্ড কলেজের ছাত্র মোর্শেদ হত্যা ও গরুর হালদা এলাকার শাহাবুদ্দিন হত্যার এখনো গ্রেপ্তার না হওয়া আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা সহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা শুনে এসব ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম। তিনি এই আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সচেতনতা সভা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়ায় সমাজসংস্কারক আলহাজ্ব কামাল হোসেন চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রুমালিয়ার ছড়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আল ফারুক ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সায়েম হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মাবুদ মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সায়মুন সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রুহুল আমিন সিকদার, সিটি কলেজের প্রভাষক নুরুল আবছার সিকদার, আল ফারুক মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, সাহিত্যিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন, পৌর কমিউনিটি পুলিশিং এর সহ সভাপতি জিয়া উল্লাহ চৌধুরী, সমাজসেবক হাফেজ আহমেদ সিকদার সাংবাদিক মোঃ শহীদুল্লাহ মেম্বার, দক্ষিণ সাহিত্যিকা পল্লী সমাজ কমিটির সভাপতি নুরুল কবির লেড়ু, বৃহত্তর সাহিত্যিকা পল্লী সমাজ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ ওমর ফারুক সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকমণ্ডলী, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকবৃন্দ সহ প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটে।