ঈদগাঁও সংবাদদাতা :
কক্সবাজার সদরের সীমান্ত ইউনিয়ন ইসলামপুরে গুলি বর্ষন করে চিংড়ি ঘের দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদল সঙ্গবদ্ধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের উপুর্যপুরী মারধরে ঘেরের ম্যানেজারসহ গুরুতর আহত হয়েছে ৪ জন। তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহরণকৃত মাছ, নগদ টাকা ও বিভিন্ন সরঞ্জামসহ লুট করে নিয়ে গেছে ৪ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। সংগঠিত ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানান স্থানীয়রা। ১৪ অক্টোবর বিকাল ৩ টার দিকে ঘটনা ঘটেছে ইসলামপুর ইউনিয়নের পশ্চিমে গোল্ডেন ফার্ম প্রাঃ লিঃ নামের একটি চিংড়ি ঘেরে।
ঘেরটির চেয়ারম্যান উত্তর নাপিত খালী গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে হাজী মমতাজ আহমদ অভিযোগ করে জানান, নিম্ন তফসিলভুক্ত ঘেরটি তাদের ফার্মের মালিকাধীন। তাছাড়া ফার্মের খতিয়ানভুক্ত এবং প্রতি মৌসুমে সরকারকে খাজনা আদায় করে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে মৎস্য চাষ করে আসছে।এ মৌসুমেও হাজী শের আলী ও হাজী শাহ আলম নামের দুই ব্যক্তিকে ইজারা দিয়ে দেয়। ইত্যবসরে ঘেরটির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় গুটি কয়েক ভূমিদস্যুর। তারা বেশ কয়েকবার চিংড়ি ঘেরে এসে চাঁদা দাবী করে, চাঁদা না দিলে জোরপূর্বক জবর দখলের হুমকি প্রদর্শন করে থাকে সন্ত্রাসীরা। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়নের জুমনগর এলাকার মৃত ফজল করিমের ছেলে আক্তার আহমদের নেতৃত্বে খুটাখালী শিয়া পাড়া এলাকার মুক্তার আহমদের ছেলে গিয়াস উদ্দিন, উত্তর নাপিত খালী গ্রামের সুলতান আহমদের ছেলে কামরুল হাসান সবুজ, ইউছুপ আলীর ছেলে এহেসানুল হক, মৃত ইউছুপ আলীর ছেলে মোঃ ইউনুছ মধ্যম নাপিত খালীর ছৈয়দ আলমের ছেলে আবদু শুক্কুর, মৃত ফজল করিমের ছেলে মুক্তার আহমদ, মৃত মোক্তার আহমদের ছেলে আবছার কামালসহ ২৫/৩০ জন লোক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষন করে ফার্মের নামীয় চিংড়ি ঘেরে অনধিকার প্রবেশ করে সমিতির ইজারাদারের নিয়োজিত শ্রমিক আমান উল্লাহ (৩৫), মিজানুর রহমান (৩০), মোঃ রমজান আলী সরকার (৩৫) জসিম উদ্দিন (৩০) নামের শ্রমিকদের থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করে। উল্লেখিত শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দুকের নল, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় তৈরি অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে বলে জানান, গোল্ডেন ফার্ম প্রাঃ লিঃ এর চেয়ারম্যান মমতাজ আহমদ।
তিনি আরো জানান, দখলবাজরা চিংড়ি ঘেরের বাসায় রক্ষিত মাছ বিক্রির নগদ দেড় লক্ষ টাকা,দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ আহরণের জাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় আহতরা শোর চিৎকার করে বাঁধা প্রদান করলে পুনরায় মারধর করে মৃত্যুর ভীতি প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে ঘেরের চেয়ারম্যানসহ অংশীদাররা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও ধাওয়া করে বলে জানান মমতাজ আহমদ।পরে পুলিশ গেলে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা, আহত অবস্থায় শ্রমিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান তাদের স্বজনরা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দখলবাজরা চিংড়ি ঘেরের আশেপাশে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই সনজিত চন্দ্র নাথের নির্দেশে এএসআই লিটনুর রহমান জয়সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পার্শ্ববর্তী চকরিয়ার উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের দিকে পালিয়ে যায়। এ,এসআই লিটনুর রহমান জয় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক জানতে চাইলে তারা পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান এবং ঘেরটি গোল্ডেন ফার্ম লিঃ এর তফসিলভুক্ত বলে জানতে পেরেছেন।তাছাড়া অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘেরটি দখল করেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মোঃ খায়রুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ঘটনা অস্বীকার করেন।