এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ :

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া-কালনা সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা দেবে গেছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বালু ব্যবসায়ীদের অসংখ্য বালু বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বারবার পদক্ষেপ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভাটিয়াপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি বালুর চাতাল রয়েছে। এর মধ্যে মানিক শেখের বাড়ি থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেশি।

বালু ব্যবসায়ী আফজাল শেখ, রঞ্জু শেখ, এমরান মৃধা, এস্কেন সিকদার, স্বপন সরদার, রুহুল সরদার ও শাবু মুন্সীসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন বালু ব্যবসায়ী দীর্ঘ ৫/৬ বছর ধরে এই এলাকায় ব্যবসা করছেন। এরা সবাই কাশিয়ানী ও রাতইল ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ সব ব্যবসায়ীরা মধুমতি নদীর বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন করে এই সড়কের পাশে রেখে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মালিকের কাছে বিক্রি করে আসছেন। এ সব বালু ১০ চাকার ট্রাকে করে আনা নেওয়ার কারণে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

সড়ক বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন ইতোপূর্বে বালু ও ইটের খোয়া ফেলে বেশ কয়েকবার খানাখন্দ ঠিক করে। অতি সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় সে সব স্থান ভেঙে দেবে গেছে। ফলে সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলে অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

এছাড়া শুকনা মৌসুমে বালু উড়ে মানুষের চোখে মুখে পড়ে। ফলে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী সাধারণ। স্থানীয়রা ওই স্থান থেকে বালু সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

ফেরিঘাট ইজারাদার মঞ্জুরুল আলম বলেন, বালু ব্যবসার কারণে বড় বড় ১০ চাকার ট্রাক কালনা-ভাটিয়াপাড়া সড়কে চলাচল করে। এ কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হওয়ায় গর্তের স্থান গুলো দেবে গেছে। কালনা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিনশ’ যানবাহন চলাচল করে। রাস্তা ভাঙার কারণে এসব যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, এখানে প্রায় ৩৫টি বালুর চাতাল রয়েছে। এ সব চাতাল মালিকরা সরকারের কাছ থেকে বালু মহাল ইজারা নিয়ে বালু তুলে রাস্তার পাশে রাখে। পরে ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। এই সড়কে বড় বড় ট্রাক ঢোকার কারণে রাস্তা ভেঙে দেবে গেছে। এর দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খোন্দকার মোহাম্মদ শরিফুল আলম বলেন, সড়কের পাশে বালু ব্যবসার কারণে আমাদের সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার ভেঙে দেবে গেছে। বার বার নিষেধ করা সত্বেও তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিপক্ষে স্থানীয় সাধারণ মানুষ কিছু বলতে পারে না। এ ব্যাপারে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আর সড়কের যে অংশ টুকু দেবে গেছে সে টুকু ঠিক করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।