নিজস্ব প্রতিবেদক:
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারার শত শত কৃষককূল ফুঁসে উঠছে। স্থানীয় কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী সার অধিক দামে পাচার হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের লামার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এমনকি এসব সার সীমান্ত পার হয়ে চোরাই পথে মায়ানমারে পাচার হচ্ছে। আর বিনিময়ে মায়ানমার থেকে আসছে সর্বনাশা ইয়াবা। ডুলাহাজারার ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত বেশ ক’জন অসাধু সার ডিলারের গা-জুরি কান্ডে কৃষকদের সহজলভ্যে সার ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়েছে।

সূত্র জানায়- সরকার কৃষকদের মাঝে রাসায়নিক সার সহজভাবে পেঁৗছে দিতে সারা দেশের মতো ডুলাহাজারার নয়টি ওয়ার্ডে নয় জন সার ডিলার নিয়োগ দেয়। অভিযোগ রয়েছে-চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নাজমুল হোসেনের নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগকৃত খুচরা সার ডিলার ৪নং ওয়ার্ডের নাজেম উদ্দিন, ৭ নং ওয়ার্ডের দিদারুল আলম তাদের লাইসেন্স নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অন্য জনের হাতে বিক্রি করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়- এই অবৈধ সার চক্রটি নিজ নিজ ওয়ার্ড ছেড়ে একযোগে ৮নম্বর ওয়ার্ডে এসে পাশাপাশি পৃথক দোকান খুলে সারের রমরমা পাচার বানিজ্যে মেতে উঠেছে। এরা হল- সাজ্জাদ এন্টার প্রাইজ, কাইয়ুম এন্টার প্রাইজ, পলাশ এন্টার প্রাইজ, দিদার এন্টার প্রাইজ ও জনৈক মাহমুদ হোসেন। এতে করে ডুলাাহাজারার উক্ত পঁাচ ওয়ার্ডের শত শত কৃষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। পাঁচ গ্রামের অনেক কৃষক অভিযোগ করেছেন- ওয়ার্ড পর্যায়ে সার না পাওয়ার বিষয়টি চকরিয়ার ইউএনও এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কষ্ট লাঘবে কোন সুরাহা পাইনি।

এদিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিয়োগ প্রাপ্ত খুচরা সার ডিলার বিজয় নিশান দেব অভিযোগ করেছেন- নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ডিলার লাইসেন্স উপ-ভাড়া নিয়ে এবং লাইসেন্স ছাড়াই আমার ওয়ার্ডে এসে অবৈধ ৫ ব্যক্তি স্থান পরিবর্তন করে রাসায়নিক সার বিক্রির দোকান খুলে বসেছে। এসব অবৈধরা সব কিছু করছে গঁায়ের জোরে। তারা সার অন্যত্র পাচার করছে। তাদের এ কাণ্ডে স্ব-স্ব ওয়ার্ডের কৃষকদের বস্তা প্রতি দেড়শ থেকে দুইশ টাকা পরিবহন খরচ অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল হোসাইন জানান- ডুলাহাজারার ৯টি ওয়ার্ডের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সরকারের সার সুবিধা পৌঁছে দিতে আমিও কম কষ্ট করিনি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমার ৪নং ওয়ার্ডের নিয়োগ প্রাপ্ত খুচরা সার ডিলার ৮নং ওয়ার্ডে গিয়ে সারের দোকান খুলে বসেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

ডুলাহাজারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান- ব্যস্ততম ডুলাহাজারা বাজার ৮নং ওয়ার্ড এর অন্র্Íগত। যার কারণে অধিক মুনাফার আশায় অন্য ওয়ার্ডের বেশ কজন সার ডিলার নিয়ম ভেঙ্গে ৮নং ওয়ার্ডে এসে রাসায়নিক সারের দোকান খুলে বসেছে। এসব অবৈধ সারের দোকান সরাতে ইতিমধ্যে আমি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছি। চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত মোঃ নাজমুল হোসেন জানান- নিয়ম বর্হিভূত সার ডিলারদের স্ব-স্ব ওয়ার্ডে ফিরে যেতে ইতিমধ্যে নোটিশ দিয়েছি। সরে না গেলে সহসাই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী জনান- ডুলাহাজারার অবৈধ খুচরা সার ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এরই মাঝে আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মায়ানমারে সার পাচারের অভিযোগটি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।