ক্যাপশন: লোহাগাড়ায় মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখছেন আব্দুস শুক্কুর।

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন পিতা আব্দুর শুক্কুর। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় উপজেলার চুনতি রহমানিয়া পাড়ায় নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত পারুল আক্তারের পিতা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রায় ১৪ বছর পূর্বে আমার মেয়ে পারুল আক্তারকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি হাজির পাড়ার গ্রামের মৃত খুলু মিয়ার পুত্র মো: জয়নাল আবেদীন জুনু (৩৫) এর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে কন্যা বায়তুন মুনতাহা সুমাইয়া (১২) ও পুত্র তাওছিত বিন জয়নাল মাহি (৭) রয়েছে। মৃত্যুর সময় আমার মেয়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্বা ছিল।

তিনি আরো জানান, আমার মেয়ের জামাই পেশায় ড্রাইভার সুবাধে বিভিন্ন সময় পর মহিলার সাথে রাত কাটাত এবং বিভিন্ন জায়গায় একাধিক বিয়ে করেছে। সময়ে অসময়ে আমার বাড়িতে এসে যৌতুক দাবী ও আমার মেয়েকে মারধরসহ মানসিক নির্যাতন করত। তার প্রেক্ষিতে গত ২২ জুন ২০১৯ ইং তারিখ রাত ১০টার দিকে মুরগির ডিমের খাওয়া না খাওয়াকে কেন্দ্র করে আমার মেয়েকে তার স্বামী ও স্বামীর বোন খাদিজা বেগম লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে। এক পর্যায়ে আমার মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে বাড়ির পার্শ্ববর্তী এক গাছ বাগানে নিয়ে মুখ বিষ ঢেলে দেয় এবং লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে আমার মেয়েকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে ভর্তি করে আমার মেয়ের জামাই ও অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ জুন ২০১৯ ইং রাত ২টায় আমার মেয়ে মৃৃত্যুবরণ করে। ঘটনার পর থেকে আমার মেয়ের স্বামী জয়নাল আবেদীন জুনু পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে লোহাগাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃত্যুর পর আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানাভাবে হুমকী ধমকী দিয়ে যাচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজিদুর রহমান, নিহত পারুল আক্তারের কন্যা বায়তুন মুনতাহা সুমাইয়া ও পুত্র তাওছিত বিন জয়নাল মাহি।

অভিযুক্ত মো: জয়নাল আবেদীন জুনুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনারদিন আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়িতে না থাকায় আমার স্ত্রী পারুল আক্তার আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি বিষ খেয়েছি। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। বাড়িতে আসলে আমার লাশ দেখবেন। তখন আমি পারুলকে বলি আমি বাড়িতে আসতেছি। কি হয়েছে? বাড়িতে আসতেছি আমি, এসে দেখব। বাড়িতে যখন আসলাম তখন দেখলাম বাড়ির পাশের্^ দোকানের সামনে বিষ খেয়ে পড়ে আছে। সেখান থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রেফার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩দিন পর মারা যায়। লাশের ময়না তদন্ত শেষে বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন কার্য সম্পাদন করি। তিনি আরো বলেন, তার শ^শুর বাড়ির লোকজন তার সন্তানদের জিম্মি করে নাটক সাজাচ্ছে এসব।