সিবিএন ডেস্ক :
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার মেয়ে রাফাহ নানজিবা তোরসা। ৩৭ হাজারের বেশি প্রতিযোগী টপকে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯’ হয়েছেন তিনি। শুক্রবার রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে ঝলমলে আয়োজনে বিজয়ীর মুকুট উঠে তোরসার মাথায়। মুকুট পরিয়ে দেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের গত বারের চ্যাম্পিয়ন ঐশী। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হওয়ার পর সেরা এ সুন্দরীর সঙ্গে কথা হয়। যে আলাপে প্রতিযোগিতার এ প্লাটফর্মে অংশ গ্রহণ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন তোরসা…
৩৭ হাজারের বেশি প্রতিযোগি ডিঙ্গিয়ে আপনি ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হলেন কেমন লাগছে?
ভালো অবশ্যই লাগছে। তবে এ ভালোলাগার বিষয়টা ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। যারা এ পরিস্থিতে আসেন তারাই কেবল বুঝতে পারবেন। কাল যখন সেরার মুকুট পরানো আমাকে সেটা আমার জীবনের সেরা মুহুর্ত। জীবনের স্মরনীয় ঘটনা। মনে হলো স্বপ্ন জয়ের আরও প্রথম ধাপ এগিয়ে গেলাম। তবে একটা বিষয় আপনাদের মাধ্যমে সবাকে জানাতে চাই সেটা হলো প্রতিযোগিতায় চুড়ান্ত পর্বে ছিলেন তারা সবাই যোগ্য। সেই সেরাদের মধ্যে আরও সেরা হিসেবে নিজের নাম আসাটা একটা ভাগ্যের। এই ভাগ্য আমার হয়েছে। আমার উপর আস্থা রেখে আমাকে বিজয়ী করেছেন এই জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞ আমি। বিশেষ করে বিচারকদের প্রতি। তারা আমাকে যোগ্য মনে করেছেন। ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯’ হতে পেরে আমার স্বপ্ন পূরণ হলো।
বলছেন স্বপ্ন পূরণ হলো। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজে কতটা যোগ্য মনে করেছিলেন?
নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে এখন তেমন কিছু বলতে পারবো না। শুধু বলবো আমরা যে ১২ জন চূড়ান্ত পর্বে ছিলাম সবাই মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হওয়ার যোগ্য। তারা নিজ নিজ যোগ্যতাতেই ৩৭ হাজারের বেশি প্রতিযোগিদের মধ্য তেকে সেরা ১২ তে এসেছেন। আমি এখন সবার কাছে দোয়া চাই, ভবিষ্যতেও যেন চমক দেখাতে পারি। মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চেও যেনো বাংলাদেশের নাম উজ্জল করতে পারি।
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগীতার যুক্ত হওয়ার গল্প জানতে চাই…
ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিচরণ ছিলো আমার। তখন থেকেই নাচ শিখেছি। সেই শৈশব থেকেই ছেলেবেলা থেকেই সৌন্দর্যের জন্য সবার প্রশংসা শুনে শুনে বড় হই। ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এ তিন বছরে যতগুলো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি প্রায় সবখানেই প্রথম হয়েছি আমি। মানুষের ভালোবাসাও পেয়েছি। তখনও থেকেই এ অঙ্গনে কিছু করবো এ স্বপ্ন ছিলো। চলতি বছরে একদিন শুনলাম মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯-এর আবেদন চলছে। প্রতিযোগিতাটি নিয়ে আগে থেকেই ধারণা ছিলো। তাই নিজের যোগ্যতার উপর আত্মবিশ্বাস নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে অনলাইনে প্রতিযোগীতায় নাম লিখিয়েছি। তবে প্রতিযোগিতায় প্রথমদিকে এত এতো প্রতিযোগী দেখে পর ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। প্রথম বাঁধা টপকানোর পর একের পর এক গ্রুমিং সেশনে নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করতে লাগলাম। ধীরে ধীরে নিজে আরও পরিণত হলাম। শিখলাম অনেক কিছুই। পরের কথা তো সবারই জানা।
শুধুই কী নিজের যোগ্যতার উপর আস্থা রেখে এ প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। না অন্য কারও উৎসাহও ছিলো?
আমার জীবনে সব অর্জনে মায়ের অবদানকেই বড় করে দেখছি। তার সহযোগিতা ও সাহস না পেলে কিছুই করা সম্ভব হতো না। মা-ই আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু। পাশাপাশি আমার এক ফুফুও আমাকে বেশ উৎসাহ যুগিয়েছেন।
সামনে তো মূল প্রতিযোগীতা পর্ব, নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করবেন?
এতদিন নিজের হয়ে লড়ছিলাম, এখন দেশের জন্য লড়ব। এখনও কিছু গ্রুমিং বাকি আছে। এর মধ্যে নিজেকে আরও নিখুঁত করে নেয়ার সুযোগ পাবো। অনেক বড় দায়িত্বও কাঁধে এসেছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সৌন্দর্য তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি, এটা ভাবতে ভালো লাগছে।
আপনার ব্যক্তিগতজীবন সর্ম্পকে কিছু বলুন…
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক [আই আর] বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছি। বাবার নাম শেখ মোর্শেদ, যিনি ছিলেন পেশায় আইনজীবী। প্রয়াত হয়েছেন ২০১৪ সালে। মায়ের নাম শারমিন আক্তার (কবিতা মোরশেদ)। একমাত্র ছোট ভাই তুরাজ। ছোটবেলা থেকেই নাচ অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত আছি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।