আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর গত বুধবার থেকে উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর ওপর তুরস্ক যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তার কারণে বাড়িঘর ফেলে পালাতে বাধ্য হয়েছেন সেখানকার লক্ষাধিক মানুষ। জাতিসংঘের দেয়া হিসাবের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, অনেক মানুষ ওই অঞ্চলের হাশাকেহ শহর ও তাল তামের নামে অপর এক শহরের স্কুল ঘর কিংবা অন্যান্য সব ভবনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর গত বুধবার থেকে আন্তঃসীমান্ত হামলা শুরু করেছে তুর্কি বাহিনী।
ছবি ও ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, হামলায় বাড়িঘর ধসে পড়াসহ গোটা অঞ্চলের আকাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। হাসপাতাল বন্ধ। সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া মতো জিনিসপত্র নিয়ে বাড়িঘর ছাড়ছে অসহায় মানুষ। গাড়ি কিংবা পায়ে হেঁটেই তারা রওয়ানা হয়েছেন অজানা গন্তব্যে। বাচ্চা কোলে হাঁটছেন সব বয়সী নারী।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত লাগোয়া রাস আল-আইন ও দরবসিয়া শহর তিন দিনেই জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। সিরিয়ার একাধিক মানবাধিকার ও ত্রাণদাতা সংগঠনের দাবি, তুরস্ক যেভাবে লাগাতার বোমা ফেলছে, তাতে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বসবাসকারী প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের জীবনে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিন দিনের এই হামলায় অন্তত ১১ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, শুরু হওয়া নতুন এই সামরিক অভিযান আরও অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও বাস্তুহার হবে। ‘অভিযানে’ কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের কয়েক শত সৈন্য নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তুরস্ক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে সিরিয়ায় সামরিক অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে তুরস্ককে সবুজ সংকেত দিয়েছে। ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০১৫ সালে উত্তর সিরিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নেয় এসডিএফ।
সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর মিত্র হয়ে লড়াই করে আসছিল কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফ। কিন্তু হুট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন তিনি অন্তহীন এই যুদ্ধে তার দেশকে আর জড়িয়ে রাখবে না। কুর্দিরা বলছে, এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের পিঠে ছুড়ি মেরেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ন্যাটো প্রধান অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তুরস্ককে ‘সংযত’ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, কারো কোনো কথাই তিনি শুনবেন না। ‘জঙ্গিদের’ নির্মূল করে তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্ত তথা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।