নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে দুই ধাপ পিছিয়েছে। এ বছরের প্রতিবেদনে ১৪১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫তম। গত বছর ১৪০টি দেশের মধ্যে ১০৩তম ছিল বাংলাদেশ।

ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) ডব্লিউইএফর পার্টনার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) রাজধানীর ইকনোমিক রিপোর্টার ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

গত বছরে বিভিন্ন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ কতটা প্রতিযোগিতা সক্ষম ছিল, তা এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদন ১২টি সূচক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সূচকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০টিতেই পিছিয়েছে। এগিয়েছে মাত্র দুটিতে। সামষ্টিক অর্থনীতি, শ্রমবাজার, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, অবকাঠামো, দক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় বৈচিত্র্য উদ্ভাবন এবং বাজারের আকার সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। অন্যদিকে এগিয়েছে মাত্র পণ্যবাজার ও স্বাস্থ্যসূচকে। পণ্য বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৬তম।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বাংলাদেশ চতুর্মুখী সমস্যায় আটকে গেছে। একদিকে অবকাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে, অন্যদিকে দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের কথাও চিন্তা করতে হচ্ছে। এছাড়া সুশাসনের অভাবও আছে। বড় ধরনের সংস্কার করা না হলে উন্নত দেশ বা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে শীর্ষস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, হংকং, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, জামার্নি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও ডেনমার্কের অবস্থান। মূলত একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিবেশ কতটা সহায়ক এবং প্রতিযোগিতায় সক্ষম, সেটা এই সূচক দিয়ে বোঝানো হয়।

দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহের মধ্যে ভারতের অবস্থান শীর্ষে। ভারত ৬১.৪ স্কোর করে ৬৮ তম অবস্থানে, ৫৭.১ স্কোর করে শ্রীলংকা ৮৪ তম অবস্থানে, নেপাল ৫১.৬ স্কোর করে ১০৮ তম অবস্থানে এবং পাকিস্তান ৫১.৪ স্কোর করে ১১০ তম অবস্থানে রয়েছে। ২০০১ সালের পর থেকে এই সূচক প্রকাশ করে আসছে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম।

সিপিডি সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ বিজনেস এনভাইরনমেন্ট স্টাডি-২০১৯’ এর ওপর একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে। সমীক্ষাটি উপস্থাপনকালে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশকে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচকে দেশে অবস্থানের উন্নতি করতে চারটি প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রথমে বাংলাদেশকে শাসন ও প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো, আর্থিক ব্যবস্থা এবং ব্যবসা পরিচালনার ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রযুক্তির অভাব রয়েছে, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও দক্ষতার অনুপস্থিতি এবং ব্যবসায়িদের জন্য পরিষ্কার কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে।

সিপিডি পরিচালক মোয়াজ্জেম দক্ষতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারি সেবা, আর্থিক খাত এবং পাবলিক সেক্টরে ব্যাপক রেগুলেটরি সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।