মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নাপিতখালী গ্রামের বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মাওলানা আবদুস ছমদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লিহি–রাজেউন)। মৃত্যুকালে মাওলানা আবদুস ছমদের বয়স হয়েছিল ১১১ বছর। রোববার ৬ অক্টোবর বেলা ১২ টার দিকে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি মরহুমের পুত্র, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সভাপতি এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী সিবিএন-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত আজগর আলীর পুত্র মরহুম মাওলানা আবদুস ছমদ ১৯০৯ সালে সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাহাশিয়াখালী গ্রামে জম্মগ্রহন করেন। মরহুম মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৫ পুত্র ও ৪ কন্যা সন্তান রেখে যান।
মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা আবদুস ছমদ বিশিষ্ট ফেকাহ শাস্ত্রবিদ, অনেক শিক্ষকের শিক্ষক ছিলেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন।

জানাজা :
সোমবার ৭ অ‌ক্টোবর সকাল ৯টায় ইসলামপুর হজরত ডুলাফ‌কির (রহ.) মাজার সংলগ্ন মা‌ঠে মরহুম আবদুস ছমদের নামা‌জে জানাজা অনু‌ষ্ঠিত হ‌বে।

সং‌ক্ষিপ্ত জীবনী :
আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সমদ, পিতা-মৃত আজগর আলী। মাতা-রহিমা খাতুন, ১৯৫২ সালে পোকখালী থেকে মাহমুদা বেগমকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে বেচে নেন। ৫ পুত্র হলো-এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, শামসুদ্দিন, জসিম উদ্দিন, ফখরুদ্দিন ও নুর উদ্দিন। ৪ কন্যা। ১৯০৯ সালে ঈদগাঁও, বর্তমানে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাঁহাশিয়াখালী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৩৮ সালে ঈদগাঁও আলমাছিয়া ফাজিল মাদরাসায় ভ‌র্তি হ‌য়ে, কিছু‌দিন পর ১৯৩৯ সালে চট্রগ্রাম দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন। তিনি উক্ত মাদরাসা থেকে কলিকাতা বোর্ডের অধীনে দা‌খিল, আলিম ও ফাজিল পাশ ক‌রেন। ১৯৫১ সা‌লে কামিল পাশ করেন ঢাকা বো‌র্ডের অধী‌নে। পরব‌র্তি‌তে ঐ বছ‌রেই উখিয়ার রহম‌তের বিল মাদরাসায় হেড মাওলানা হি‌সে‌বে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫২ সা‌লে ককসবাজার হাশেমিয়া মাদরাসার প্রতিষ্টাতা শিক্ষক, কাকারা তাজুল উলুম মাদ্রাসা, চকরিয়া শাহারবিল আনওয়ারুল উলুম মাদরাসা, প‌টিয়া মকবু‌লিয়া মাদ্রাসা এবং সর্বশেষ ১৯৭৬ সা‌লে খুটাখালী তমিজিয়া ফাজিল মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান ক‌রে ১৯৯২ সালের ৩১ মে মাওলানা আবদুস ছমদ অবসর গ্রহণ করেন। তিনি
১৯৬৪ সালে পায়ে হেঁটে হজ্ব পালন করার গৌরব অর্জন করেন। প‌রে ১৯৮৭ সা‌লে ২য় বার হজ্বব্রত পালন ক‌রেন। তি‌নি বয়োবৃদ্ধ অবস্থায়ও মাঝে মা‌ঝে ঈদগাও মমতাজুল উলুম মাদরাসায় ক্লাস নি‌তেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দে‌শের বি‌ভিন্ন আ‌লেম ওলামাগণ জ‌টিল শরয়ী মাসয়ালা জানার জন্য তাঁর কা‌ছে আস‌তেন এবং তি‌নি সং‌শ্লিষ্ট বিষ‌য়ে ব্যাখ্যা প্রদান কর‌তেন।