প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
রামু লেখক ফোরামের উদ্যোগে “রামুর দীপ্তিমান আলিম কবি আইনুদ্দীন পণ্ডিত” শীর্ষক সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে । ৪ অক্টোবর (জুমাবার) বাদে আছর রামু বাইপাসস্থ মজিদিয়া কমপ্লেক্সের আঙ্গিনায় অনুষ্ঠিত এ সাহিত্য আসরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সংগঠনের সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর।
সংগঠনের সহ-সভাপতি হাফেজ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক আহমদ ছৈয়দ ফরমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য আসরে উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন, উপদেষ্টা, লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক, সমাজ ও রাজনীতি বিশ্লেষক আখতারুল আলম, কবি আইনুদ্দীন পণ্ডিতের বংশধর, মেধাবী আলেম মাওলানা মোস্তাক আহমদ, গবেষক আলেমেদ্বীন মাওলানা আ. হ. ম নুরুল কবির হিলালী, জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এড. হোসাইন আহমদ আনছারী। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ দিদারুল আলম, তরুণ লেখক হাফেজ শওকত আলী প্রমুখ।
সাহিত্যাসরে উপস্থাপিত প্রবন্ধে বলা হয়, ঐতিহ্যসমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ রামুতে যুগে যুগে বিরল প্রতিভাধর যে সকল আলিম, পীর-মশায়েখ, কবি, সাহিত্যিক জন্মলাভ করেন তাঁদের মধ্যে মাওলানা কবি আইনুদ্দীন পণ্ডিত অন্যতম। অষ্টাদশ শতাব্দীর কোন এক শুভলগ্নে রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির উমখালী গ্রামে জন্মেছিলেন ক্ষণজন্মা এ মনীষী। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রথম যামানার কৃতি ছাত্র এবং তৎপরর্তী সময়ে সেই বিশ্বসমাদৃত ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্রে শায়খুল হাদীস পদের জন্য আমন্ত্রিত মাওলানা মুহাম্মদ রামুভী রহ. কবি আইনুদ্দীন পণ্ডিতরই সুযোগ্য পুত্র।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আইনুদ্দীন পণ্ডিত ছিলেন, একজন প্রথিতযশা আলিম, প্রাজ্ঞ কবি ও প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তাঁর বিরচিত “রত্নালাপ” ও “লোভোদ্যান” নামক দু’টি পুঁথিগ্রন্থের সমৃদ্ধ পাণ্ডুলিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে গচ্ছিত রয়েছে। যা তাঁরই গুণধর নাতী মাওলানা রশিদ আহমদ সিদ্দিকী রহ. ( মাওলানা মুহাম্মদ রামুভী রহ. এর ছেলে) নিজেই চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে জমা দেন। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্যাডে ২৬/০৮/১৯৬৯ইং তারিখে মাওলানা রশিদ আহমদ সিদ্দিকী রহ. বরাবরে মাহবুব তালুকদার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে-
” প্রিয়বরেষু-
সৈয়দ আলী আহসান সাহেবের নামে প্রেরিত আপনার মরহুম দাদার রচিত পুঁথি ও চিঠি পেয়ে আমরা খুশি হয়েছি। মরহুম আইনুদ্দীনের পুঁথি বাংলা সাহিত্যিকের গবেষণায় বিশেষ সহায়ক হবে।”
চিঠিখানা প্রেরণের পর ৪ সেপ্টেম্বর’১৯৬৯ইং তারিখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৎকালীন প্রধান, বাংলা সাহিত্যের দিকপাল, জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান স্বাক্ষরিত ইংরেজি ভাষায় একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও পাঠানো হয়।
বিরল প্রতিভাধর এই কীর্তিমান মনীষী ও আলিম কবির বিরচিত পাণ্ডুলিপি দু’টি সংগ্রহপূর্বক গ্রন্থাকারে ছাপানো হলে সাহিত্য সাধনায় রামুর আলোকোজ্জ্বল পরিচিতি উদ্ভাসিত হবে। সেই সাথে তৎকালীন ভাষা-সাহিত্য, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও চমকপ্রদ ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।

উল্লেখ্য, মাওলানা কবি আইনুদ্দীন পণ্ডিতের সুযোগ্য সন্তান, কিংবদন্তীতুল্য ব্যক্তিত্ব মাওলানা মুহাম্মদ রামুভী রহ. হাকীমুল উম্মাত আল্লামা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর বিশিষ্ট খলীফা।