মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:
মহাষষ্ঠীর বোধনের মধ্য দিয়ে বান্দরবানের লামা উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ৮টি মন্ডপে এক যোগে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শুক্রবার দিনগত রাতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় হরিমন্দির মন্ডপ প্রাঙ্গণে পাঁচদিনের এ শারদীয় দূর্গোৎসবের উদ্বোধন করেন, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম।
এ সময় নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি, থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা, কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুল দাশ, সহ-সভাপতি রতন দত্ত, সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ, অর্থ সম্পাদক গোপন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী লোকনাথ ধামের সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ধূপ-ধুনোয় ভক্তদের ঢাক-ঢোল, কাঁসর-মন্দিরা বাদ্য, বর্ণাঢ্য আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে উপজেলার পূজামন্ডপগুলো। জগতের মঙ্গল কামনায় কৈলাস থেকে এবারে দেবী এসেছে ঘোড়ায় চড়ে।
বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে আবার কৈলাসে ফিরবে ঘোড়ায় চড়ে। শনিবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল, নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা, কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ পুজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করেন।
লামা উপজেলা কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুল দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ বলেন, এবার উপজেলার ৮টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করা হচ্ছে। জেলার বড় দুর্গাপূজা মন্ডপের মধ্যে এটি একটি। প্রতি বছরের মত এবারও সরকারীভাবে আর্থিক বরাদ্দ পেয়েছি। আজ ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহাসপ্তমী উদযাপিত হচ্ছে। ৮অক্টোবর দশমীতে মাতামুহুরী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে উৎসব শেষ হবে। তারা আরো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানের মন্ডপে মন্ডপে অধিষ্ঠিত হয়েছে দেবী দূর্গা। পূজাস্থলকে আকর্ষণীয় করে তুলতে মন্ডপে মন্ডপে লাইটিং, মাইক-সাউন্ড, মিউজিশিয়ান প্রতিষ্ঠান, বাদ্যযন্ত্র, ডেকোরেশন বুকিং করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ডিজিটাল ব্যানারও। এ বছর কেন্দ্রীয হরি মন্দির পুজা মন্ডপের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ‘মেঘের গর্জন’।
লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, উৎসব যেন সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পালন করতে পারে সেজন্য মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তায় দুর্গাপুজা মন্ডপগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি আনসার ভিডিপি সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শান্তিপূর্ণভাবে পুজা উদ্যাপন করতে পারবেন সনাতন ধর্মালম্বীরা।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সরকারিভাবে দূর্গা পুজা উৎসব পালনের জন্য মন্ডপগুলোতে সরকারীভাবে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল ও পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।