ডেস্ক নিউজ:
রাজধানীর বাইরে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকায় এডিস মশার ইজিপ্টি প্রজাতির প্রকোপ থাকলেও, বাইরে শুধু এডিস ইজিপ্টি নয়, অধিকাংশই আক্রান্ত হচ্ছে অ্যালবোপিকটাস প্রজাতির মশার কামড়ে। শুধু আক্রান্ত নয়, শান্তশিষ্ট হিসেবে পরিচিত এ মশা এখন প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।

ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) একাধিক টিম বরিশাল, মেহেরপুর ও যশোরে পরিচালিত জরিপ চালায়। জরিপ বিশ্লেষণ করে এডিস ইজিপ্টির পাশাপাশি অ্যালবোপিকটাস মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ডেঙ্গুর প্রাথমিক বাহক এডিস ইজিপ্টা আর দ্বিতীয় পর্যায়ের বাহক এডিস অ্যালবোপিকটাস।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা বলেছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে গ্রামকেও শহরের মতো গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি জানান, এডিস ইজিপ্টি প্রজাতির মশা হিংস্র প্রকৃতির। এটি একসঙ্গে বেশ কয়েকজনকে কামড়ায়। তবে সে তুলনায় এডিস অ্যালবোপিকটাস শান্ত প্রকৃতির। একটি মাত্র একজনকে কামড়ে নিজের রক্তের চাহিদা পূরণ করে। এডিস ইজিপ্টির তুলনায় অ্যালবোপিকটাসের সংক্রমণ ক্ষমতা পাঁচগুণ কম।

অধ্যাপক সেব্রিনা আরও জানান, এডিস ইজিপ্টি বাসাবাড়িতে থাকলেও অ্যালবোপিকটস বাঁশের চোঙ্গা, গর্ত, কলাগাছ, কচুগাছ, নারকে গাছের পরিত্যক্ত ডগায় থাকে। এসব ক্ষেত্রে মশার ওষুধ ছিটানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি বলেন, শহরে এডিস মশার প্রজনন স্থলে ওষুধ ছিটালে সেখানে শিশুদের আসার সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু গ্রামে অ্যালবোপিকটস মশা নিধনের উৎপত্তিস্থলে শিশুদের আনাগোনা বেশি। তাই সাবধানতা অবলম্বন করে ওষুধ দিতে হবে।

জানা গেছে, আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আইইডিসিআরের বিজ্ঞানী ও গবেষণা দল বরিশালের ১২০টি পরিবারের মধ্যে ৬টি পরিবারের পানির পাত্রে লার্ভা পায়। ৫৬টি স্থাপনার ১৯টি পানির পাত্রে লার্ভা পাওয়া যায়। এসব লার্ভা থেকে ৭৫৫টি পূর্ণাঙ্গ মশা হয়। তার মধ্যে ১৪টি এডিস প্রজাতির, যেখানে সাতটি অ্যালবোপিকটস।

কুষ্টিয়াতে ৭১টি পরিবার থেকে সংগৃহীত লার্ভায় ২টি পূর্ণাঙ্গ মশা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি অ্যালবোপিকটস প্রজাতির।
এছাড়া মেহেরপুরের গাংনীতে সংগৃহীত লার্ভা থেকে ২৩৭টি মশার মধ্যে ১১৬টি বিভিন্ন প্রজাতির এডিস মশা পাওয়া যায়। ১১৬টির মধ্যে ৭৮টি এডিস অ্যালবোপিকটস ছিল।