সিবিএন ডেস্ক:

ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিক পঞ্জি ইস্যুতে সেখানকার মন্ত্রীদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করার জন্য গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর কোনো বাংলাদেশি ভারতে যায়নি।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, সরকারের সাহস নেই। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না সরকার।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিবের ভাষ্য, ‘খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। কিন্তু সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি সুস্থ আছেন। অবিলম্বে তাঁর সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি দাবি করছি।’

সরকারকে ‘অবৈধ’ অভিহিত করে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম—সব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা চলছে।

জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নিজের অধিকার, ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর। ছবি: তানভীর আহমেদদলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর। ছবি: তানভীর আহমেদ

মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচারকেরা মুক্তমনে কাজ করতে পারছেন না। যে কারণে আইনি প্রক্রিয়াকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধভাবে সারা দেশে রাজপথে আন্দোলন করার কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য ‘মানববন্ধন’ নয়, ‘দানববন্ধন’ কর্মসূচির কথা বলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে তাঁরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন। সরকার পতনের আন্দোলন করলে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রের মুক্তি নিশ্চিত হবে।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, খায়রুল কবির, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুন নবী খান প্রমুখ।