বিদেশ ডেস্ক:

ভারতের জন্য আবারও পুরোপুরিভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের আকাশপথ। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ভূখণ্ড হয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যপথও বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। এখন আইনি দিক পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে পথে হাঁটছে ইসলামাবাদ। মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে সরকারের এমন চিন্তা-ভাবনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী।

টুইটারে দেওয়া পোস্টে মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, ভারতের জন্য আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের স্থলবাণিজ্য বন্ধের বিষয়টি নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইনি দিকগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এর আগে পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার ঘটনায় ভারতের জন্য নিজ দেশের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছিল ইসলামাবাদ। তখন প্রায় চার মাস পাকিস্তানের আকাশসীমা হয়ে ভারতের বিমান চলাচল বন্ধ থাকে। ২৬ ফেব্রুয়ারি বন্ধ করে দেওয়ার পর গত ১৬ জুলাই ফের আকাশপথ খুলে দেয় পাকিস্তান। এখন কাশ্মির ইস্যুতে ফের একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে ইসলামাবাদ।

ভারতীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার কমবেশি ৫০টি বিমান বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করে। এই বিমানগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে।

মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে কাশ্মিরের জনগণের সহায়তায় এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ইমরান খান। আগের দিন ২৬ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও উপত্যকার নিপীড়িত মানুষের সহায়তায় যতদূর সম্ভব হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।

ভাষণ ইমরান খান বলেন, কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারত ঐতিহাসিক ভুল করেছে। কেননা এর মধ্য দিয়ে অঞ্চলটির স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। আর নিপীড়িত কাশ্মিরি জনগণের জন্য যতদূর যেতে হয় ততদূর যাবে পাকিস্তান।

তিনি বলেন, ‘কাশ্মির সমস্যা পুরো দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেছে পাকিস্তান। এই ব্যাপারে যদি কোনও দেশ পাশে না দাঁড়ায়, তাহলেও কোনও সমস্যা নেই। কারণ কাশ্মিরের ভাইদের পাশে পাকিস্তান ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ভারত যেন ভুলে না যায়, আমাদের পরমাণু অস্ত্রও রয়েছে। কাশ্মির ইস্যুতে যতদূর যাওয়া যায়, আমরা ততদূর যাবো।’

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করে দেয় দিল্লি। ওই দিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় দুনিয়ার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মির উপত্যকা। একে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করাসহ ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। দুই দেশের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কাশ্মির সীমান্তে চলছে টানটান উত্তেজনা। একইসঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত ও ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে কালো দিবস হিসেবে পালন করেছে ইসলামাবাদ। সূত্র: টুইটার, নিউজ ১৮, ডন।