মুহাম্মদ শাহ জাহান, ইউএইঃ
গত ১২ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা বন্ধের ৭ বছর পেরিয়ে এখন ৮ বছরে। ২০১২ সালের এই তারিখ বাংলাদেশীদের জন্য আমিরাতের শ্রমবাজার বন্ধ হয়। মধ্যপ্রাচ্যেরর দ্বিতীয় শ্রমবাজারে ভিসা বন্ধ থাকায় দেশের প্রবাস গমনেচ্ছু যুবকরা যেমন হতাশ তেমনি আমিরাতে বাংলাদেশী মালিকানাধীন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জনবল সংকট দেখা দেয়। জনবলের অভাবে শুরুতেই বেশ কিছু ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের শ্রম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভিসা চালুর জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে যা আমরা মিডিয়ার মাধ্যম দেখতে পাচ্ছি। আমিরাতের সাথে আলোচনার কথা উল্লেখ করে দেশের একাধিক মন্ত্রী ব্রিফিং পর্যন্ত দিয়েছেন। ২০১৭ সালের মে মাসে তৎকালীন মন্ত্রী দুবাই সফর করে ভিসা চালু হওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে (আইডিইএক্স-২০১৯) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরাত সফর করেন। সেই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। প্রবাসীদের সাথে আলাপকালে ও মিডিয়া মাধ্যম মন্ত্রী সরাসরি বলেছিলেন আমিরাতের ভিসা চালু। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার পথে এখনো ভিসা চালুর কোন সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না।
আমিরতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আমিরাতের প্রতি প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসা প্রকাশের পরও অজানা কারণে ৮ বছরেও ভিসা বন্ধ রয়েছে।
আবার কখন হালনাগাদ ভিসা চালু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত ড. মুহাম্মদ ইমরান জানান- এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন সময় সীমা না থাকলেও প্রবাসিরা অনৈতিক কাজ পরিহার করে এদেশের আইনের প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল হলে শীঘ্রই ভিসা খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এদেশের নিয়ম বহির্ভূত অপরাধ জনিত কাজ থেকে বিরত থাকতে প্রবাসিদের প্রতি আহবানও জানান।
ভিসা বন্ধ থাকলেও আমিরাতে গত ২ বছর থেকে ভ্রমণ বা ভিজিট ভিসা সহজ করা হয়েছে। ভিজিট ভিসা সহজ হওয়ায় দেশের বহুসংখ্যক যুবক আমিরাতে প্রবেশ করে কেউ ইনভেস্টর বা ব্যবসায়িক ভিসা লাগিয়ে বৈধ হচ্ছে। অনেকে আবার ভিজিট ভিসার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেসিডেন্স ভিসা না লাগিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করা শুরু করেছেন।
এরমধ্যে গতবছর আগস্ট মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমিরাত সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে, তার প্রেক্ষিত বহুসংখ্যক অবৈধ প্রবাসী বৈধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে আবারো ভিজিটে এসে অসংখ্য প্রবাসী অবৈধভাবে বসবাস করা শুরু করেছেন।