ইমাম খাইর, সিবিএন:
উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া স্কুল ও মাদরাসা সংলগ্ন পরিত্যক্ত সাইক্লোন শেল্টার নিয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এলাকাবাসী। যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে ভবনটি। আশঙ্কা রয়েছে প্রাণহানিসহ বড় ধরণের দুর্ঘটনার। প্রায় অর্ধশত বছরের এই ভবনটি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন।
তবে, ভবনের সঠিক মালিকানা জটিলতার কারণে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয়রা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদাসীনতাকে দায়ী করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী মোহাম্মদ হোসাইন কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত সাইক্লোন শেল্টারটির কারণে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্থানীয়রা। এর দক্ষিণ পাশে আহমদিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, নুরানী একাডেমী ও হেফজখানা। সকাল বেলায় মসজিদে মক্তব পড়ানো হয়। উত্তর পাশে রয়েছে সোনারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নীচ দিয়ে হাঁটাচলা করে থাকে।
তিনি জানান, ভবনটির বিভিন্ন অংশ প্রায় সময় খসে পড়তে দেখা যায়। পলেস্তারাও পড়ে যাচ্ছে। ইট-কংক্রীট ওঠে গিয়ে লোহা দেখা যাচ্ছে। হেলে গেছে ভবনের বেশ কিছু অংশ। যে কারণে স্থানীয়রা অতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভবনটি জরুরী ভিত্তিতে ভেঙ্গে না ফেললে যে কোন মুহূর্তে জানমালের বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেছেন মি.হোসাইন।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী মোঃ আবদুল হামিদ খান উদ্বেগের সঙ্গে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমরা এমন এক দেশে বাস করি, যে দেশে বড় ধরনের দুর্ঘটনা না হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রশাসনের টনক নড়ে না!!
যার নীচ দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করে সোনারপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, হাফেজ খানা, প্রাইমারি ও উচ্চবিদ্যালয়ের শতশত ছাত্রছাত্রীসহ অসংখ্য মুসল্লি।
এই ঝুঁকিপুর্ন ভবনটি নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক লিখালিখি হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশতঃ এখনো পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি।
তিনি আরো লিখেছেন, আজ সকালে হঠাৎ ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ে। তাই প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন- বড় ধরনের দুর্ঘটনা না হওয়ার আগেই ব্যবস্থা গ্রহন করুন।
এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, ১৯৭৩ সালের দিকে নির্মিত সাইক্লোন শেল্টারটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এলাকার কচিকাঁচা ছেলেরা ভবনের নীচে খেলাধুলা করে। ভবনের পাশ দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল রয়েছে। রাতের বেলায় অনেকে গল্পের আসরও বসায়।
স্থানীয়দের দাবী, জীবনের ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত সাইক্লোন শেল্টারটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভাঙ্গার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় দুর্ঘটনার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে বলেন, বেশ কয়েকবার আমি সরেজমিন ভবনটি দেখেছি। ভবনের মালিকানা নিশ্চিত না হওয়ায় ভাঙ্গার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে রবিবার (২৮ জুলাই) সরেজমিন গিয়ে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করে আমাকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছি। এরপর দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)কে বলেন, ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।