ইফতেখার শাহজীদ, কুতুবদিয়া :

কুতুবদিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)‘র হস্তক্ষেপে হারানো জমি ফিরে পেয়েছে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের মুছার পাড়ার মৃত সোলাইমানের ছেলে জুলফিকার প্রকাশ বাহাদুর। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তার প্রতিবেশি মোহাম্মদ হোছাইনের সাথে বসতভিটে নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৬ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবং সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুপ্রভাত চাকমার হস্তক্ষেপে দীর্ঘ দিনের এ বিরোধের নিস্পত্তি হয়।

জানা যায়, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের মুছার পাড়ার মৃত সোলাইমানের ছেলে জুলফিকার প্রকাশ বাহাদুরের ভোগ দখলীয় দক্ষিণ ধুরুং মৌজার ২১২৮ নং বি,এস খতিয়ানের ২৮৫৭ নং বি,এস দাগের বসতভিটের প্রায় ৮ শতক জমি ৩৫ বছর আগে জোর করে দখলে নেয় একই এলাকার মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে ভূমিদস্যু মোহাম্মদ হোছাইন।

দিনমজুর বাহাদুর দখলকৃত জমি ফিরে পেতে ৩৫ বছর ধরে গ্রাম্য সালিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এবং গণ্যমান্যদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন। কিন্তু ভূমিদস্যুচক্র যথেষ্ঠ প্রভাবশালী হওয়ায় এর সুরাহা আর হয়নি।

গত ২৯ মার্চ দুপুরে মোহাম্মদ হোছাইন দখলকৃত ওই ৮ শতক জমিতে রড সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে পাকা দালান তৈরির কাজ শুরু করে। এসময় দিনমজুর বাহাদুর বাধা দিতে গেলে ভূমিদস্যু ও তার সহযোগিরা বাহাদুরের ওপর চড়াও হয়। কোন উপায়ান্তর না দেখে সরে পড়ে সে।

এবিষয়ে জুলফিকার আলম বাহাদুর বাদী হয়ে গত ২ এপ্রিল সদ্যবিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার রায় বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি আমলে নেন ইউএনও দীপক কুমার রায়। ০৫.২০.২২৪৫.০৬.০১৩.১৮-১৫৫ নং স্মারক মূলে গত ৪ এপ্রিল প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রসহ ইউএনও‘র কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রেরণ করেন তিনি।

পরবর্তীতে ইউএনও দীপক কুমার রায়ের মুন্সিগঞ্জ জেলায় সহকারি জেলা প্রশাসক পদে পদোন্নতি হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমা। এরপর ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) সুপ্রভাত চাকমা গত ১৬ জুলাই উভয় পক্ষের স্ব-স্ব বক্তব্য ও স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ২ জন লোকাল সার্ভেয়ার নিয়োগ করে জমি পরিমাপ ও দখল সংক্রান্ত লিখিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মোহাম্মদ হোছাইনকে ২ শতক জমির দখল ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।

এদিকে বেদখল হয়ে যাওয়া অন্তত ২ শতক জমি ৩৫ বছর পর ফিরে পাওয়ায় আনন্দের শেষ নেই দিনমজুর বাহাদুরের। অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে বাহাদুর এ প্রতিবেদককে বলেন, ৩৫ বছর ধরে বিভিন্ন জনের দুয়ারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাইনি। আজ ইউএনও‘র হস্তক্ষেপে আমি আমার পাওনা ফিরে পেয়েছি। এজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।