ডেস্ক নিউজ:
আদালত থেকে নেওয়ার পথে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিবরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী ও হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশ মিন্নিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। তবে আদালতে রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারকের এক প্রশ্নের জবাবে মিন্নি নিজেকে নিরাপরাধ দাবি করেছেন এবং স্বামীর খুনীদের ফাঁসির দাবি জানান।

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৩টায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কৌঁশুলী অ্যাড. সঞ্জিব দাস জানান, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের বিচারকের কাছে মিন্নিকে কী কারণে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মনে হয়েছে সেই বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে জানান, রিফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি টিকটক হৃদয় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রিফাত হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় মিন্নি জড়িত ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের আগে এজাহারভুক্ত সব আসামির সঙ্গে বিভিন্ন সময় এই আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রক্ষা করেছে, সেই কল লিস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থাপন করেছেন। এসময় আদালতের কাছে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মিন্নির পক্ষে কোনও আইনজীবী না থাকায় তাকেই কথা বলার সুযোগ দেন।’

এই আইনজীবী বলেন, “আদালতের বিচারক মিন্নিকে প্রশ্ন করেন, ‘এই মামলায় আপনার কোনও আইনজীবী না থাকায় আপনার বক্তব্য কী?’ এসময় মিন্নি বলেছেন, ‘রিফাত শরীফ আমার স্বামী। আমি আমার স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত না। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। আমাকে ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’

উল্লেখ্য জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে মঙ্গলবার মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।