ডেস্ক নিউজ:

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, দেশের বুদ্ধিজীবীরা ‘চামচাগিরি’ করছেন। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এক স্মারক বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
‘বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির চালচিত্র’ শীর্ষক এই স্মারক বক্তৃতানুষ্ঠান আয়োজন করে নাজমুল করিম স্টাডি। স্মারক বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বুদ্ধিজীবীদের মানুষকে পথ দেখানোর কথা। কিন্তু তাঁরা চামচাগিরি করেন, বিশ্বাসঘাতকতা করেন, দায়িত্ব পালন না করে উল্টোটা করেন, এটাই বাংলাদেশে হচ্ছে, চলছে।

তিনি বলেন, আমরা উন্নতি অনেক করেছি, দৃশ্যমান উন্নতি আছে, অবকাঠামোগত উন্নতি আছে, জিডিপি পরিসংখ্যান আছে, বিদেশি প্রশংসা আছে। কিন্তু ভেতরের দুর্দশা হচ্ছে শিশুর। যে শিশু খেলতে চেয়েছিল, খেলতে গিয়ে ধর্ষিত হলো, খেলতে গিয়ে প্রাণ হারাল। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বাস্তবতা। এই বাস্তবতাই প্রতিফলিত হচ্ছে, এই রাষ্ট্র নৃশংস, এই রাষ্ট্র আমলাতান্ত্রিক।

এই রাষ্ট্র কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র, মন্তব্য করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘তবে শুধু কর্তৃত্ববাদী বললেই হবে না, এই ব্যবস্থা পিতৃতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী ও চূড়ান্ত। এই রাষ্ট্র ফ্যাসিবাদী। ক্ষমতা যখন একজনের হাতে চলে যায়, সেটা আমরা পাকিস্তানের আমলে দেখেছি, ৪৬ বছর ধরে বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখছি। এই রাষ্ট্রের আমলাতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী চরিত্র আরও বিকশিত হয়েছে, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আর সেই জন্যই আজকের দুর্দশা হচ্ছে, আমরা কোনো আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।

নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টার আয়োজিত বক্তৃতায় এবারের স্মারক বক্তা ছিলেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ।
সভাপতির বক্তব্যের আগে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী চরিত্র শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বেই এমনটা হচ্ছে। বাংলাদেশে বাস করে প্রতিনিয়ত আমরা এটার মুখোমুখি হই। কর্তৃত্ববাদ মানে অন্যের ওপরে নিজের মতামত চাপিয়ে দেওয়া। এটা আমরা সর্বত্র প্রতিনিয়ত দেখছি। রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে, বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও দেখছি, মতামত চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। এমনকি গণমাধ্যমেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। গণতান্ত্রিক চর্চার সঙ্গে এই চাপিয়ে দেওয়া কর্তৃত্ববাদ সংগতিপূর্ণ না।