নিজস্ব প্রতিবেদক :
মহেশখালীতে কয়েকদিন ধরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হোয়ানক টাইমবাজার (বৃহত্তর খোরশাপাড়া, ফকিরখালী পাড়া ও বৃহত্তর পুঁইছড়ার) শতবছরের কবরস্থান দখলমুক্ত করণ ও ভূমিদস্যু বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১১টায় মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৃহত্তর খোরশাপাড়া, ফকিরখালী পাড়া ও বৃহত্তর পুঁইছড়ার বিপুল মানুষ অংশ নেন। তারা বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভিজে গাড়িযোগে এসে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ভূমিদস্যু বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

মাববন্ধনে এলাকার লোকজন বলেন, টাইমবাজার (বৃহত্তর খোরশাপাড়া, ফকিরখালী পাড়া ও বৃহত্তর পুঁইছড়ার) কবরস্থানটি দীর্ঘদিন সীমানা দেয়ালবিহীন অবস্থায় ছিলো। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণও হয়নি। বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা তিন পাড়ার সব লোক একত্রিত হয়ে সবার পরামর্শ ও আর্থিকসহ সার্বিক সহযোগিতায় সম্প্রতি সঠিক রক্ষনাবেক্ষণের জন্য কবরস্থানের চারপাশে সীমানা দেয়াল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং কাজ শুরু করি। ইতিমধ্যে কবরস্থানের উত্তর, পশ্চিম অংশ সম্পূর্ণ সীমানা দেয়াল নির্মাণ হয়েছে এবং দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে নির্মাণ কাজ বিগত কয়েক দিন আগে শুরু করে প্রায় অধিকাংশ কাজ শেষ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু লোকজনের অগোচরে থাকায় ইতিপূর্বে কবরস্থানের পূর্বপাশের বিরাট অংশ রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে দখল করে সেখানে ঘেরাও দেয় মৃত কবির আহামদের পুত্র ভূমিদস্যু বাদশা মিয়া। তার দখল করা জায়গায় ২০/৩০টি কবরও রয়েছে। কবরগুলো সব বিলীন হয়ে গেছে।

বক্তারা আরো বলেন, ওইপাশে সীমানা দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে বাধা দেয় বাদশা মিয়া ও তার লোকজন। এই নিয়ে পাড়ার লোকজন প্রতিবাদ জানালে মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে হুমকি প্রদান করা হয়। বাইরের পাড়ার কিছু অসাধু লোকজনের ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজসে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাজানো মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে বাদশা মিয়া। একই সাথে কুচক্রী মহলের কু-পরামর্শে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির লোকজনকে বিবাদী করে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনা সাজিয়ে অভিযোগ দায়ের করে ১৪৪ ধারা মতে মামলা করে। যার নং- ৪৪৩/১৯ইং। মামলাটি বিজ্ঞ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহেশখালী মহোদয়কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বাদশা মিয়া ১৪৪ ধারার মামলায় যে দলিলাদির কথা উল্লেখ করেছে বাস্তবতার সাথে তার কোনো মিল নেই। অন্যদিকে কবরস্থান কমিটির কাছে তার সম্পূর্ণ সঠিক দলিলাদি রক্ষিত রয়েছে। এছাড়া পাড়ার প্রবীণ ব্যক্তিরা ((কবির আহামদ (৯০), হাজী নূর আহামদ (৮০), হাজী আলী ফকির (৯০), হাজী মাস্টার ছৈয়দ আকবর (৮০), ইউসুফ আলী (৯০), জাফর আলম (৮৫), ছকির আহমদ (৮০)} জানিয়েছেন শত বছর ধরে ওই স্থান কবরস্থান হিসেবে রয়েছে।

আদালতের নির্দেশ মতে আমরা বর্তমানে স্থিতিতাবস্থা বজায় রেখে কাজ বন্ধ রেখেছি। কিন্তু বিবাদী বাদশা মিয়া কবরস্থান পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও প্রতিবাদকারীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বাদশা মিয়ার ভাতিজা সেনাবাহিনী সদস্য সাদ্দামও অদৃশ্যভাবে সেনাবাহিনীর শক্তির হুমকি দেখাচ্ছে। তাদের ইন্ধন যোগাচ্ছে বাইরের ওই কুচক্রী লোকজন। তারা ইতিধ্যে চিহ্নিত হয়েছে।

বিক্ষুব্ধ বক্তারা বলেন, শুধু তাই নয়, বাদশা মিয়া পবিত্র কবরস্থান দখল করে রাখতে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’র চেষ্টা করছে। সে নিজেকে আওয়ামী লীগ দাবি করে জোর করে কবরস্থানের জমি দখল করে রাখবে বলে বীরদর্পে প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে। বিপরীতে প্রতিবাদকারীদের সবাইকে রাজাকার, বিএনপি-জামায়াত এবং স্বাধীনতা বিরোধী বলে মিথ্যা প্রচার করছে। এই নিয়ে ফেসবুক ও পত্রিকায় কুরুচিপূর্ণ কথা লিখছে বাদশা মিয়ার লোকজন। যা আমাদের চরম মর্যাদাহানি হচ্ছে। এতে এলাকার জনসাধারণ ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। তাই যেকোনো মুহূর্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি একটি বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তেমন একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়ে ফায়দা লুটার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রকাশ্যে উস্কানি দিচ্ছে বাদশা মিয়া ও তার লোকজন।