শাহীন মাহমুদ রাসেল :
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা এবং পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পাতলী খালের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে অবৈধ দখলদার ভূমি দস্যুদের কালো থাবায়। নিয়মিত ড্রেজিং না করা, নদী জুড়ে পুকুর খনন ও বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত এই নদী আজ বিপন্ন হয়ে উঠেছে। তাছাড়া নদীতে বাঁধের কারণে পানি না থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধা-পাকা ইরি ধানসহ বিভিন্ন শাক-সবজি।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ভূমি দস্যুদের অবৈধ দখলের কারণে পাতলী খাল ও তার সংযোগ নদীর ঐতিহ্য ও গতি প্রবাহ হারিয়ে যেতে বসেছে। ভূমি দস্যুরা সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া মাষ্টার পাড়া গ্রাম থেকে ছাগল কাটার টেক পর্যন্ত পাতলীখাল দখল করে একাধিক পুকুর ও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।
সম্প্রতি মাষ্টার পাড়া গ্রামের প্রভাবশালীরা মাষ্টার পাড়া এলাকায় পাতলীখাল জুড়ে ২টি বিশাল বাঁধ নির্মাণ করেছে। এতে পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়াও সম্প্রতি পিএমখালী এলাকার বিভিন্ন বিলে পানির অভাবে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধা-পাকা ইরি ধানসহ বিভিন্ন সবজি হুমকির মুখে পড়েছে।
পিএমখালীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এই নদী জুড়ে পুকুর খনন ও অবৈধ বাঁধ নির্মাণের কারণে নদীর পানি মোহসিনিয়া পাড়া ও পাতলী এলাকার বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গন দিয়ে বিলে পানি ঢুকে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। আর প্রায় শতাধিক কৃষক স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করে ফসল রক্ষার চেষ্টা করছে। বাঁধে কর্মরত কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম ও ফজলুর রহমান বলেন, কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের কারণে প্রতি বছরই শুকনো মৌসুমে সেচের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে আবার বর্ষা মৌসুমে এই ভাঙ্গন দিয়ে বিলে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পিএমখালীবিলের প্রায় লক্ষাধিক কৃষক। তাছাড়া নদীতে একাধিক ঘনমিটার পলি পড়ে ও অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কারণে এই নদী নাব্যতা হারিয়ে ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। তারা এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন।
তথ্য সূত্রে জানা গছে, ঝিংলজা ও পিএমখালী ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন মরহুম জিয়াউর রহমান নিজে এসে মানুষজন নিয় খালটি খনন করছিলন। কিন্তু কালক্রমে খালটি নানা কারণে ভরাট হয় গেছে। তার উপর রয়েছে দখলদারদের থাবা। এই পর্যন্ত কোন সরকার বা জনপ্রতিনিধি খালটি পুন: খনন করার জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপার জানতে চাইলে ঝিংলজার ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলন, ‘সরকারি খাল বা নদী দখল করা সম্পূর্ণ অবৈধ। পাতলী খাল অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করাও অপরাধ। বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। যারা খাল দখল করেছে তাদেরকে ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।