ইমাম খাইর, সিবিএন:
কোন ধরণের অপ্রীতির ঘটনা ছাড়া সমাপ্ত হলো চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে উপজেলার ৯৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট নেয়া হয়। টুকিটাকি কয়েকটি ঘটনা ছাড়াই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট নিতে প্রস্তুত থাকলেও সাড়া দেয়নি ভোটারেরা। ভোট শুরুর প্রায় দুই ঘন্টা পর্যন্ত অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে চোখে পড়ার মতো ভোটার যায়নি। ছিলনা ভোটারের লাইন। কিছু কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও পুরুষ ভোটার ছিলনা বললে চলে। উপজেলার ৯৯ কেন্দ্রের দুই তৃতীয়াংশের একই চিত্র।
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে কোন ভোটার চোখে পড়েনি। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু লোক স্কুলের মাঠে হাটতে দেখা যায়। ভোটে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও ভোটারের আশায় অপেক্ষায় ছিল। খুটাখালী কিশলয় কেন্দ্র সকাল ১১টায় পর্যন্ত অলস সময় কাটিয়েছে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা। পরে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ভোটার যেতে দেখা গেছে। দক্ষিণ মেদা কচ্ছপিয়া কুতুবদিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ৬টি বুথে সকাল ১১ টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ২০২টি। এর আগে ফাঁসিয়াখালী ছায়রাখালী মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে গেলে একই চিত্র ধরা পড়ে। চকরিয়া পালাকাটা সরকারী প্রাথমিক ভোটকেন্দ্রে ভোটার না যাওয়া মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরও ভোটারের আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
বলতে গেলে উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারদের কোন আগ্রহ ছিলনা। তবে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের প্রস্তুতি ও আন্তরিকতার কোন কমতি ছিলনা। নৌকার পক্ষে প্রচারণায় অভিযোগ থাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলমকে ইসির নির্দেশে ভোটের আগের রাতেই এলাকা ছাড়া করে। ভোটের দিন সকাল থেকে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিরা ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ভোটারদের সাথে কথা বলে ভোট গ্রহণ ও নিরপেক্ষ ফলাফলে আশ্বস্ত করেন। নিরাপদ ভোট গ্রহণে ভোটকেন্দ্রে ২০ প্লাটুন বিজিবি, দুই প্লাটুন র্যাব, ১১০০ পুলিশ ও প্রতিকেন্দ্রে ১০ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ মোট ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার সাখাওয়াত হোসেনের কাছে ভোটের পরিস্থিতি জানতে চাইলে ভোটররা স্বতৎস্ফূর্তভাবে ভোট দেয় বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে প্রচুর ভোটার ছিল। কোন ঝামেলা হয়নি। ভোটের আগের রাতের বেলায়ও অঘটন ঘটেনি।
চকরিয়া উপজেলার ১৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৫৫ জন। সেখানে পুরুষ ভোটার ১৪৮৯০৫ জন এবং মহিলা ভোটার ১৩৫৬৫০ জন। মোট ৯৯ টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কক্ষ ছিল ৬৩৪ টি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জনসহ মোট ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিল গিয়াস উদ্দিন। আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ফজলুল করিম সাঈদী।
সুষ্ঠু নির্বাচনে নিরুত্তাপ ভোট
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
