আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হলে ছয় হাজার মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ সহয়তা পাবেন প্রত্যেক রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপকালে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীন সরকারের এশিয়া বিষয়ক দূত সুন গুঝিয়াং। ইন্দোনেশিয়ার বেনার নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গাদের নেতাও জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে ফিরে গেলে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুন গুঝিয়াং।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) মহাসচিব সায়েদ উল্লাহ জানিয়েছেন, চীন সরকারের এশিয়া বিষয়ক দূত সুন গুঝিয়াং গত ৩ মার্চ কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ১৪ জন রোহিঙ্গা নারী ও ১৫ জন রোহিঙ্গা পুরুষের সঙ্গে আলাপ করেছেন।

বেনার নিউজকে তিনি বলেন, পাঁচ থেকে ছয় হাজার ডলার দিলে আমরা ফিরে যাব কিনা সে বিষয়ে তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের নাগরিকত্ব দেয়া না হলে এবং আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়া না হলে আমরা কোনভাবেই ফিরে যাব না বলে জানিয়েছি। তবে এ বিষয়ে রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘের এক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা।

রাখাইনে অভিযানের নামে বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, নির্বিচারে গুলি করে রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হয়। এছাড়া সেখানকার নারীদের ধর্ষণ ও গণধর্ষণেরও অভিযোগ উঠেছে সেনাদের ওপর। তবে মিয়ানমারের তরফ থেকে বরাবরই এসব অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। যদি জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করেছে।

রাখাইনে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গারা যেন বাড়ি-ঘর তৈরি করতে পারেন সেজন্যই চীনের তরফ থেকে তাদের অর্থ সহায়তার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য ফিরে গিয়ে বাড়ি-ঘর তৈরি করা অসম্ভব হবে কারণ বেশিরভাগ পরিবারেরই পুরুষ সদস্য নিহত হয়েছে বা নিখোঁজ রয়েছেন।