শাহেদ মিজান, সিবিএন:

উপজেলা নির্বাচনের ক্ষণ একেবারে ঘনিয়ে এসেছে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা হতে যাচ্ছে তফশীল। সংসদ নির্বাচনের পর থেকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় চলছে সরকারি দল আওয়াম লীগে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা অত্যন্ত সরব হয়ে উঠেছে। তবে মূল আলোচনা চলছে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে। কেননা দলীয় ব্যানারে নির্বাচন হওয়ায় দলীয় মনোনয়নই নির্বাচনের প্রার্থীদের বড় শক্তি! এই ধারায় কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের শক্তিমান প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এসেছেন খোরশেদ আলম কুতুবী। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অতীত ও বর্তমান কর্মকান্ডই তাঁকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। অন্যদিকে কুতুবদিয়ার মানুষ তাঁকেই প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছে। জনগণের চাওয়ারকে সামনে রেখে তিনি উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন।

জানা গেছে, খোরশেদ আলম কুতুবী কুতুবদিয়ার জনগণের কাছে একজন গ্রহণযোগ্য শক্তিমান নেতা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন শুরু করেছিলেন খোরশেদ আলম কুতুবী। জীবনের মধ্য গগণে এসেও তিনি এই আদর্শকে আঁকড়ে ধরে জীবন পার করছেন। এই আদর্শবলে তিনি জনগণের খুব কাছাকাছি যেতে সক্ষম হয়েছেন। তাই আওয়ামী লীগের তৃণমূল তাঁকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করছেন।

খোরশেদ আলম কুতুবী বর্তমানে কক্সাবজার জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমর্বায় বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। স্কুল জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন। সেই থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এই কারণে দলে তাঁর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এতে তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এসব গুণের কারণে কুতুবদিয়ার জনগণ তাকে ভোট দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার জন্য একতাবদ্ধভাবে বদ্ধপরিকর হয়েছেন।

খোরশেদ আলম কুতুবীর জীবন বৃত্তান্ত ঘেঁটে দেখা গেছে, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরপরই তাঁর অট্রোগ্রাফ নিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতে প্রবেশ করেন খোরশেদ আলম কুতুবী। পরে তিনি কুতুবদিয়া হাইস্কুল ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান এবং ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কুতুবদিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাশপাশি জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক এবং রাঙ্গুনিয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগেরও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সাল থেকে ৯২ সাল পর্যন্ত কুতুবদিয়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বর পালন করেন। একই সাথে জেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ জাহাঙ্গীর করিব নানক-মির্জা আজমের নেতৃত্বাধীন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমর্বায় বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব রয়েছেন। এসব দায়িত্ব পালন করতে তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দুঃসময়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। শিকার হয়েছেন নানা জুলুম-নির্যাতনের। তারপরও তিনি কোনো দিন পিছপা হননি।

সামাজিক পরিচয়ে তিনি পরপর দু’বার কক্সবাজার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি, কুতবদিয়া লবণ উৎপাদন সমিতির সভাপতি, কক্সবাজার উপকূলীয় বহুমূখী সমবায় সমিতির সভাপতি, দ্বীপতারা সংঘের সভাপতি, ইমাম আবু হানিফা একাডেমীর দাতা সদস্য কৈয়ারবিল আইডিয়াল হাইস্কুলের দাতা সদস্য এবং রেডক্রিসেন্ট কক্সবাজার জেলা ইউনিটের আজীবন সদস্য।

কুতুবদিয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, খোরশেদ আলম কুতুবী একজন আওয়ামী লীগ প্রেমিক পাগল মানুষ। তাঁর শরীরে বহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এই কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য পেয়েছেন। এসব কারণে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সবার চেয়ে যোগ্য খোরশেদ আলম কুতুবী। তাই তাঁকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি তৃণমূলের। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে তিনি বিএনপির কবল থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি ‘উদ্ধার’ করতে পারবেন নিশ্চিত।

জানতে চাইলে খোরশেদ আলম কুতুবী বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য রাজনীতি বুঝতে শেখার সময়েই আমি সরাসরি মাননীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। তাঁর এই সান্নিধ্য আমার জীবন রাঙিয়ে দিয়েছে। তাঁর সাহচর্য্য আমাকে রাজনীনিতে আজীবনের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। সেই থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শুরু হওয়া পথচলা এখনো সমানতালে অব্যাহত রয়েছে। বাকী জীবনটুকুও এভাবে পার করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মানুষের জন্যই সব সময় কাজ করেছি। তার জন্য কোনো জনপ্রতিনিধিত্বের পদ লাগেনি আমার। সে কারণে কুতুবদিয়ার মানুষ আমাকে অত্যন্ত সমাদর করে; তাদের অত্যন্ত কাছের এবং আপনজন মনে করে। এ কারণে তারাই আমাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার তাগাদা দিচ্ছে। তাই আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাচ্ছি। আমার রাজনৈতিক পটভূমি বিচারে আমিই মনোনয়ন পাওয়ার সর্বোচ্চ যোগ্য এবং দাবিদার মনে করছি। আমার বিশ^াস রয়েছে আমার শীর্ষ নেতারা আমার ত্যাগের মূল্যায়ন করে আমাকেই মনোনয়ন দেবেন।’