বিশেষ প্রতিনিধি:
রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ হওয়া চাল, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য অবৈধ পন্থায় চোরাই পথে পাচারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে শক্তিশালী চক্র। তারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক গুদাম তৈরী করেছেন। এসব গুদামে মজুদ করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ হওয়া চাল, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য। প্রতি রাতেই এসব পণ্য ট্রাকযোগে উখিয়া ও টেকনাফ থেকে পাচার করে দেয়া হয় চট্রগ্রামে। চক্রটি এতোই প্রভাবশালী যে, খোদ ক্যাম্প ইনচার্জ কর্তৃক জব্দ করা চাল-ডাল পর্যন্ত লুট করে নিয়েছে চক্রটি। উখিয়ার পালংখালীর বালুখালী এলাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আবছারের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে ওই শক্তিশালী চক্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৫ অক্টোবর উখিয়ার পালংখালীর বালুখালী পানবাজারে বিশ^খাদ্য সংস্থা ‘ডব্লিউএফপি’র খাদ্য বিতরণকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় একটি গুদামে রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত চোরাই চাল ও ডালের সন্ধান পান রোহিঙ্গা ক্যাম্প- ৯ এর ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম। ওইদিন দুপুরে পাচারকারিদের গুদাম থেকে দুটি ট্রাকে করে বিপুল পরিমান চাল ও ডালের বস্তা ক্যাম্পে নিয়ে যান তিনি। পরে সেখানে হাজির হন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আবছার।

ঘটনাস্থলে নুরুল আবছার তদবির শুরু করলে গুদামে মজুদ থাকা ‘ডব্লিউএফপি’র লোগো সম্বলিত আরও দুই শতাধিক বস্তা চাল এবং চার শতাধিক বস্তা ডাল জব্দ করে নুরুল আবছারের জিম্মায় ওই গুদামেই রেখে আসেন ক্যাম্প ইনচার্জ। কিন্তু খোদ জিম্মাদার নুরুল আবছারের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে গোপনে দেড়শতাধিক বস্তা চাল ও জব্দ করা সব ডাল লুট করে নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় খোদ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে তোলপাড় চলছে। পরে ২৮ অক্টোবর রবিবার দুপুরে টেকনাফ থেকে আসার পথে খবর পেয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান ক্যাম্পে যান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুরুল আবছার বলেন, ‘আমি এসব কাজে জড়িত নই, জব্দকৃত পণ্য কে নিয়েছে তা আমিও জানিনা।’ যোগাযোগ করা হলে অভিযান পরিচালনাকারি রোহিঙ্গা ক্যাম্প- ৯ এর ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত তিনি বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানান।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান বলেন, ‘টেকনাফ থেকে আসার পথে আমি ক্যাম্প পরিদর্শনে যাই, সেখানে বেশ কিছু পণ্য দেখতে পাই। ওইসব পণ্যের একটি নোট নিয়ে চলে আসি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেখানে যাওয়ার পর ক্যাম্প ইনচার্জকে পাইনি। তবে গত ২৫ অক্টোবর বেশ কিছু পণ্য জব্দ করা হয়েছিল বলে শুনেছি।’