ছৈয়দুল আমিন চৌধুরী, টেকনাফ:
টেকনাফে নুরানী মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্র অপহরণকারীর কবল থেকে কৌশলে হাত বাঁধা অবস্থায় ফিরে এসেছে। অপহৃত ছাত্র হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের পুত্র ও নয়াপাড়া নুরানী মাদরাসার তৃতীয় শেণীর ছাত্র আজিজুর রহমান (১২)।
এব্যাপারে ২৯ অক্টোবর সোমবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে অপহৃতের মাতা ফাতেমা খাতুন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর সকাল ১০ টার দিকে মাদরাসায় নাস্তার বিরতি চলাকালীন সময়ে আজিজুর রহমান রাস্তায় বের হলে উৎপেতে থাকা অপহরণ চক্রের সদস্য মুখে চাপদাড়ী বিশিষ্ট অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ঘরের বাজারের থলে হাতে ধরিয়ে দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে। তার সাথে ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিও পিছু নেয়। একপর্যায়ে নয়াপাড়ার শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ের দিকে আজিজকে নিয়ে গিয়ে হঠাৎ মুখ চেপে ধরে গভীর পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে একটি গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে মা ফাতেমা খাতুনকে ফোন দিতে বলে। অপহৃত ছাত্র আজিজ মায়ের মোবাইল নাম্বার মুখস্থ বলতে না পারায় রাতভর বেঁধে রেখে চড় থাপ্পড় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এমনকি জবাই করারও হুমকী দেয়।
এদিকে ছেলেকে না পেয়ে দিনেও রাতে আত্মীয়-স্বজনদের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে ২৮ অক্টোবর সকাল ১০ টার দিকে মা ফাতেমা খাতুনসহ আত্মীয়রা হাত বাঁধা অবস্থায় আজিজকে নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাজারের পাশে দেখতে পায়।
মা ফাতেমা পুত্র আজিজের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, চাপদাড়িওয়ালা ব্যক্তি ছাড়াও আরো ২ জন ব্যক্তি পাহাড়ে ছিল। সকালে তারা একসাথে নাস্তা করতে গেলে সে কোন রকমে কৌশলে অপহৃতের কবল থেকে পিছনে হাত বাঁধা অবস্থায় পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
অপরদিকে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন ধারনা করছেন, পরিবারের প্রতিপক্ষের লোকজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাথে হাত করে আজিজকে অপহরন করেছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে আজিজের পরিবারসহ স্থানীয়রা অপহরণ আতংকে ভুগছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
নয়াপাড়া মাদরাসা হোছাইনীয়া রহমানিয়া নুরানী বিভাগের শিক্ষক মাঃ শহিদুল ইসলমাল জানান, নাস্তা বিরতির পর ছাত্র আজিজকে না পেয়ে তার ছোট বোনের মাধ্যমে বাড়ীতে খবর দেওয়া হয়। পরে জানতে পারি কে বা কারা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার এসআই জয়নাল এসংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।