সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার শ্রমিক ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সোমবারও (২৯ অক্টোবর) কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওর মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
রোববার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে আট দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
প্রথম দিনের মতো সোমবার সকালেও হাজার হাজার মানুষ হেঁটে চলছেন। বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন অনেকে।
যানবাহনের অপেক্ষায় বাস ষ্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে শত শত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এদিকে বাধ্য হয়েই সবাই পায়ে হেটে, রিকশা, অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেলে চলাচলের চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে যানবাহন সংকটের এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রিকশা, সিএনজি চালকরা ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ আবার ভ্যানে চড়েই গন্তব্যে ছুটছেন। কোথাও কোথাও ভাড়া নিয়ে রিকশা চালকদের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা গেছে যাত্রীদের।
সরেজমিন দেখা গেছে, ধর্মঘটের কারণে ঈদগাঁও বাস ষ্টেশন, ফকিরা বাজার, নতুন অফিস, খুটাখালী ষ্টেশন থেকে কোন ধরনের গাড়ি ছেড়ে যায়নি। সড়কে সিএনজি রিক্সা ছাড়া অন্য গাড়ি চলাচল করেনি। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করেছে।
এদিকে গত
রোববার বাস ষ্টেশনে শ্রমিক নেতাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। এদিন মোটরসাইকেলের চালক, ব্যক্তিগত গাড়ির চালক কিংবা আরোহীদের হেনস্থা করে ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নামা শ্রমিকরা।
অপরদিকে শ্রমিকরা যে আট দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন, সেই দাবি এখনই পূরণ করা সম্ভব নয় বলে গতকাল রোববার জানিয়ে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ‘শ্রমিক নেতারা আইনটি ভালোভাবে না পড়েই আন্দোলনে নেমেছেন।’
একই দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আইনটি সংশোধন করা বা শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান।
ধর্মঘটকারী শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সড়ক দুর্ঘটনার সব অপরাধ জামিনযোগ্য করা, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল করা, সড়ক দুর্ঘটনায় গঠিত যেকোনো তদন্ত কমিটিতে ফেডারেশনের প্রতিনিধি রাখা, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি নির্ধারণ এবং সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর শ্রমিক ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নেয়, সড়ক পরিবহন আইন সংস্কারসহ আট দফা দাবি ২৭ অক্টোবরের মধ্যে পূরণ না হলে ২৮ অক্টোবর থেকে দুদিনের কর্মবিরতিতে যাবেন শ্রমিকরা।