শাহনেওয়াজ জিল্লু:
কক্সবাজার শহরের ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে গাড়িটি রেখে গত দুদিন ধরে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেছে সিএনজি চালক। গত ২৫ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিএনজি চালক নুরুল হাকিম (৩০) নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে তার স্বজনেরা।

নিখোঁজ সিএনজি চালক নুরুল হাকিম একেবারেই দিনমজুর হওয়া সত্ত্বেও কেনো একমাত্র উপার্জনসত্ব সিএনজিটি ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে রেখে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে তা নিয়ে উঠে এসেছে নানাবিধ প্রশ্ন এবং সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। সে কক্সবাজার শহরের ৬নং ওয়ার্ডের সাহিত্যিকাপল্লীর বাসিন্দা।

নিখোঁজের স্ত্রী রোজিনা আক্তার জানিয়েছেন, স্বামীর সাথে তার কোনো মনমালিন্যতা ছিলো না এবং সাংসারিক কোনো ঝামেলাও ছিলো না। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে উধাও হয়ে যাওয়ায় তিনি খুবই শঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার দিনও রাত ৮টার কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত তার স্বামী নুরুল হাকিমের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়েছিলো বলে দাবী করেন রোজিনা। এসময় নুরুল হাকিম শীঘ্রই বাড়িতে ফিরছেন বলেও কথা দেন স্ত্রী রোজিনাকে। কিন্তু ক্রমান্বয়ে রাত বাড়ার পরও স্বামী ফিরে না আসায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার দেখা দিলে রোজিনা তার শশুর (নিখোঁজের পিতা) রশিদ আহমদকে বিষয়টি অবগত করেন। এরপরে পরিবারের সবাই খোঁজাখুজি করেও অদ্যবদি নুরুল হাকিমের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজের পিতা রশিদ আহমদ জানান, একই এলাকার আব্দুল হকের পুত্র মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন একটি সিএনজি গাড়ি ভাড়া নিয়ে চালাতো তার ছেলে নুরুল হাকিম। কিন্তু গত ২দিন ধরে তার ছেলে আকস্মিক নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তারা খুবই মর্মাহত হয়ে পড়েছে। এর উপর আবার তার অধীনে চালিতে গাড়িটি কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে পার্কিং করা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। এব্যাপারে তিনি থানা পুলিশের সহায়তা চাইলে তাকে নিখোঁজের পর থেকে দুদিন মতো অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রশিদ আহমদ।

এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে পার্কিং করে পড়ে থাকা গাড়ি ও ভাড়াটিয়া চালক নুরুল হাকিমের নিখোঁজের ব্যাপারে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন প্রথমেই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারের তৎপরতার কারণে মহিউদ্দিন প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে পাকিং করা গাড়িটি তার। কিন্তু গাড়িটির চালক কোথায় আছে, কেনো উধাও, কী কারণে গাড়িটি ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ের চত্ত্বরে পার্কিং করে রাখা হয়েছে এব্যাপারে তিনি কিছুই জানাতে চাননি।

কার্যালয় চত্ত্বরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সিএনজির বিষয়ে জানতে চাইলে ট্যুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তার উর্ধ্বত্বন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানিয়েছেন, সিএনজিটি গত ২দিন ধরে সেখানে পড়ে আছে। কিন্তু কে বা কারা কী কারণে সেখানে সিএনজিটি পার্ক করে রেখেছে সে ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও গাড়িটি ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে পড়ে আছে বলে জানা গেছে।

এঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি নথিভূক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তবে এবিষয়ে অধিকতর জানতে কক্সবাজার সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মাইনুদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।