সিবিএন ডেস্ক:
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। যে যাই বলুক, রাজনৈতিক কারণে এই মহান প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করা মোটেও উচিত নয়।
শনিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে ভাঙচুর, লুটপাট, মারধরসহ নারী শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এবং আহত শিক্ষার্থী লিমনকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করে আমি খুবই মর্মাহত। এখানে মেয়েদের যে আকুতি শুনলাম, স্বাধীন দেশে মেয়েরা এমন অসহায় হবে এটা ভাবা যায় না। এখানে যদি কোনো বিরোধ থেকে থাকে, সেটি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতো। যারা এ গাছগুলো কেটেছে তাদের কমপক্ষে ১২ বছরের জেল হওয়া উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান এক দিনে গড়ে ওঠেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু প্রথম এখানকার জমি দিয়েছেন। এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তার মেয়ে যদি এর সম্মান রাখতে না পারেন, সেটা মেয়ের কাজ, আমাদের না।’
এর আগে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে গিয়ে আহত লিমনসহ অন্যদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এসময় তার সাথে ডা. নাজিম উদ্দিনসহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাছ চুরির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর বিশালায়তনের পিএইচএ ভবনটি শুক্রবার নিজেদের দখলে নিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় কটন টেক্সটাইল ক্রাফটস লিমিটেড।
বহুতল পিএইচএ ভবনটিতে রয়েছে বিশাল মিলনায়তন ও ডরমেটরি। যেখানে দেশি ও আন্তর্জাতিক বহু সম্মেলন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ঢুকে নিজেদের জায়গা দাবি করে গাছ কেটে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমানা ঘিরে ফেলেছে দখলকারীরা। এসময় বাধা দিতে গিয়ে কয়েকজন ছাত্র আহত হন।
এসময় পিএইচএ ভবনে ভাঙচুর, মূল্যবান মালামাল লুট, হোস্টেলে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের মারধর ও গাছপালা কেটে ফেলে সন্ত্রাসীরা। বাধা দিতে গেলে লিমনসহ তাদের বেশ কয়েক জন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করতে গেলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।
এর আগে ২৪ অক্টোবর দিবাগত গভীর রাতে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকার বাসিন্দা ও মির্জানগর এলাকার কটন টেক্সটাইল ক্রাফটস লিমিটেড কারখানার চেয়ারম্যান কাজী মহিবুর রব বাদী হয়ে ডা. জাফরুল্লাহকে প্রধান আসামি করে এবং দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে আরেক মামলার বাদী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন পিএইচএ ভবনের প্রবেশ পথের ১৩.২৫ শতাংশ জায়গা নিজেদের দাবি করে সেটিও তিনি দখলে নিয়েছেন।
তার লোকজন পিএইচএ ভবনের প্রবেশের রাস্তা কেটে মূল ফটক ও নিরাপত্তা পোস্টের ভবনটিও ভেঙে ফেলেছে।