শাহীন মাহমুদ রাসেল

কক্সবাজারসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে মিলছে বিভিন্ন ধরনের আচার, ফুচকা, চটপটি, নুডুলস, ঝালমুড়ি, রঙ-বেরঙের আইসক্রিম, চানাচুর, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া খাবার।

এসব খোলা খাবার তৈরি হচ্ছে নোংরা পরিবেশে। সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, এসব খোলা খাবার শিশুদের ক্ষুধা মন্দা, জন্ডিস, হেপাটাইটিস, এন্টিফিভার, পেটের পীড়া, পেটের প্রদাহসহ মারাত্মক সব রোগের জন্য দায়ী। ফলে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

রামুসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতে বিক্রি হওয়া খাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। এসব খাবার সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়। নগরে কাজের প্রয়োজনে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষ এসব খাবারের ওপর নির্ভরশীল। যদিও রাস্তার খাবার কিংবা সাধারণ রেস্তোরাঁর খাবার কতটা স্বাস্থ্যকর; এমন প্রশ্ন রয়েই যায়। অন্যদিকে অনেকেই আবার শখের বশেও প্রতিনিয়ত খাচ্ছেন এসব খাবার। রাস্তার পাশে চটপটি ও ফুচকার জনপ্রিয়তা তারই প্রমাণ দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিপজ্জনক উপাদান দিয়ে তৈরি হচ্ছে ওইসব মুখরোচক খাবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলে প্রবেশের সময়, টিফিন পিরিয়ডে কিংবা ছুটির শেষে শিশুরা এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার কিনে খাচ্ছে। আবার মা-বাবার কাছে বায়না ধরায় অভিভাবকেরাই এসব ক্ষতিকর খাদ্য শিশুদের কিনে দিচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চারা মা-বাবাকে লুকিয়েও সাময়িক মজাদার এসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, যা শিশু সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কক্সবাজার বায়তুশরফ জব্বারিয়া একাডেমির সামনে শিশু সন্তান নওরিনকে খোলা দোকানের আচার কিনে দিচ্ছিলেন মা রওশন আক্তার।

আপনার সন্তান এসব কী খাচ্ছে? বাচ্চাকে কেন এই অস্বাস্থ্যকর খাবার কিনে দিচ্ছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেও বুঝি- এটা শিশুর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ক্ষতিকর খাবার। তারপরও সন্তানের বায়নায় কিনে দিতে হচ্ছে। আসলে আমাদের মতো অভিভাবকদেরই আগে সচেতন হবে হবে। খোলা পরিবেশে, ধুলা-ময়লায় অস্বাস্থ্যকর আচার কেন শিশুদের কাছে বিক্রি করছেন- এমন প্রশ্ন করলে আচার বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, সবসময় এই আচার ঢেকে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু ধুলা-ময়লা পড়ে একথা ঠিক, কারণ পলিথিন দিয়ে সবসময় ঢেকে রাখলে আচার নষ্ট হয়ে যায়।

কবে এই আচার বানানো তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে বড়ই, আমড়া, জলপাই, চালতার আচার পাওয়া যায়। আচার বেশ কিছুদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। আমার এগুলো দুই দিন আগে বানানো।এ বিষয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এন আলম বলেন, রাস্তার পাশে বিক্রি করা খোলা খাবার খেলে শিশুদের ক্ষুধা মন্দা, জন্ডিস, হেপাটাইটিস, পেটের পীড়া, পেটের প্রদাহ হতে পারে। এছাড়া এসব আইসক্রিম, শরবতে পানিবাহিত যে কোনো ধরনের মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে।

তিনি বলেন, এসব রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে অভিভাবকদের এবং ব্যক্তিগতভাবে সবাই সচেতন হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।