হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়ায় দশ টাকা কেজির চাল বিক্রিতে ছয় ধরনের অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ এনে ডিলার শামশুল আরেফিন ওরফে আরিফের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে রামুর ইউএনও লুৎফুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গর্জনিয়া ইউপির এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মাস্টাররোলে নাম থাকলেও অনেক ব্যক্তিকে ডিলার আরিফ কার্ড দেয়নি। আবার কার্ড দিলেও লোকজনকে চাল বিতরণ করছেন না। এসব বিষয়গুলো আমি লিখিতভাবে ইউএনওকে অভিযোগ দিয়েছি।’
একই ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল জব্বার বলেন, ‘কার্ড থাকলেও লোকজন চাল পাচ্ছে না। চাল বিতরণের স্থান থোয়াংগেরকাটা হলেও ডিলার আরিফ নিজের ইচ্ছেমত জাউচপাড়া থেকে বিতরণ করছেন। যাদেরকে চাল বিতরণ করছেন- তাদেরকে ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে।’ ভুক্তভোগী ফরিদুল আলম, মাহমুদা খাতুন ও খালেদা বেগম জানান, কার্ডধারী হয়েও তাঁরা চাল পাচ্ছেন না। ডিলারের কাছে গেলে তাঁদের কার্ডে ভুল আছে বলে তাড়িয়ে দেন। অভিযোগের বিষয়ে ডিলার শামশুল আরেফিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।
গর্জনিয়ায় ১০ টাকার চাল বিক্রিতে ছয় ধরনের অনিয়ম হলো: ১. কোথাও গরিবের বদলে ধনীরা চাল পাচ্ছেন। ২. ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে। ৩. ৩০ কেজি চাল দেওয়া টিপসই নিয়ে ২০ থেকে ২৫ কেজি দেওয়া হচ্ছে। ৪। অনেক হতদরিদ্রের নাম তালিকায় আসেনি। ৫. কার্ডধারী ব্যক্তিদের চাল না দিয়ে খোলাবাজারে বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। ৬. ব্যানার টানিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে চাল বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো.আয়ুব আলী বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় চেয়ারম্যান এলাকার বাইরে আছেন। উনি আসলেই তদন্ত শুরু হবে। গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, দশ টাকার চাল বিক্রি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগটি শুনেছি। অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে কোন ছাড় নেই।
উল্লেখ্য-গর্জনিয়া ইউনিয়নে ডিলার শামশুল আরেফিন ওরফে আরিফের মাধ্যমে ৪৬০জন এবং ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হাফেজ আহমদের মাধ্যমে ৪৫৯জনকে দশ টাকা দামের চাল বিক্রি করছে সরকার।