নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
স্পর্শকাতর ও গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের (কক্স-২ ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়) সচিব খুরশীদুল জন্নাত ও তার অপকর্মের সহযোগিদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের একটি তদন্ত টীম সরেজমিন তদন্ত কার্য সম্মন্ন করেছেন। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম এর উক্ত টিম তদন্তে আসার সংবাদে তড়িঘড়ি করে গোপনে (১৭ অক্টোবর বুধবার) রাতের আঁধারে বিপুল পরিমান খাতা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং তদন্তের সময় মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়ার জন্য বাধ্য করেছে অনেককেই। অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বিষয়টির বাস্তব ও দৃষ্টান্তমূলক সমাধানের দিকে চেয়ে রয়েছে এলাকাবাসী। না হয় এ জাতীয় ঘটনা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ ও জাতি।
জানা যায়, কক্স-২ কেন্দ্রের (ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়) সচিব ও প্রধান শিক্ষক এবং ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ জসীম উদ্দিন পরস্পর যোগসাজসে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম এর জেএসসি/এসএসসি পরীক্ষার মূল ও অতিরিক্ত উত্তরপত্রের প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠা ছিঁড়ে অষ্টম শ্রেণির মডেল টেস্ট নেয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্পর্শকাতর এ কাজের তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও স্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সচিব নুরুল ইসলাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবরে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ সহ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে ১৮ অক্টোবর শিক্ষা বোর্ডের উপ-সচিব ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ঘটনাস্থলে এসে সরেজমিন তদন্ত করেন। এদিকে তদন্ত টীম আসার সংবাদ পেয়ে আগেভাগে স্কুল কর্তৃপক্ষ অপরাধীদের বাঁচাতে ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ইতোমধ্যে বোর্ড পরীক্ষার খাতায় অনুষ্টিত হওয়া পরীক্ষার উত্তর পত্রগুলো শিক্ষকদের মাধ্যমে অফিসে আনান এবং অনুষ্ঠেয় পরীক্ষা সমূহের জন্য প্রস্তুতকৃত খাতাগুলি কর্মচারীদের সহায়তায় স্কুলের পেছনের গর্তে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পরদিন ১৮ অক্টোবর সকালে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে গোপন বৈঠকে বসেন সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। এ সময় সভাপতি উপস্থিত শিক্ষকদেরকে শিখিয়ে দেন যে, ১২ অক্টোবর শুধুমাত্র গণিতের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৫ ও ১৬ অক্টোবর ২টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও তা চেপে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। অন্যদিেেক ছাত্রছাত্রীদের কাছ হতে উক্ত মডেল টেস্টের জন্য বিনা রশিদে জনপ্রতি ২৫০ টাকা হারে আদায় করা করা এবং পরীক্ষা নেয়ার পরও কেন তাদের খাতাগুলোও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাজী নুরুল আলম, মো: কালু সহ অনেক অভিভাবক। শিক্ষার্থীদের সাথে এহেন প্রতারণার জবাব দেবে কে? সংগঠিত অপরাধের সাথে জড়িতদের যথাযথ বিচার হবে কি এমন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার সচেতন মহল। এদিকে জঘন্য এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে কেন্দ্র সচিব বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঈদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম বলেন, এটা একটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়। এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িতদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুস সালাম জানান, ঈদগাহ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের ব্যাপারে আমরা দীর্ঘদিন শুনে আসছি। এসবের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। মিডল কক্স ইউনাইটেড সভাপতি, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিক শক্তি’র মুখপাত্র কাফি আনোয়ার জানান, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক চাঞ্চল্যকর ও অপরাধমূলক তথ্য সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ ব্যাপারে বিহিত না নিলে আমরা সচেতন এলাকাবাসীকে নিয়ে তীব্র আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কেন্দ্র সচিব খুরশিদুল জন্নাত ও সহ-প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনকে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্বব হয়নি।