বিশেষ প্রতিবেদক:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের আদর্শগ্রাম এখন দিন দিন পরিচিত হয়ে উঠছে। কারণ পর্যটন সম্ভাবনাময় নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রথম ড্রাগন চাষ হচ্ছে এখানে। এই চাষ সম্পর্কে জানার আগ্রহ এখন সর্বশ্রেণির মানুষের। এলাকার তরুণ ইউসুফ আজাদ মুন্না নিজ উদ্যোগে শুরু করেন ড্রাগন চাষ। তাকে যৌথভাবে সহায়তা করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টার ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।

বর্তমানে তার দেখাদেখি উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা পলক বড়ুয়াও ড্রাগন চাষে এগিয়ে এসেছেন। গোলাপি রঙের ড্রাগন ফল ক্যাকটাসজাতীয় লতানো গাছে ধরে। খাঁজ কাটা এই ফলের অদ্ভুত চেহারার জন্যই এমন নামকরণ। বিদেশি এই ফল প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণসমৃদ্ধ।

সরেজমিনে আদর্শগ্রামে গিয়ে দেখা গেছে- ৪০ শতক জায়গাজুড়ে ড্রাগন বাগান। পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে ঝুলছে কাঁচা-আধাপাকা ফল।

ড্রাগন বাগানের মালিক ইউসুফ আজাদ মুন্না জানান, ২০১৬ সালের জুনে নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে বিনামূল্যে পাওয়া ১৬০টি ড্রাগন ফলের চারা লাগান তারা। পরবর্তীতে আরও ৩০টি চারা যুক্ত করা হয়। চলতি বছর সবকটি গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছে পাঁচ থেকে ছয়টি ফল এসেছে। বেশ কিছু ফল বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকাও পাওয়া গেছে। বাগান করতে খরচ পড়েছে ৮০ হাজার টাকা। আগামী দুই সপ্তাহ পর বাকি ফল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করা যাচ্ছে। ফল যথাযথভাবে বিক্রি করা হলে অধিক লাভবান হওয়া যাবে।

তিনি জানান, একটি গাছ পরিপক্ব হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। পরিপক্ব গাছে ২৫ থেকে ৩০টি ড্রাগন ফল ধরে। প্রতি কেজি ফলের বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি ড্রাগন ফলের চাষ আরও বাড়াবেন বলে জানান।

উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলাম রাজিব বলেন, ‘ড্রাগন বিদেশি ফল। ড্রাগন ফলের গাছ চিরসবুজ ক্যাকটাস। ফুল লম্বাটে সাদা এবং অনেকটা নাইট কুইটের মতো দেখতে।’

নাইক্ষ্যংছড়ি হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান কর্মকর্তা দুলাল দাশ বলেন, ‘নাইক্ষ্যংছড়িতে এই চাষের সাফল্য আসা চাষিদের জন্য সুখবর। এখানে বাণিজ্যিকভাবেও এই ফল চাষ করা যেতে পারে। আমরা চাষীদেরকে মুন্নার মতো সার্বিক সহযোগিতা করবো।’

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রনজন চৌধুরী বলেন, ‘ড্রাগন ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণযুক্ত এই ফল ডাইবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া এফল রক্তে কোলেস্টেরেলের মাত্রা কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।’