মোঃ ফারুক, পেকুয়া:
পেকুয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীর অনুসারীরা কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে নিজস্ব জমি ও নতুন ভবনে দুর্গা পূজার উৎসব পালন করছে। তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টা ও সরকারী সহায়তায় প্রথম ওই পূর্ণাঙ্গ ভবনে দুর্গা পূজা পালন করছে তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বীর পেকুয়ার বাসিন্দারা বসবাসের সেই যোগ থেকে অদ্যবধি (নিজস্ব জমির উপর ভবন নির্মানের আগে) বাড়ির ওঠানে ওঠানে দুর্গা পূজাসহ সমস্ত ধর্মীয় উৎসব পালন করত। তাতে প্রার্থনাকারীরা অনেক সমস্যা প্রতিকূলতার সম্মোখীন হত। এমনকি বৃষ্টির দিনে ধর্মীয় উৎসব পালন বন্ধ রাখা হত। দীর্ঘ বছর ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এভাবে উৎসব পালনকালে ২০১৭ সালে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে স্থায়ী মন্দির নির্মাণের জন্য। যেমন কথা তেমন কাজ। ২০১৮ সালে এসে দানকৃত জমি ও নতুন ভবনে দূর্গা উৎসব পালন করছে তারা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনায় নতুন ভবনে দূর্গা পূজার উৎসব পালন করতে গিয়ে সহযোগিতাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রার্থনাকারীরা।
এদিকে মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ কাজ শুরু ও শেষ করতে সনাতনী ভক্তবৃন্দরা ২০১৭সালে সার্বজনীন দুর্গা মন্দির উন্নয়ন কমিটি গঠন করে। কমিটিতে দীপক বিশ্বাস সভাপতি, গৌতম বিশ্বাস সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াশিংটন বিশ্বাসকে অর্থ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। তাদের নেতৃত্বে সততার সহিত নতুন ভবনের কাজ শেষ করে।
পেকুয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির উন্নয়ন কমিটির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিশিষ্ট দানবীর স্বর্গীয় ডাক্তার যতীন্দ্র লাল বিশ্বাস সনাতন ধর্মাবলম্বীর অনুসারীদের সমস্যার কথা চিন্তা করে বিশ্বাস পাড়ায় মন্দির নির্মাণের জন্য শর্তবিহীন জমি দান করেন। তার দানকৃত জমির উপর ২০১৮ সালের ৮জানুয়ারী নতুন ভবন নির্মানের কাজে হাত দেন পেকুয়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির উন্নয়ন কমিটি। তাতে সর্বোচ্ছ আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন প্রফুল্ল রঞ্জন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী প্রভা রানী বিশ্বাস। আরো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন জমিদাতার সন্তান চট্টগ্রাম মা শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগি অধ্যাপক ডাঃ সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস। সনাতনী ভক্তবৃন্দের সমর্থনে ও ছোট ছোট আর্থিক অনুদানে ২০সেপ্টেম্বর ২০১৮সালে মন্দির নির্মাণের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করে। এছাড়াও জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম আর্থিক অনুদান দিয়ে মন্দিরের রাস্তা উন্নয়ন ও এমপির পক্ষ থেকে শশ্মানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে সহযোগিতা করা হয়।
সার্বজনীন দূর্গা মন্দির উন্নয়ন কমিটির সভাপতি দীপক বিশ্বাস বলেন, আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একটি স্থায়ী মন্দিরের জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছি। স্বর্গীয় ডা: যতীন্দ্র লাল বিশ্বাস মহোদয় মন্দিরের জন্য জমি দান করায় আমরা আজীবন কৃতজ্ঞ। এছাড়াও সবার সহযোগিতায় আমরা পূর্নাঙ্গ ভবনে মন্দিরের কাজ শেষ করে ধর্মীয় সব অনুষ্টান পালন করতে পারব। বর্তমানে উৎসবমুখর পরিবেশে সবার অংশগ্রহনে দূর্গা পূজার আয়োজন চলছে নতুন ভবনে। এ ক্ষেত্রে আমরা সরকারী সহায়তাও পর্যাপ্ত পেয়েছি। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করছেন। আমরা তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।
পেকুয়া উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি বাবু সুমন বিশ্বাস বলেন, জমিদানকারী ও আর্থিক অনুদানকারীদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দীর্ঘদিনের অভাব আমরা পূরুণ করতে পারছি। ধর্মীয় উৎসব পালন করতে আমাদের আর সমস্যা হবেনা। কিছু অবকাঠামো সমস্যা অবশ্যই আছে। তা সকলের সহযোগিতায় পুরুণ করা হবে।