ধরুন, আপনি দীর্ঘ বিমান বা বাসযাত্রা করছেন। সংকীর্ণ আসনের মাঝখানে পা দুটি জড়সড় করে বসতে হয়েছে। এভাবে কেটেছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। যাত্রা শেষে দেখলেন পা ফুলে গেছে। নীলচে কালো হয়ে গেছে বা তীব্র ব্যথা শুরু হয়ে গেছে। এমন সমস্যার নাম ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ডিভিটি। অনেকে একে ইকোনমি ক্লাস সিনড্রোমও বলে। কেননা, বিমানের ইকোনমি ক্লাসে পা স্থির করে বসতে হয় বলেই এটা বেশি ঘটে। দীর্ঘ সময় জড়তার কারণে পায়ের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে, রক্তের দলা বা ক্লট তৈরি হয়, যা শিরাকে ব্লক করে দেয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বা ওষুধ দিয়ে এই দলা ছাড়ানো না গেলে চিরতরে পা হারানোর শঙ্কা থাকে।

এই রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা হতে পারে হৃৎপিণ্ডে বা মস্তিষ্কে বা ঘাড়ের রক্তনালিতে। সবারই যে হয়, তা নয়। কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি আছেন। যেমন হার্টের ভাল্‌ভে ত্রুটি আছে বা অস্ত্রোপচার করা, হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত, হৃদ্‌যন্ত্রের দেয়ালে সমস্যা ইত্যাদি থাকলে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আবার অতিরিক্ত ওজন, দীর্ঘ সময় ধরে শয্যাশায়ী থাকা, কোমরে বা পায়ে ফ্রাকচার বা অস্ত্রোপচার করা থাকলে পায়ে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। তবে যে কারণেই হোক, এসব ক্ষেত্রে দ্রুত ভাসকুলার সার্জনের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা না করা হলে জীবন বিপন্ন হতে পারে।

 আপনি এই ঝুঁকিগুলো কমাতে পারেন

*   দীর্ঘ বিমানযাত্রায় বারবার পায়ের ব্যায়াম করুন, কিছুক্ষণ পরপর উঠে হাঁটাহাঁটি করুন।

*   প্রচুর পানি পান করবেন। পানিশূন্যতা ডিভিটির ঝুঁকি বাড়াবে।

*   ফ্রাকচার বা অন্য কোনো কারণে দীর্ঘ সময় শয্যাশায়ী হয়ে থাকলে, নিয়মিত পায়ের আঙুল ও পাতা নেড়ে ব্যায়াম করতে হবে। নয়তো রক্ত চলাচল ব্যাহত হতে পারে।

*   অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন।

*   দীর্ঘ যাত্রায় পা নীল ও ফুলে গেলে বা ব্যথা শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।