মোহাম্মদ হাশেম

সম্প্রতি বাংলাদেশের আনাছে কানাছে ছেয়ে গেছে মাদক, হিরোইন, গাঁজা ও ইয়াবা। যুব ও ছাত্র সমাজ দিন দিন অবণতির দিকে যাওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে উপরোক্ত নেশাদ্রব্য পান করায়। এ মাদকের ছোবলে যেই পড়–ক না কেন, সে আর কখনও সহজে ফিরে আসতে পারে না। পারেনা ছাড়তে। মাদক এমন এক নেশা, যে নেশা পান করলেই নিজের বাবা-মা এমনকি ভাইকেও চিনতে পারে না। তারা নিজের ঘরে গচ্ছিত সম্বলটুকুও বিক্রি করতে দিধাবোধ করে না। আবার এমন কেউ আছে, যারা নেশা করতে না পারলেই চুরি, সন্ত্রাসী, রাহাজানি করে ঘুরে বেড়ায়। ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয় অসহায়, খেটে খাওয়া মানুষকে। একজন অসহায়, খেটে খাওয়া মানুষ তার ছেলে-মেয়েদের জন্য কিছু টাকা আয় করে বাড়িতে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় বাড়িতে। অন্যথায় সে ছুরিকাঘাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়, কিভাবে ভর্তি হবে নেই তার অর্থ সম্বল তাকে চিকিৎসা করার মতো। তবুও চিকিৎসা যে করতে হবে। কি আর করার। বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিয়ে নিতে হয় সাপ্তাহিক কিস্তি থেকে লোন। অন্যথায় সে হাসপাতালের শয্যায় পরিত্যাক্ত হয়ে থাকে। অতিস্বত্বর এ মাদকের ছোবল থেকে আমাদের যুব ও ছাত্র সমাজকে রক্ষা করতে না পারলে, এমন কালো অমাবশ্যার রাত আসবে, কখনও দিনের আলোয় আলোকিত হবে না সমাজ। সমাজকে রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাদক চোরাচালানকারী ও ব্যবসায়ীদেরকে দীক্ষার জানাই, তারা যেন এ অবৈধ ব্যবসা করতে পারে। এ অবৈধ ব্যবসা বন্ধ না করলেই আমাদের যুব ও ছাত্র সমাজকে মাদক ব্যবহার থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আজকের সমাজে দেখা যায়, ছেলে পিতাকে সম্মান করে না, পিতা তার ছেলেকে স্নেহের চোখে দেখে না। কারণ হচ্ছে মাদক। মাতা-পিতার স্বপ্ন থাকে তাদের ছেলেকে পড়ালেখার করিয়ে দেশ গড়ার কারিগর বানাতে। কিন্তু সে স্বপ্নকে দুলিসাৎ করে দিচ্ছে মাদক। আজকের সমাজে শুধু যুবক নই, মাদকের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না যুবতীরাও। তারা মাদক পান করে বাড়িতে গেলে তাদের পিতা-মাতারা কৈফিয়াত চাইলে, হয়তো ছেলে/মেয়েদের কাছ থেকে লাঞ্চিত হতে হয় বাবা-মাকে, এক পর্যায়ে শিকার হতে হয় খুনের মতো জঘন্যতম কর্মকান্ডে। আজকে সারা দেশে মাদক, হিরোইন, গাঁজা এবং ইয়াবা নিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়লে, তারা কিভাবে আইনের পাঁকপোকড় দিয়ে আসে? তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে কে? এ অবৈধ ব্যবসার নেতৃত্বদানকারীদের গ্রেফতার পূর্বক থানায় সোপর্দ করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। যাদের কারণে আমাদের যুব ও ছাত্র সমাজকে রক্ষা করা যাচ্ছে না, তাদেরকে গ্রেফতার পূর্বক কঠোর শাস্তি প্রদান করা হোক। না হয় সম্ভব হবে না অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা। আমার প্রিয় যুব ও ছাত্র সমাজ আপনাদের উদ্দেশ্যে, আপনারা হচ্ছেন দেশ গড়ার কারিগর। আপনারা যদি এ অবৈধ মাদকের কাছ নিজে সরিয়ে আনতে না পারেন, তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ কি একবার ভেবে দেখেছেন। আমি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমার প্রশ্ন: মাদকের হাত থেকে যুব ও ছাত্র সমা রক্ষা পাবে কি? সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে এ অবৈধ ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ রক্ষা পাচ্ছে না এ অবৈধ ব্যবসার হাত থেকে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যদি এব্যাপারে সজাগ থাকে, তাহলে সমাজে মাদক ব্যবসায়ীরা কখনও পার পাবে না। রক্ষা করুন আমাদের দেশ ও জাতিকে। বিশেষ করে, যুব ও ছাত্র সমাজকে আহ্বান জানাচ্ছি, মাদককে না বলে সোচ্চার কণ্ঠে আওয়াজ তুলুন।

লেখক: মোহাম্মদ হাশেম, আহ্বায়ক-কক্সবাজার লেখক ফোরাম। মোবাইলঃ ০১৮৬৪-৩৬৪৩৪৮।