প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
“আমরা শিশু, আমরা কুঁড়ি নিখিল বন নন্দনে,
ওষ্ঠে রাঙ্গা হাসি রেখা জীবন জাগে স্পন্দনে।
লক্ষ আশা অন্তরে
শিশুর পিতা মন্তরে
ঘুমিয়ে আছে বুকের ভাষা পাঁপড়ি পাতার বন্দনে।”
‘কিশোর’ শিরোনামের এই ছড়াটির মাধ্যমে শিশু-কিশোরেরা আন্দোলিত ও উদ্বেলিত হয়। ভবিষ্যত প্রজন্ম শিশু-কিশোরদের মাঝে এই ছড়া টনিকের মতো কাজ করে। শিশু-কিশোরেরা নিজেদেরকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার জন্য এই কবিতার মাধ্যমে অনুপ্রেরণ লাভ করে। যিনি এই যুগান্তকারী ছড়াটি লিখেছেন তিনি হচ্ছেন কবি গোলাম মোস্তফা। কবি গোলাম মোস্তফা দীর্ঘ ৩০ বছর শিক্ষকতা করলেও তিনি ‘বিশ^নবী’ শিরোনামে আমাদের মহানবী সা.-এর জীবন চরিত লিখে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। একই সাথে কবি গোলাম মোস্তফার কবি খ্যাতিও সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে।
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩২তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন। ১২ অক্টোবর’১৮ শুক্রবার বিকালে শহরের এন্ডারসন রোডস্থ একাডেমীর অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাহিত্য সভায় সভাপতিত্ব করেন একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি গোলাম মোস্তফার জীবনালেখ্য নিয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন একাডেমীর অর্থ সচিব কবি মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন।
বক্তাগণ বলেন, কবি গোলাম মোস্তফা বাংলা সাহিত্যে মুসলিম রেঁনেসার কবি হিসেবে পরিচিত। কবি গোলাম মোস্তফা পৈত্রিক সূত্রে আরবি ও ফার্সি সাহিত্য চর্চার সাথে অনেকটা পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। বিশেষত তাঁর পিতা ও পিতামহ যথাক্রমে কাজী গোলাম রব্বানী ও কাজী গোলাম সরওয়ারের কাছ থেকেই তিনি অনুপ্রেরনা পেয়েছেন। কারণ তাঁরা দুই জনই ছিলেন সাহিত্যানুরাগীÑ ফারসি ও আরবি ভাষায় সুপ-িত।
বক্তাগণ বলেন, কবি গোলাম মোস্তফার কাব্যের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো সহজ ও শিল্পসম্মত প্রকাশভঙ্গি এবং ছন্দেলালিত্য। তিনি গীতিকার ও গায়ক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর গানের বিষয় ছিল ইসলামি সংস্কৃতি ও দেশপ্রেম।
একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কবির জীবনালেখ্যের উপর পঠিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ, স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নুরুল আজিজ চৌধুরী, মূল্যায়ন সম্পাদক কবি অমিত চৌধুরী, স্থায়ী পরিষদের সদস্য ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবি অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী, একাডেমীর জীবন সদস্য কবি এডভোকেট মনজুরুল ইসলাম ও নির্বাহী সদস্য আবৃত্তিকার কল্লোল দে চৌধুরী।
পরে কবিতা পাঠ করেন সুলতান আহমেদ, রুহুল কাদের বাবুল, মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন, মনজুরুল ইসলাম, কল্লোল দে চৌধুরী ও মুজিবুর রহমান।
বক্তাগণ বলেন, একসময় কবি গোলাম মোস্তফার লেখা ছড়া-কবিতা স্কুলে পাঠ্য হিসেবে ছিলো। যেসব ছড়া-কবিতা পড়ে শিক্ষার্থীরা আদর্শ ও নীতি কথা শিখতে পারতো। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন পাঠ্য বই থেকে কবির কবিতা বাদ দেওয়া হয়েছে যা উচিত হয়নি।
বক্তাগণ কবি গোলাম মোস্তফাসহ আমাদের বাংলা সাহিত্যের বিস্মৃতি কবি-সাহিত্যিগণকে বিভিন্ন ভাবে স্মরণ করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
একাডেমীর ৪৩৩ তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা ২৬ অক্টোবর
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩৩ তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা আগামী ২৬ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার বিকাল ৪ টায় কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর এন্ডারসন রোডস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সম্প্রতি প্রকাশিত প্রমোদ সংলাপের উপর আলোচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে একাডেমীর সংশ্লিষ্ট সকলসহ জেলার কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্যামোদিদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল আহবান জানিয়েছেন।