শেফাইল উদ্দিন, ঈদগাঁও:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রামু কক্সবাজার –৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হিসেবে বৃহত্তর ঈদগাঁওর কৃতি সন্তান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেঃ, কর্নেল (অবঃ) ফোরকান আহমদ, এল ডি এম সি, পি এস সি কে মনোনয়নের দাবি উঠেছে। স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে তাদের এ আকাঙ্ক্ষার কথা জানা গেছে । কারণ হিসাবে তারা বলেন, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্ব । পেশার প্রতি তার আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠতা তাকে বারবার সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা । স্থানীয়দের মতে, তিনি কেবল প্রতিশ্রুতি নির্ভর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন । তার কথা ও কাজের মধ্যে মিল রয়েছে । তিনি যা বলেন তা করে দেখান । অতীতে তার এ ধরনের অনেক রেকর্ড রয়েছে । অন্যান্য রাজনীতিবিদ থেকে তিনি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ও আলাদা । তিনি একজন কর্মবীর, শিক্ষানুরাগী, সমাজ সচেতন ও মেহনতী মানুষের পরম বন্ধু । তার প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে এলাকায় অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে । বঙ্কিম বাজার থেকে বৃহত্তর মাইজ পাড়া সড়ক বলতে গেলে তার একক প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে । এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তার অগ্রণী ভূমিকা প্রশংসনীয় । তিনি কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করেননি । অতীতে দেখা গেছে, ভোটের মাঠে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ প্রতিশ্রুতি নির্ভর অনেক চমকপ্রদ বক্তব্য দিয়ে মানুষের আবেগ ও আজ থাকে পুঁজি করে ভোট আদায় করে নিজেরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এমনটা হবে না বলে মনে করছেন এলাকার সর্বস্তরের লোকজন । জানা গেছে , ঈদগাঁওকে প্রশাসনিক উপজেলায় রূপান্তর আন্দোলনে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন । যদিও এখনো ঈদগাঁও উপজেলায় রূপান্তর হয়নি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচিত হলে অবশ্যই ঈদগাঁওকে প্রশাসনিক উপজেলায় রূপান্তর করতে তিনি আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাবেন। সরকার ও দলের উর্দ্ধতন মহলের সাথে তার ব্যাপক সম্পর্ক থাকায় এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে এলাকাবাসীদের চিন্তা করতে হবে না। ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কে জাতীয়করণ করতে তিনি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি এমপি নির্বাচিত হলে পেশাগত জীবনে যেভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন ও উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছেন ভবিষ্যৎ ও সেভাবে তা অব্যাহত রাখবেন।
তিনি ১৯৫৯ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঈদগাঁও দক্ষিণ মাইজপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতা মৃত হাজী মোঃ নাজির হোসেন এবং মাতা রূপবাহার বেগম । তার পিতা একজন সফল কৃষক ও মাতা গৃহিণী ছিলেন । তিনি মাইজপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন । পঞ্চম শ্রেণীতে তিনি বৃত্তি লাভ করেন । পরে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন । অষ্টম শ্রেনীতে ও বৃত্তি পান । নবম শ্রেণীতে তিনি স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে প্রথম বিভাগে এস এস সি পাশ করেন। হাজার ১৯৭৬ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন । সে সময় তিনি ওই বিভাগের ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন । অনার্স পড়াকালীন তিনি সামরিক বাহিনীতে দ্বিতীয় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি কোর্স এ পরীক্ষা দেন। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে তিনি১৯৭৮ সালের ২৩ জুলাই বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি , ভাটিয়ারীতে যোগদান করেন । দু’বছর প্রশিক্ষণের পর তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন । একই সময়ে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একাডেমী হতে বি এস সি পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগের ডিগ্রী লাভ করেন পরবর্তীতে মিরপুর স্টাফ কলেজ হতে তিনি বি এস সি পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৮-৯৯ সালে তিনি ভারতের উসমানিয়া ইউনিভার্সিটি হতে প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স ইন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ( এম এম এস) ডিগ্রী লাভ করেন । এ সময় তিনি ভারতের কলেজ অফ ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট হতে লং ডিফেন্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স (এল ডি এম সি ) উপাধিতে ভূষিত হন ।
কমিশন লাভ করার পর তিনি বিভিন্ন পদবীতে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সেনানিবাসে চাকরি করেন । তিনি সেনাসদরে ৯ বছরের অধিককাল স্টাফ অফিসার হিসেবে গ্রেড ২ ও গ্রেড ১ পদবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালি সোহার্দ্য স্থাপনে আলীকদম ,পানছড়ি, মহালছড়ি, বন্দুকছড়ি ও জামিনী পাড়ায় উদাহরণ সৃষ্টি করেন। তখন স্কুল, মাদ্রাসা, মন্দির এবং কিয়াঃঘরের মাধ্যমে এলাকায় শান্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। তিনি বান্দরবানে ৯ মাসের অধিক ভারপ্রাপ্ত রিজিওন কমান্ডার ও খাগড়াছড়িতে ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন । তিনি জামিনী পাড়ায় একটি বি ডি আর প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। যা এলাকায় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে । সম্পূর্ণ বিডিআর-এর পঞ্চম রাইফেল ব্যাটালিয়ানের অফিসার জেসিও ও সৈনিকদের পরিশ্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর অর্থায়নে ও গুইমারা রিজিওন এবং খাগড়াছড়ি সেক্টরের সহযোগিতায় তার নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পরিচালিত হচ্ছে । বিদ্যালয়টি মাটিরাঙ্গায় প্রথম দিকের অবস্থানে আছে। চাকরিকালীন সময়ে তিনি জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষা মিশনে মোজাম্বিক ও আইভরিকোস্টে কোম্পানি অধিনায়ক ও অপারেশনাল স্টাফ অফিসার হিসেবে এক বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সরকারিভাবে ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, আরব আমিরাত, জাপান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, চীন, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার অনেকগুলো দেশ ভ্রমণ করেন।