শাহীন মাহমুদ রাসেলঃ
ব্যস্ততম নগরীতে প্রতিদিনই প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হয় সাধারণ মানুষ। তবে প্রয়োজনের তুলনায় গণপরিবহন কম। তার ওপর যানজট। তাই কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে একমাত্র ভরসা সিএনজি চালিত অটোরিকশাই। তবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও জনগণের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে প্রতিনিয়তই বাড়ছে অটোরিকশা চালকদের দাপট। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মহোৎসব।
রামু থেকে কক্সবাজার সিএনজি ভাড়া ৩০ টাকা, কলঘর, খরুলিয়া থেকে ২৫ এবং বাংলাবাজার থেকে ২০ টাকা নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু ইদানীং হঠাৎ করে রাত অবধি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা। অঘোষিত অতিরিক্ত ভাড়ার কারনে যাত্রীরা চরম লাঞ্চনার স্বীকার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করাতে সিএনজি চালক ও যাত্রীর সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সাধারণ ভোক্তভোগী যাত্রী রামুর ব্যবসায়ী হারুন জানান, কক্সবাজার থেকে রামুর নির্ধারিত সিএনজি ভাড়া ৩০ টাকা হলেও একটু রাত হওয়ায় ৭০টাকা দাবী করে সিএনজি চালক। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে সিএনজি চালক দুর্ব্যবহার করে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার থেকে রামু যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিকশা খুঁজছেন তারিক আজিজ ও সরোয়ার। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও যেতে পারছেন না তারা। জিজ্ঞেস করতেই ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, দেখছেন না ভাই। কেউ যেতে চায় না,বলে ভাড়া আছে। আবার কেউ কেউ বলে রিজার্ভ হলে যাব, মানিক নামে একজন বলেন আমার সঙ্গে প্রথমে ২৫০ টাকা দর করেছে। এখন বলতেছে ২০ টাকা বেশি দিয়েন। তারা সব সময় অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।
বাজারঘাটা সিএনজি খুঁজতে খুঁজতে হারুন নামে একজন বলে উঠলো, ভাই কি আর করবো। তারা জানে যে, সিএনজি ছাড়া আমরা যেতে পারবো না। সেজন্য সামান্য বৃষ্টিতেই তাদের আসল চেহারা ফুটে উঠেছে। ১৫০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা হয়ে গেছে। ২০০ টাকার ভাড়া দাবি করছে ৫০০ টাকা। আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।
প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কথা তুলে কলেজ শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, প্রশাসনের সামনে এসব অনিয়ম চলছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ নিজেই চাঁদা ওঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আইনের রক্ষক যারা তাদের হাতেই আইন নাকানি-চুবানি খাচ্ছে। আমাদের বলার কিছুই নেই। আমরা তো আমজনতা। হুসনিয়ারা নামের এক নারী বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংখ্যা হাজারেরও অধিক। নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অটোরিকশা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের এক সাংবাদিক বলেন, আমরা বরাবরই এসব চালকদের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বিআরটিএ বলছে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে তা দৃশ্যমান নয়। আজকে সাধারণ জনগণ পরিবহন মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এবং যাত্রী স্বার্থ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে যাত্রীগণ সরজমিনে তদন্ত পূর্বক অসাধু গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।