‘কক্সবাজার সিটি কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে’

শাহেদ মিজান, সিবিএন:

কক্সবাজার পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মুজিবুর রহমান বলেছেন- সেই কুঠির থেকে শুরু করা কক্সবাজার সিটি কলেজ আজ বাংলাদেশের মডেল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে। কলেজের এই অগ্রযাত্রায় কলেজের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির অক্লান্ত পরিশ্রম করছে বলে তা সম্ভব হয়েছে। পরিশ্রম অব্যাহত থাকলে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর এই কলেজ অল্প সময়ের মধ্যে পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ে রূপ নেবে। এতে আমার সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।

রোববার (৭ অক্টোবর) কক্সবাজার সিটি কলেজ কর্তৃক দেয়া সংবর্ধনার জবাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন। কলেজের অধ্যক্ষ ক্যথিং অংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সংবর্ধণা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন।

মেয়র বলেন, এই কলেজ অনেক বড় পরিসরে রূপান্তর হওয়ায় তার সাথে মিলিয়ে আরো কিছু অবকাঠামো দরকার। তার মধ্যে হোস্টেল, অডিটরিয়াম, সড়ক প্রসস্তকরণসহ আরো কিছু উন্নয়ন করতে হবে। আমি পৌরসভার পক্ষ থেকে খুব শিগগিরই একটি অডিটরিয়াম নির্মাণ করে দেবো। সেই সাথে হোস্টেল নির্মাণের জন্যও আমি সহযোগিতার চেষ্টা করবো।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মন দিয়ে পড়ালেখা করতে হবে। ভালো ফলাফল করতে হবে। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা একটু পড়ালেখা কম করে। ছেলে-মেয়ে সবাই মন দিয়ে পড়ালেখা করো। যারা ভালো রেজাল্ট করবা তাদের জন্য পৌরসবার পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করছি। একই সাথে গরিব ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৌরসভা অনুদান দেবে।

কলেজ সংলগ্ন পাহাড় ভঙ্গুরের সমস্যা নিয়ে মেয়র মুজিবর রহমান বলেন, কক্সবাজার সিটি কলেজ পাহাড় কাটছে না। পাহাড়টি বৃষ্টির কারণে ভঙ্গুর হয়ে ঝড়ে পড়ছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। তাই এখন উচিত হয়ে দাঁড়িয়েছে- কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়টি অপসারণ করে নেয়া। না হয় যে কোনো পাহাড়ের অংশ ভেঙে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। এই বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলে দেবো, সিটি কলেজের পাহাড় অপসারণ করকেত যেন কোনো বাধা দেয়া না হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন পাহাড় কাটছে ভূমিদস্যুরা। কিন্তু সিটি কলেজের পাহাড় কাটা হবে জাতি গঠনের পথকে আরো অগ্রসরমান করার জন্য। মনে রাখতে হবে ভালো কিছু করার জন্য কিছু ক্ষতি করতে হবে। তবে এমন না যে, সিটি কলেজের পাহাড়টা বিশাল পাহাড়। এই পাহাড়টা কাটলে এই এলাকার পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং অনাকাঙ্খিত প্রাণহানি আশঙ্কাটা কমে যাবে। ফলে কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা নিবির্ঘেœ তাদের পাঠ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। এই কাজটার জন্য আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহযোগিতা করবো।

তিনি পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এই কলেজটিকে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন। এই কলেজের পরিবেশ দেখে আমার মন ভরে গেছে। আরো বাকি কাজগুলো করে এই কলেজকে সূর্য্যের আলোর মতো চকচকে করে তুলবেন। এতে পৌরসভা সহযোগিতা করবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন বলেন, আজ আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও আনন্দের দিন। কারণ আমরা আজ সংবর্ধনা দিতে যাচ্ছি কক্সবাজারের মাটি ও মানুষের সবচেয়ে কাছের মানুষ মেয়র মুজিবুর রহমানকে। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন। আমাদের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর আশির্বাদে খুব অল্প সময়ের মধ্যে কক্সবাজারকে বদলে দিতে সক্ষম হবেন।

তিনি আরো বলেন, ‘কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মুজিবুর রহমান আমাদের সাথে ছিলেন। তিনি এই কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্যও। এই কলেজের দুর্দিনের তিনি আমাদের পাশে ছিলেন। নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি এখন মেয়র হয়েছেন তাই কলেজের জন্য সহযোগিতা করার হাত আরো প্রসারিত করতে পারবেন। আমরা তাঁর কাছে সেই সহযোগিতা চাইবো।’

সংবর্ধনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সংবর্ধনা আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নূরুল আবছার চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কলেজ পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য এড. ফরিদুল আলম, সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, কলেজের উপাধ্যক্ষ আবু জাফর মোঃ ছাদেক , শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান , কর্মচারী শাহাদত হোসেন। মানপত্র পাঠ করেন প্রভাষক সৈয়দা রিপা জাহান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিপুল ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলো।