হাবিবুর রহমান সোহেল, নাইক্ষ্যংছড়ি:
পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের মার্মাপাড়ার  বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা মংছনি মার্মার সন্ধান মিলছে না আজ ৬ দিন। তিনি অপহৃত নাকি-অন্যকিছু কোন হদিসই কেউ দিতে পারছে না এ পর্যন্ত। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। আর উপজেলা কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির প্রভাবশালী সদস্যও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর থেকে তার কোন সন্ধান পাচ্ছে না তার পরিবার। নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি কক্সবাজারে ছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে পুত্র শোকে কাতরাচ্ছেন মংছিনের মা ব্রামাচিং র্মামা ও পরিবার। মংছিনের ৭৫ বয়সী এ মা এবং স্ত্রী প্রমী মার্মা এ প্রতিবেদককে জানান, মংছিন গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আগত এক কাঠ ব্যবসায়ীর সাথে বৈঠকের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ককসবাজারের উদ্দ্যেশে রওয়ানা দেন সকাল  ৮টায় ।
যাত্রাপথে তিনি রামুর সাদা চিন বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে পূঁজা সেরে কক্সবাজারের কলাতলীস্থ হোটেল ওর্য়াল্ড বিচে অপেক্ষায় থাকা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে গিয়ে হোটেলে পৌঁছেন  সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে। আর সন্ধ্যাা ৬টা ১৪ মিনিটে পরিবারের সাথে তিনি  এক্ষুণি বাড়ি ফিরবে বলে শেষ কথা বলার পর পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে এখনও তার এ মোবাইল আর খোলে নি আর ।
এদিনের পর থেকে তার আর কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না তার। মংছিনের  স্বজনরা আরো জানান, সাদামাটা চাল চলনে অভ্যস্ত মংছিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরীক্ষিত একজন সৈনিক। আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও তার সাথে কারো তেমন শত্রুতা ছিলো না। আর ব্যবসায়ী অংশিদার সালা উদ্দিন নামের লোকটির সাথেও তার ভাল সখ্যতা ছিলো। এ ছাড়া তিনি ককসবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকার কাঠ ব্যবসায়ীদের সাথে মেলা-মেশা করতো খোলা-মেলা। দীর্ঘ ৬ বছর তার ব্যবসাকালে জঘণ্যতম কোন অপরাধ করেছেন ঘটনা ও  জানা নেই তাদের।
এরই মধ্যে হঠাৎ তার নিখোঁজ বা অপহরণের মতো একটি ঘটনা তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। মামাপাড়া তথা ধূংরীহেডম্যান পাড়া  গ্রামের বাসিন্দা  সমাজ সেবক ক্যানু মার্মা  জানান, মংছিন ডাই র্মামার বৃদ্ধা মা ব্রামাচিং র্মামা,খালা, স্ত্রী এবং অন্যান্য স্বজনরা বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন মংছিণের জন্যে। কেননা তাদের এ পরিবারের মংছিনই ছিলো এক মাত্র আদরের এবং আয়ক্ষম ব্যক্তি।
তিনি আরো জানান,পরিবারের ৯ সদস্যের ১ জন কলেজে, একজন হাই স্কুলে  আর বাকীরা প্রাথমিক স্থরে পড়া লেখা করে থাকে। বিশেষ করে তার আদরের সন্তান  রিংরিং মার্মা শুধু সারাক্ষণ কান্না করছে তার বাবা ফিরছে কখন ফিরছে কি-না বলে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, মংছিনের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে। যার নম্বর-১২৫৩/১৮।  আর তার নিখোঁজের ঘটনাস্থল ককসবাজার হলেও তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির বাসিন্দা হিসেবে সকলে তার খোজেঁ আন্তরিকভাবে তৎপর।