পটিয়া প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাছির এর উদ্যোগে, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও মাদক বিরোধী সংগঠন সোসাইটি ফর এন্টি এডিকশন মুভমেন্ট (স্যাম) এর আয়োজনে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ১২ টি কলেজে মাদক বিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় পটিয়ার ১২ টি কলেজের ১১ হাজারেরও অধিক ছাত্রছাত্রীকে মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত করা হয়। মাদকের কুফল, মাদকের ক্ষতিকর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পটিয়া জোনের উপ-পরিদর্শক রতন সুর। মাদকের কুপ্রভাবে আসক্ত ব্যক্তির জীবনীশক্তির ক্ষতি, পারিবারিক ক্ষতি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষতির দিক নিয়ে আলোচনা করেন পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান। ধূমপানের শারীরিক ক্ষতিকর দিক নিয়ে সোসাইটি ফর এন্টি এডিকশন মুভমেন্ট (স্যাম) একটি প্রজেক্ট প্রদর্শন করে, যা দেখার পর পটিয়া শিক্ষক ও ছাত্ররা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নিজেরা স্কুলগুলোতে গিয়ে এই প্রজেক্ট প্রদর্শন করবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন।
বিজিএমইএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাসির বলেন, বাংলাদেশে যে কয়েকটি মাদকের রুট রয়েছে তার মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অন্যতম। মাদকের সাথে পটিয়ার যুবসমাজ জড়িয়ে পড়ছে। কেউ মাদক সেবন করছে, কেউ আবার সরাসরি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাত বাড়ালেই যেভাবে মাদক পাওয়া যায়/যাচ্ছে, ঠিক তার বিপরীত দিক থেকে তেমন কোন সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে না। সে কারনে আমাদের দেশের যুবসমাজের বিরাট একটি অংশ মাদকের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়িদের নীল নকশা, রঙিন ফাঁদ সম্পর্কে যুবসমাজের অজ্ঞতার কারণেই তারা এই ভয়ঙ্কর নেশার জালে জড়িয়ে পড়ছে। এই পটিয়ায় যাতে নতুন করে আর কোন মাদকসেবী তৈরী না হয় সেজন্যই আমার এই উদ্যোগ। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সোসাইটি ফর এন্টি এডিকশন মুভমেন্ট (স্যাম) এই পটিয়ায় রেগুলার মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা, মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। পটিয়ার ১২ টি কলেজে মাদক বিরোধী সচেতনতামুলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। স্কুলগুলোর পরীক্ষা শেষ হলে স্কুলগুলোতেও মাদক বিরোধী আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব জসীম উদ্দীন খান বলেন, বাংলাদেশে গত সাত বছরে ইয়াবা সেবীর সংখ্যা বেড়েছে ৭৭ গুন। দেশের অন্যান্য জেলাগুলোর তুলনায় চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে ইয়াবা সহজলভ্য, যার ফলে এ অঞ্চলের তরুণ ও যুবসমাজের মধ্যে মাদকাসক্ত হবার প্রবনতাও বেশি। এই ১১ দিনের মাদক বিরোধী আলোচনা সভায় ১১ টি কলেজে যে মাদক বিরোধী গণসচেতনতা তৈরী হয়েছে এতে যুবসমাজ বেশ সচেতন হবে বলে আমি আশাবাদী।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব রুহুল আমিন বলেন, দেশে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক আগ্রাসন থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে সব জায়গাতেই এ ধরনের আলোচনা সভা, ক্যাম্পিংয়ের আয়োজন করা উচিৎ। সরকারি বিভিন্ন মাদকবিরোধী উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের সচেতন নাগরিকদেরকে এগিয়ে আসা উচিৎ, তাহলে মাদকের প্রতিরোধ সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
পটিয়ার ১১ টি কলেজে মাদক বিরোধী আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ১১ টি কলেজের প্রিন্সিপাল ও কলেজ শিক্ষকবৃন্দ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৪ জন কর্মকর্তা, সোসাইটি ফর এন্টি এডিকশন মুভমেন্ট (স্যাম) এর অফিস সম্পাদক এম আই মহিদ, মাদক বিরোধী পত্রিকা ‘নেশা’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মঞ্জুরুল হাসান, স্যাম এর আইটি সম্পাদক সামসুল হক সাকিব সহ স্যাম এর ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম, পটিয়া সার্কেল পুলিশ কর্মকর্তা প্রমুখ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।