শাহীন মাহমুদ রাসেলঃ

মানুষ মরণশীল। কিন্তু কিছু মানুষ তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে অমরত্ব লাভ করে। রামুর কৃতি সন্তান, দানশীল, পরোপকারী সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ রিফাত তেমনি এক ব্যক্তিত্ব; যিনি ছাত্রাবস্থায় তার যাপিত জীবন মানুষের কল্যানে উজাড় করে দিয়েছেন। রামু উপজেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে রিফাত এক অনন্য ব্যক্তি, যে জনসেবাকে রাজনীতির মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করেছিলেন। ভালো কাজে দলমত নির্বিশেষে মানুষের উপকার করাই তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ। তার মহৎ গুনাবলীকে যারা হিংসার চোখে দেখেছেন কিংবা তার কাছের রাজনৈতিক বিরুদ্ধাচারণকারীরাও স্বীকার করবেন যে, তিনি মানুষের দুর্দিনে, মানুষের পাশে স্বার্থহীন ভাবে পাশে থাকতেন,তাদের সাধ্যাতীত সহযোগীতা করতেন হাসি মুখে। ফলত স্বাভাবিকভাবেই তিনি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দুটোই অর্জন করেছেন। রামুর রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে রিফাত একজন কিংবদন্তী। সবার মতো, কালের যাত্রাপথে একদিন ধরনী ত্যাগ করলেও তিনি গণমানুষের মাঝে শ্রদ্ধার আসনে সমাসীন থাকবেন। তাঁর মতো মহৎপ্রাণ,আদর্শিক ব্যক্তিত্ব সমাজের নিয়ন আলো।

মরহুম রিফাতের সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তারই দেখানো পথে দরিদ্র শিশুদের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে ৩১ শিশুর শিক্ষা উপকরণের দায়িত্ব নিলেন মোরশেদ আলম নামে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ কর্মী। প্রয়াত নেতাকে স্বরণ করে রাখতে গঠন করা হয়েছে রামুর স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন “স্বপ্ন”। দরিদ্র ও পথ শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। শিক্ষা উপকরণের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দেওয়া হয় নানা প্রশিক্ষণও। এছাড়া বাল্যবিয়ে রোধ, শিশু নির্যাতন বন্ধে চলছে আপ্রাণ চেষ্টা। কয়েকজন তরুণের স্বপ্নঘেরা সংগঠনটি এখন অনেকের পাথেয়। এদিকে সকল বাধা উপেক্ষা করে সমাজ উন্নয়নে রাজাকুল ইসলামী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ৩১ জন শিশুদের মাঝে বিতরণ করে বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী। তবে বর্তমানে আর্থিক সঙ্কটের কারণে সংগঠনটির কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে অনেক দুর এগিয়ে যাবে এমনটি আশা ব্যক্ত করেছেন সংগঠনটি।

শিশু বয়সে যখন তাদের বই নিয়ে পা রাখার কথা স্কুলের আঙিনায়, সে বয়সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিচ্ছে তারা। সমাজে এমন মানুষও আছেন, যারা স্বপ্ন দেখেন- হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত, শ্রমজীবী এই পথশিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানোর। এমন লক্ষ্য নিয়েই ৩১ শিক্ষার্থীর উপকরণের মাধ্যমে মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে তার সাত বন্ধু মিলে সংগঠনটির যাত্রা শুরু করেছেন ২০১৮ সালে।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অক্ষরজ্ঞান প্রদান ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়গামী করা। সে সময় তারা ৩১জন শিশু সংগ্রহ করে নিজেদের জমানো টাকায় বই, খাতাসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ কিনে দেন। আর খেলার সময় থেকে এক ঘণ্টা সময় তাদের পড়াশুনা করানোর জন্য ব্যয় করেন। মোরশেদ আলম বলেন, আমার প্রিয় নেতা প্রয়ত রিফাত ভাইয়ের স্বরণে এই উদ্দোগ, এবং সবার সহযোগিতা কামনা করেন।