আতিকুল ইসলাম


অবশেষে মানব জাতির দুঃখ মোচন হল। তারা আশ্চার্য সুখে গ্রহ, তারা, নক্ষত্র মহাজগত পরিভ্রমন করতে থাকল। তাদের মনের মাঝে সৌন্দর্য পিপাসু বৈশিষ্ট্য অতিরিক্ত মাত্রায় প্রকাশ হতে থাকল। তারা ধীরে ধীরে চলতে থাকল মিথ্যা জগতের পরিসমাপ্তির পথে। উন্মোচন হল মহাসত্যের!

স্রষ্টা একক। মহাধ্রুবক ! চিন্তা করলেন পৃথিবীতে মানুষ পাঠাবেন। তাঁর প্রকাশ! সৃষ্টি হল মানুষের। ফেরেশতারা স্রষ্টার সৃষ্টি প্রথ্যক্ষ করল। তারা ভুল মন্তব্য করল- “মানুষ এমন, যারা পৃথিবীতে রক্তপাত ঘটাবে” ।( কারণ তাদের অগ্রগামী ছিল আজাজিল নামক একজন হতভাগ্য জীন)। স্রষ্টা বললেন, “আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না”। সবাই তোমরা সেজদা কর আদমের চরণে- স্রষ্টার আদেশ। সকল ফেরস্তা সেজদা করল আদমকে। আলো সেজদা করল মাটিকে। কিন্তু আজাজিলের মনে অহংকারের সৃষ্টি হল। সে তার অহংকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। আজাজিল- যে কিনা ছিল স্রষ্টার এক বড় প্রেমিক, পৃথিবীর প্রত্যেক অংশে ছিল তার সেজদা- স্রষ্টার উদ্দেশ্যে, শয়তানে রূপান্তরিত হল। আজাজিলের সকল প্রেম নষ্ট হয়ে গেল। সে পাগলের মত প্রলাপ বকতে থাকল। একসময় তার মনে উৎপন্ন হল মানুষের প্রতি ঘৃণা, স্রষ্টার প্রতি ঘৃণা।

আদম বেহেশতে সময় কাটাতে থাকল। কিন্তু সঙ্গীহীন বেশি সময় বেহেশতী সুখ টিকল না। স্রষ্টা তাকে দান করল সঙ্গিনী। স্রষ্টা বেহেশতে একটি নিষিধ্য জিনিস দান করলেন। আর এভাবেই তিনি মানব জাতিকে দান করলেন শ্রেষ্ঠত্ব। গন্দম ফল নিষিধ্য হল। শয়তান মানুষের পিছে লাগল। এক সময় আদম আর তার সঙ্গিনী ভুল করল। তাদের বেহেশতী পোশাক খুলে গেল। সৃষ্টি হল ক্ষুধার, ঘামের আর নরকের। মানব পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হল, যেখানে তাদের আসার কথা ছিল অতি সম্মানে, তারা এলো পোশাকবিহীন।

হাজার হাজার বৎসর পার হয়ে গেল। মানুষের সংখ্যা হল গননার বাইরে। তবে তাদের বৈশিষ্টের কোন পরিবর্তন হল না। কিছু আছে যারা ভুল করে, কিছু শান্তির পথে চলতে চায়। বাকিরা উপভোগ করে কিংবা অত্যাচারিত হয়। শয়তান তাদের অমঙ্গল চায়।
সালঃ- ২০_ _ খৃষ্টাব্দ,
শয়তানের মনের ঘৃণা শেষ হয়ে গেল। শয়তান ক্লান্তবোধ করল। তার নিজেকে খুব বোকা মনে হল। শ্রেষ্ঠেত্বর আসল মানে সে বুঝল। (না মানুষ, না জীন, না ফেরেস্তা অথবা পথের কুকুর, যে স্রষ্টাকে ভালোবাসে সেই শ্রেষ্ঠ।) সুতরাং স্রষ্টার নির্দেশে আদমকে সিজদা করাই শ্রেয়। হাজার বৎসরের ক্লান্তি নিয়ে শয়তান স্রষ্টার কাছে ক্ষমা চাইলো এবং আদমের কবরে সেজদা করল। শয়তান পুনরায় রূপান্তরিত হল আযাযিলে। মানুষের উলঙ্গতা, ঘাম এবং নরক ও তার পাহারাদার লুসিফার ধ্বংস হয়ে গেল।

অবশেষে মানব জাতির দুঃখ মোচন হল। তারা আশ্চার্য সুখে গ্রহ, তারা, নক্ষত্র মহাজগত পরিভ্রমন করতে থাকল। তাদের মনের মাঝে সৌন্দর্য পিপাসু বৈশিষ্ট্য অতিরিক্ত মাত্রায় প্রকাশ হতে থাকল। তারা ধীরে ধীরে চলতে থাকল মিথ্যা জগতের পরিসমাপ্তির পথে। উন্মোচন হল মহাসত্যের! আযাযিল তাদের আগ্রগামী হিসেবে নিয়োজিত হল।