সিবিএন ডেস্কঃ

গাইনুরা গাছ। বৈজ্ঞানিক নাম গাইনুরা প্রোকাম্বেন্স। এটা চীন এবং সুইজারল্যান্ডে স্থানীয়ভাবে ডান্ডালিউয়েন নামেও বেশ পরিচিত।

আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, চীন, মালেয়শিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিশ্ব জয় করে এ এন্টি ডায়াবেটিস গাছ এখন পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিভিন্ন অভিজাত নার্সারিতে মিলবে গাইনুরার চারা। ঢাকা বায়তুল মোকাররম এলাকায় এ চারা বিক্রি করা হয়। কুরিয়ারেও অর্ডারে অনেকে পাঠায় বলে জানা গেছে।

চীন ও সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের দাবি- প্রতিদিন খালিপেটে ২ টি পাতা সেবনে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এন্টি ডায়াবেটিস এ গাছটির পাতা এবং পাতার রস সেবনে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

গাছটির ২টি পাতা প্রতিদিন খালি পেটে সেবনে শুধু সুগার এবং কোলেস্টেরলই নিয়ন্ত্রণে আসে না, তরতাজা রাখে কিডনি, লিভার এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে ব্লাড প্রেসার।

এছাড়া সুগার স্বভাবিক মাত্রার তুলনায় আরো কমিয়ে হাইপোগ্লামিয়ার বিপদ থেকেও রক্ষা করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে এ গাছের পাতা।

তবে ইনসুলিন ব্যবহারকারী এবং গ্যাস্ট্রিক আক্রান্তদের ক্ষেত্রে সকালে খালি পেটে ২টি পাতা এবং রাতে শোবার আগে ২টি পাতা সেবন করতে হবে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, প্রথম দুই মাস ডায়াবেটিস-এর নিয়মিত ওষুধের পাশাপাশি খালি পেটে ২টি পাতা সেবন করতে হবে। দুই মাস পর থেকে শুধু ২টি করে গাছের পাতা খেলেই চলবে।

গাছের পাতা খেয়ে উপকার পাওয়া অনেকে জানিয়েছেন, এ গাছের পাতার সাথে রসুন, নিমপাতা, কাঁচা হলুদ পেস্ট করে একদিন রোদে শুকিয়ে ছোট মার্বেলের মতো অনেকগুলো বল বানিয়ে,
আবার একদিন রোদে শুকিয়ে একটি এয়ার টাইট বোতলে সংরক্ষণ করার পর প্রতিদিন চিবিয়ে ১/২ টি বল খেয়ে পানি পান করলে কার্যকারিতা আরো ভালো হয়।

ভেষজ ওষধি গুণসম্পন্ন এ গাছটি বেঁচে থাকে ২৫ বছর। সর্বোচ্চ ৩ ফুট লম্বা হয়। এরপর ডালাপালা বিস্তার করে জঙ্গলের মতো হয়ে যায়।

তবে এ গাছে সকাল-বিকাল নিয়মিত পানি দিতে হয়। স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ এ গাছের জন্য বেশ উপযোগি। সর্বনিম্ন ১০ ইঞ্চি টবে গোবরের সার ও মাটি মিশিয়ে চারা রোপন করতে হবে। বছরে অন্তত দুই বা র মিশ্র সার ব্যবহার করতে হয়। তবে সরাসরি মাটিতে এটা বেশ ভালো হয়।

এদিকে খবর এসেছে,
গাইনুরা গাছের রস খেয়ে নির্মূল হচ্ছে ডায়াবেটিস এমন দাবিই করেছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার মৃত তাইজুদ্দিনের ছেলে ডায়াবেটিস রোগী মোজাম্মেল হক সর্দার (৪৮)।

গাছের পাতায় ডায়াবেটিস নির্মূলের খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে। শত শত মানুষ ছুটে যাচ্ছে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে। একের পর এক ডায়াবেটিস রোগী সুস্থ হওয়ায় এ খবর ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

উপজেলা সদরের আলম ফিলিং স্টেশনের পশ্চিমে মোজাম্মেল হক সর্দারের বাড়ি। কোনো ডায়াবেটিস রোগী তার কাছে গেলে তিনি `যাদুকরি` ওই পাতা এনে দিচ্ছেন। তবে কাউকে গাছ চেনাচ্ছেন না।

মোজাম্মেল হক সর্দার বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আমি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত থাকায় কোনো চিকিৎসায় কাজ হচ্ছিল না।

ডাক্তারের ওষুধ খেলে কিছুটা সুস্থ থাকলেও পরবর্তীতে আবার বেড়ে যায়। অবশেষে আমি নিজেই বিভিন্ন গাছের লতাপাতার রস খাওয়া শুরু করি। এক পর্যায়ে এ যাদুকরি গাছের সন্ধান পাই।

মাত্র ১৫ দিন একটানা সেই গাছের পাতার রস খেয়ে পরীক্ষাগারে গিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে বুঝতে পারলাম আমার ডায়াবেটিস ১৯ পয়েন্ট হতে ৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে এবং পরবর্তীতে আমি ডাক্তারী ওষুধ খাওয়া একবারেই ছেড়ে দেই। বর্তমানে আমার ডায়াবেটিস একেবারেই নির্মূল এবং নিয়ন্ত্রণে।

এলাকার একাধিক মানুষ জানান, সর্দারের দেওয়া গাছের পাতা খেয়ে তারা ডায়াবেটিসের অভিশাপ থেকে মুক্ত আছেন।

সর্দারের কাছে ওই পাতার গাছের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে ডায়াবেটিসের রোগী এলে আমি সেই গাছের পাতা এনে দেই, গাছের নাম বলি না।

এ পাতার বিনিময়ে টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইচ্ছে করে কারো কাছ থেকে টাকা নেই না। তবে কেউ নিজ ইচ্ছায় দিতে চাইলে নেই।