শাহেদ মিজান, সিবিএন:
রাজনীতি এমন একটি জগত; যেখানে একটি মানুষ একাত্মা হয়ে গেলে তাঁর আর ফেরার সুযোগ নেই! নিজের ব্যক্তি জীবন, সংসারসহ জগতের আরো কিছু তাকে ত্যাগ করতেই হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে তা ঘটে না বা সবাই তা হতে পারে না। ‘পৃথিবীর সব ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে’ বলে একটা কথা আছে। এই ব্যতিক্রমীরাই পৃথিবীতে নজির সৃষ্টির করেন। হয়ে উঠেন অনন্য। রাজনীতিতেও বিষয়টা মোটেই ভিন্ন নয়। একজন ব্যতিক্রমী রাজনীবিদ লাখ লাখ মানুষের জন্য রাজনীতি করেন। দেশের জন্য, জনমানুষের নিজেকে উৎসর্গ করেন। তখন তার আর নিজের বলে কিছু থাকে না। নিজের পুরোটা জীবন তিনি কাটিয়ে দেন রাজনীতির অকূল মাঠ আর জনগণের কোলে মাথা রেখে! এই বাস্তবতা শতভাগ মিলে যায় কক্সবাজারের আওয়ামী রাজনীতির অন্যতম পথিকৃত নজিবুল ইসলামের সাথে। তাই সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় কক্সবাজার সদর-রামু আসনের নৌকার প্রার্থী নিয়ে তাঁকেই ঘিরে আলোচনা হচ্ছে। ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে তাঁকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি উঠেছে।

নজিবুল ইসলাম একজন আপাদামস্তক রাজনীতিবিদ। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম অনুরাগী মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম দলের জন্য নিজের পুরোটা জীবন দিয়ে গেছেন। বর্তমানে মৃত্যুপদযাত্রায়ও তাঁর ধ্যান-জ্ঞান শুধুই বঙ্গবন্ধু আর আওয়ামী লীগ। এমন মানুষের রক্তধারার বহতা নিয়ে যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান হিসেবে রাজনীতি করে যাচ্ছেন নজিবুল ইসলাম। সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত যার সময় কাটে রাজনীতির মাঠে। তিনি কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের উদীয়মান এবং সম্ভাবনাময়ী একজন নেতা হিসেবে সক্ষমতা অর্জন করেছেন। জনগণের বিচারে ইতিমধ্যে তিনি সেই খেতাব পেয়ে গেছেন। কারণ কক্সবাজারের আওয়ামী লীগের সব কার্যকরণে তিনি থাকবেনই। বয়সে তরুণ হলেও কক্সবাজারের মতো একটি জেলার আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তাঁর ব্যাপক ভূমিকার কথা কারো অজানা নয়। দলীয় প্রয়োজনে যদিও তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। কিন্তু তিনি তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, উপস্থিত বুদ্ধির পারঙ্গমতা দিয়ে জেলার আওয়ামী লীগ অঙ্গনের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।

এসব যোগ্যতা বিবেচনায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার সদর-রামু আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নজিবুল ইসলামকে নিয়ে হঠাৎ আলোচনায় হচ্ছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের আরো মনোনয়ন প্রার্থী থাকলেও নজিবুল ইসলামকে নিয়ে ভাবছে এখন তৃণমুল। কারণ অন্যসব মনোনয়ন প্রত্যাশী থেকে নজিবুল ইসলামের যোগ্যতা কোনো অংশে কম নয় বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তাই কক্সবাজার সদর-রামু আসনে তাকেই আগামী নৌকার মাঝি হিসেবে দেখার দাবি উঠেছে। কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনের পর জনগণ হঠাৎ এই দাবি তুলেছেন সাধারণ জনগণ। ক্লিন ইমেজের এই নেতাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির ঘাঁটিতে খ্যাত কক্সবাজার সদর-রামু আসনে আওয়ামী লীগের জয় হবে।

দলীয় সূত্র মতে, দীর্ঘদিন থেকে মুজিবুর রহমানের সাথে একাট্টা হয়ে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এসেছেন নজিবুল ইসলাম। সেই সময়ে মুজিবুর রহমানের ব্যস্ততার কারণে পুরো পৌর আওয়ামী লীগকে নিয়ন্ত্রণ করতেন নজিবুল ইসলাম। দলীয় কর্মসূচী বাস্তবায়ন, রাজনীতির মাঠ নিয়ন্ত্রণ, নেতাকর্মীদের মাঝে সমন্বয় সাধন, প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধনসহ দলীয় প্রায় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। তাঁর পরিকল্পনা এবং পরামর্শে কাজ করতেন বলে সেই সময় মুজিবুর রহমান অনেকবার প্রকাশ্যে বলেছিলেন। মুজিবুর রহমান এবং নজিবুল ইসলাম মিলে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলেছেন। মুজিবুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান নজিবুল ইসলাম। মুজিবুর রহমান পৌর আওয়ামী লীগ থেকে চলে গেলেও তার শূন্যতা কখনো পৌর আওয়ামী লীগে ঘেঁষতে পারেনি। সব কিছু শক্তহাতে ধরে পৌর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে পরিচালনা করছেন নজিবুল ইসলাম। নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছেন। জনবান্ধব নেতা হিসেবে তাঁর ডাকে দলীয় কর্মসূচীসহ দলের নানা কার্যক্রমে ছুটে আসেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।

অন্যদিকে মুজিবুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরও তিনি ও নজিবুল ইসলাম একাট্টা হয়ে রয়েছেন। মুজিবুর রহমানের সাথে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের নানা কর্মকান্ডেও অবদান রেখে চলেছেন তিনি। এমনকি তাকে জেলা আওয়ামী লীগের এক অন্যতম নীতি-নির্ধারক হিসেবেও মনে করা হয়। বিগত সময়ে সরকার বিরোধী তান্ডবে অগ্রভাগে থেকে তিনি দৃঢ়ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

দলের নির্বাচন পরিচালনায়ও নজিবুল ইসলামের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। ইতিমধ্যে তা বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে। বিগত ইউপি নির্বাচন ও পৌর নির্বাচন অনেক দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার আনার পেছনে নজিবের ভূমিকা রয়েছে। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মেয়র হিসেবে জয়ী হওয়ার মূল নিয়ন্ত্রকও ছিলেন নজিবুল ইসলাম। জয়ের ব্যাপারে একদম সুক্ষ্ম বিষয় থেকে সব কিছুর মূল পরিকল্পনায় ছিলেন তিনি। তিনি রাতদিন অমানুষিক পরিশ্রম করে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখভাল করে মুজিবুর রহমানের বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেও বেশ আলোচিত নজিবুল ইসলাম। জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম পুরোধা হিসেবে কাজ করছেন। জেলার সাংস্কৃতিক চর্চা ও সংস্কৃতিকর্মীদের আস্থার ঠিকানাও বলা হয় তাকে। রাজনীতির পাশপাশি সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে তিনি নানাভাবে অবদান রেখে চলেছেন। জঙ্গীবাদ বিরোধী নানা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডসহ সব ধরণের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়নে তিনি অগ্রভাগে থাকেন।

নেতাকর্মীরা বলছেন, রাজনীতির মাঠের একজন ‘অলরাউন্ডার ম্যান’ নজিবুল ইসলাম। নেতাকর্মী ও জনবান্ধব নেতা হিসেবে দলের সামগ্রিক কর্মকান্ডে একাগ্রচিত্তে তাঁর যে অবদান; তা খুব বেশি কেউ পারে না। নেতৃত্বের প্রখর গুণ আছে বলেই তিনি সব কিছু অত্যন্ত দক্ষ ও সুচারুরূপে টেনে নিয়ে যেতে পারেন। একজন সংসদ সদস্য হতে এরচেয়ে বেশি কিছু লাগে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে কিছুটা বেশিই পারবেন তিনি। তাই তাঁকে দলের মনোনয়ন দিলে কক্সবাজার সদর-রামু আসনে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে। তিনি এমপি নির্বাচিত হলে কক্সবাজার সদর-রামু একটি উন্নত এলাকায় পরিণত হবে। কক্সবাজারের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে।