সাক্ষাতকার নিয়েছেন  কাফি আনোয়ার

লেঃ কর্নেল (অব:) ফোরকান আহমদ এলডিএমসি, পিএসসি ১৯৫৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও’র মাইজপাড়া গ্রাামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাইজপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, কক্সবাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স কোর্স করে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমিতে যোগদান করে ১৯৮০ সালে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন।

পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন পদে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টে ডেপুটি কমান্ড্যান্ট হিসাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা দায়িত্বেও নিয়োজিত ছিলেন। টানা দ্বিতীয়বারের মতো কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে আবারও নিযুক্ত হন ।

কাফি আনোয়ার : দ্বিতীয় মেয়াদে আপনি আবারও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন, জেলার শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক বাঁকখালী’র পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে আপনি প্রথম মেয়াদকাল পূর্ণ করেছেন, আপনার দায়িত্বকালকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : আপনাকে ধন্যবাদ। আমার মেয়াদকাল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রথম দুই বৎসর ছিল অত্যন্ত কঠিন সময়। আমার দীর্ঘ সামরিক জীবনেও এত কঠিন ছিল না। একদিকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে প্রতিষ্ঠা করা অন্যদিকে এই কর্তৃপক্ষের আইনকে কক্সবাজার বাসীর কাছে পৌঁছে দেয়া। তবে প্রশাসন, রাজনৈতিক বা আইন অমান্যকারী, অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ ইত্যাদি সকলের কাছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ছিল নতুন। তাই বহুদিনের পুরাতনকে নতুন আঙ্গিকে নিয়ে আসা অত্যন্ত কঠিন এবং বাধা বলে আমার দুই বৎসর মনে হয়েছে।

কাফি আনোয়ার : পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত হিসেবে পর্যটননগরী কক্সবাজারের পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে উন্নয়নে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলি কী কী?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : যদি চ্যালেঞ্জগুলো বলি, তাহলে

(ক) প্রশাসনিক সহযোগী অত্যন্ত প্রয়োজন।

(খ) রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি না নিয়ে সকলের জন্য “প্রয়োজন” হিসাবে চিহিৃত করা।

(গ) অবৈধকে “না” বলা এবং বৈধকে সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরী করা।

(ঘ) সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

কাফি আনোয়ার : আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর আপনার নিজস্ব একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছেন, সফলতাও এসেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, পৌরপ্রাশাসন, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, নগর অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ’সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির সহযোগিতা ও সুষম সমন্বয় প্রয়োজন, এক্ষেত্রে আপনি কতটুকু সহযোগিতা পেয়েছেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : প্রথমদিকে বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং গ্রহণ করতে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল বলে। কিন্তু বর্তমানে ব্যাপারটা সন্তোজনক। কিছুটা হলেও এখনও আছে বলে মনে হয়। তবে দপ্তরগুলির সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন। এখন সহযোগিতা না করে উপায় নেই। তবে আইন মানলে এবং জানলে সকলেই উপকৃত হবে এবং সেজন্য সকলেরই সহযোগিতা অবশ্যই হবে।

কাফি আনোয়ার : কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কক্সবাজারবাসীর জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটা দপ্তর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রদর্শনের এটি একটি সুদূরপ্রসারী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ। যা আগামীদিনে পর্যটনশিল্পবান্ধব অর্থনীতি ও বঙ্গোপসাগর নির্ভর অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি) সমৃদ্ধ, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত । এক্ষেত্রে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কতটুকু এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সম্পর্কে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষকে কতটুকু সচেতন করতে পেরেছেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা সিংহভাগ। তবে সরকারের মুখপাত্র-জেলা প্রশাসনের সমন্বয় এবং সহযোগীতা অত্যন্ত প্রয়োজন। সরকারী দায়িত্বে, জনগণের মনোভাব পরিবর্তনে এবং এলাকার উন্নয়নে সকলের হাত বাড়ানোর প্রয়োজন। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ অব্যাহত আছে।

কাফি আনোয়ার : কউক ইতোমধ্যে দৃশ্যমান বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যা জনমনে ইতিবাচক পরিবর্তনও এনেছে। আপনার ব্যক্তি ইমেজ, সাহসী পদক্ষেপ, আপোষহীন মনোভাব, নিষ্ঠা ও সততা সর্বক্ষেত্রে প্রশংসিতও হয়েছে। আবার অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণকারী, আধুনিক নগরায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা ও সংকটসৃষ্টিকারী এবং ইমারত নির্মাণবিধি লংঘনকারীদের নিকট একটি কঠিন বার্তাও পৌঁছে গেছে। আপনার এই মানসিক দৃঢ়তার উৎস কী দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা নাকি সেনা জীবনের অর্জন?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : আমি এই কক্সবাজারের সন্তান। এখানে আমি কোন কিছু নিতে আসি নাই। আমার দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন একটি আধুনিক পর্যটননগরী গড়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবন্ধ। তাই প্রথমদিনে আমি বলেছি আমি ভাঙ্গবো তবে মচ্‌কাবো না। এটি একটি দুর্নীতিমুক্ত, সহজলভ্য সকলের জন্য উন্মুক্ত দপ্তর হবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে অঙ্গীকার করেছি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করব। আমার পাওয়ার কিছু নেই।

কাফি আনোয়ার : বিভিন্ন মাধ্যমে পর্যটননগরী কক্সবাজারকে আগামীদিনের আধুনিক বিশ্বের কসমোপলিটান সিঙ্গাপুর কিংবা হংকং’য়ের সাথে তুলনা করা হচ্ছে, আসলেই কি আপনারা সেভাবে এগুতে পারছেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : সময় প্রয়োজন। ভাল, দক্ষ, অভিজ্ঞ জনবল হলে অবশ্যই ইনশে আল্লাহ আমি পারব বলে মনে করি। গত দু’বছরে যা করেছি, আমার মনে হয় ওভাবেই এগুচ্ছি।

কাফি আনোয়ার : আধুনিক ও উন্নত নগরব্যবস্থার পূর্বশর্ত নাগরিক অধিকার সুরক্ষা, জননিরাপত্তা, কানেকটিভিটি কর্মসংস্থান এবং উন্নত নাগরিক সুযোগসুবিধা, সেদিক দিয়ে কক্সবাজারের বর্তমান অবস্থান কী ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : এ সকল কাজে সরকারের অনেকগুলো দপ্তর জড়িত। প্রত্যেকে যদি স্ব-অবস্থানে কাজ করে তবে এটি অর্জন করা সহজ হবে। বর্তমান অবস্থা অগ্রগতির দিকে। আশা করি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কক্সবাজার একদিন আধুনিক ও উন্নত নগরে রূপ পাবে।

কাফি আনোয়ার : মেরিন ড্রাইভ সড়কে চালু হওয়া কউক এর আলোকায়ন প্রকল্প বেশ সাড়া ফেলেছে, এ উদ্যোগকে কক্সবাজারবাসী স্বাগত জানিয়েছে, এই রকম জনবান্ধব প্রকল্পকে আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা আছে কী ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : হ্যাঁ আছে। এ সকল প্রকল্প স্ব-অর্থায়নে করতে হয়। যেহেতু নতুন প্রতিষ্ঠান তাই আস্তে আস্তে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা আছে।

কাফি আনোয়ার : সরকার ইতোমধ্যে আগামী একশ বছরের মহাপরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্ল্যান’ ঘোষণা করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলাসহ সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এই পরিকল্পনার সাথে কক্সবাজারকে কিভাবে সম্পৃক্ত করবেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : ‘ডেল্টা প্ল্যানের’ সাথে কক্সবাজার অবশ্যই সম্পৃক্ত হবে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শীঘ্রই টেন্ডার আহবান করা হবে। তখন ডেল্টা প্ল্যানের আলোকে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। আমাদের এই পরিকল্পনার আলোকে কক্সবাজারকে একটি আধুনিক, পরিবেশবান্ধব, পর্যটননগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

কাফি আনোয়ার : বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক ব্লু-ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি, গভীর সমুদ্রবন্দর, আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর আর্ন্তজাতিক নৌ টার্মিনাল, রেল লাইন, সীতাকু- থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রস্তাবিত মেরিন ড্রাইভ এক্সপ্রেসওয়ে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন প্রকল্প বাস্তবায়নে কউক এর ভূমিকা কতটুকু ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃক কাজ হবে। কিছু কিছু ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কিছু পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। তবে সকল প্রকল্প কউক এর মহাপরিকল্পনায় অর্ন্তভুক্তির জন্য আমার অফিস থেকে পত্র প্রেরণ করেছি। আমাদের নতুন মহাপরিকল্পনার কাজ অচিরেই শুরু হবে। সকল দপ্তর কর্তৃক স্থানীয় পরিকল্পনাকে সমন্বয় সাধন করে একটি চুড়ান্ত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

কাফি আনোয়ার : বাঁকখালী নদীকেন্দ্রিক রিভার ট্যুরিজম পরিকল্পনার অধীনে নদীর দু’তীরে রিভার ড্রাইভ নির্মাণের কথা কয়েক বছর ধরে শোনা যাচ্ছিল, এটি এখন কোন পর্যায়ে আছে ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ পাশ বরাবর বিমানবন্দর হতে ছমুদাব্রীজ পর্যন্ত ১৫০ ফুট প্রশস্তের সবুজ বেষ্টনিসহ একটি আধুনিক নান্দনিক বাইপাস সড়ক হবে। ইতিমধ্যে এ সড়কের ডিজিটাল সার্ভে হয়েছে। ডিপিপি প্রস্তুতি চলমান। এটি একটি বড় প্রকল্প । অনেক স্তর ও পদ্ধতি আছে। তাই সময় লাগবে।

কাফি আনোয়ার : পর্যটননগরী কক্সবাজারকে ঘিরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বিশেষ আগ্রহ ও সুদৃষ্টি আছে, তাঁর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কতটুকু প্রস্তুত বলে মনে করেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : এক কথায় এই মহাপরিকল্পনা তৈরীর জন্য অনেক আগে কাজ শুরু হয়েছে। তবে ডিপিপি তৈরী করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদন করতে দেড় বছরের অধিক সময় পার হয়েছে। এখন টেন্ডার হবে। মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য দু’বছর সময় ধরা আছে। কক্সবাজার সকল স্তরের প্রতিনিধি/জনগণকে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

কাফি আনোয়ার : পর্যটন শহর হিসেবে কক্সবাজার ক্রমশঃ বিস্তৃত হচ্ছে, বাড়ছে গণপরিবহন, আবাসন, জনসংখ্যা তেমনি বাড়ছে বহুমুখি সমস্যা ও সংকট, এই সমস্যা ও সংকট নিরসনে কউক এর পরিকল্পনা কী ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : অবশ্যই কউক এর পরিকল্পনা আছে। তবে বিভিন্ন সংস্থাসমূহের সমন্বয় এবং সৎ ইচ্ছা খুবই প্রয়োজন। দিন দিন সমস্যা বাড়ছে। নতুন মেয়রের সংগে আমার বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। আমরা একত্রে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করব। আমাদের মহাপরিকল্পনায় এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকবে।

কাফি আনোয়ার : কক্সবাজারকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে টেকসই স্যুয়ারেজ নেটওয়ার্ক, কেন্দ্রিয়ভাবে সুপেয় পানির সরবরাহ নেটওয়ার্কেরও অভাব একটি বড় অন্তরায়, যে কারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরে চাপ বাড়ছে এবং ক্রমশ পানির স্তর নিম্নগামি, আগামিতে যা মানবিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে, এ বিষয়ে আপনাদের কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে কী ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : এটি মহাপরিকল্পনায় অর্ন্তভুক্ত আছে। এগুলো পৌরসভার কাজ। নতুন মেয়র এ সেবামূলক বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিবে বলে আমি আশা করি। আমরা কউক এর পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা অবশ্যই করব। আমরা একটি আধুনিক ও আকর্ষনীয় পর্যটন নগরী গড়ে তুলতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি।

কাফি আনোয়ার : ভবিষ্যতে কক্সবাজারকে কোন পর্যায়ের নগর হিসেবে দেখতে চান ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : ভবিষ্যতে কক্সবাজারকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক পর্যটনবান্ধব নগর হিসেবে দেখতে চাই। একটি সুন্দর, নান্দনিক, নিরাপদ সকল সুবিধাসহ পেতে চাই।

কাফি আনোয়ার : কক্সবাজারকে আধুনিক ও উন্নত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আলাদা মাষ্টার প্ল্যান ও ড্যাপ (ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যান) করা হয়েছে কী ? নাকি পূর্ববর্তী মাষ্টার প্ল্যান অনুসরণ করা হচ্ছে ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : একটি মাষ্টার প্ল্যান আছে। যেটি নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক করা হয়েছে যা ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর কক্সবাজার টাউন এন্ড সী-বীচ আপটু টেকনাফ (উবাবষড়ঢ়সবহঃ চষধহ ভড়ৎ ঈড়ী’ং ইধুধৎ ঞড়হি ধহফ ঝবধ ইবধপয ঁঢ়ঃড় ঞবশহধভ) লেখা আছে। কিন্তু ড্যাপ (উঅচ) বা ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যান (উবঃধরষং অৎবধ চষধহ) করা নেই। বর্তমানে কউক নতুন মাষ্টার প্ল্যান যেটি উঅচ ’সহ করার অন্যান্য পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ আছে।

কাফি আনোয়ার : অতীব সজ্জন, সাহসী, দৃঢ়চেতা, দায়িত্ববান নেতা হিসেবে সমগ্র কক্সবাজারে আপনার একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, যে কারণে এলাকার সাধারণ মানুষের নিকট আপনার প্রতি প্রত্যাশাও দিন দিন বাড়ছে, আবার অনেকে ঈর্ষাপরায়ন। দলীয় রাজনীতিকে ‍ঘিরে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : আমাদের জীবন অতি অল্প সময়ের। মহান আল্লাহ সুযোগ দিয়েছেন। প্রত্যাশা ও স্বপ্ন আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যোগ্য মনে করেছেন তাই এ দায়িত্বে আছি। রাজনীতিতে আমাকে বড় দায়িত্ব দিলে ওই দায়িত্বও নিঃস্বার্থভাবে জনসেবার লক্ষে দেশের জন্য পালন করব।

কাফি আনোয়ার : শুনেছি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার কাছে অনেক সময় রাজনৈতিক চাপ আসে, কিন্তু আপনি সবটাই দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা করেছেন, রাজনৈতিক চাপের কারণে কখনো কি আপনার কাজে গতিহীনতা এসেছে বলে মনে করেন ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : সৎ পথে থাকলে, নিয়ম মেনে চললে, ব্যক্তিস্বার্থকে বাদ দিয়ে দেশের ও মানুষের স্বার্থে কাজ করলে যেকোন প্রকারের চাপকে সমস্যা মনে হয় না। তবে মনে রাখতে হবে অবৈধ, অনিয়মকে আশ্রয় দেয়া যাবে না। রাজনৈতিক চাপ আসবে তবে বুঝিয়ে দিতে হবে। আমি আমার নীতির প্রতি অবিচল।

কাফি আনোয়ার : সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলীয় মনোয়নের ব্যাপারে অনেক কানাঘুষা, দৌঁড়ঝাঁপ চলছে, মাঝে মাঝে আপনার নামও শোনা যাচ্ছে, আসলে ব্যাপারটা কতটুকু সত্য ?

লেঃ কর্ণেল (অব:) ফোরকান আহমদ : এটি দলীয় সিদ্ধান্ত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। আমাকে যদি উপযুক্ত মনে করেন তবে অবশ্যই দলীয় মনোনয়ন চাওয়া হবে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার উত্তোরত্তর সফলতা কামনা করি। ধন্যবাদ।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।