আলমগীর মানিক,রাজস্থলী থেকে ফিরে ॥

অবৈধ বন্দুকের নল নয়,জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস মন্তব্য করে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেছেন, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের উপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই রাজনীতি করছি। জাতি-ধর্ম বিভেদ সৃষ্টি নাকরে অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হয়ে পাহাড়ের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং পাহাড়ের মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আগামীতে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর এটি করতে হলে সর্বাজ্ঞে অত্রাঞ্চলের অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে তথা স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল স্তরের জনসাধারনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে মন্তব্য করে দীপংকার তালুকদার বলেন, অস্ত্রের জবাব অস্ত্র দিয়ে নাদিয়ে অস্ত্রধারীদের ধরিয়ে দিতে হবে। কারন অস্ত্র কখনো জীবন দিতে জানে না, নিতে জানে। তাই অবৈধ অস্ত্রধারীরা কখনো জীবন রক্ষা করেনা, তাদের হাতে প্রতিনিয়তই মরছে পাহাড়ে সাধারণ মানুষ। তাই বন্দুকের নলে বিশ্বাস রাঙামাটির আওয়ামীলীগ করে না উল্লেখ করে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আস্থা ও বিশ্বাসের কারনেই জনরায়ের উপর ভরসা করছি। সে লক্ষ্যে রাঙামাটিবাসীকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পাহাড়ের জনগণের অধিকার হরণকারিদের রুখে দাঁড়াতে অস্ত্রের জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন দীপংকর তালুকদার। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাঙামাটির রাজস্থলীতে আয়োজিত আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই দাবি জানিয়েছেন।

রাজস্থলী বাজারে কয়েকশ নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে আয়োজিত জনসভায় দীপংকর তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, পাহাড়ের জনগণকে আবারো দেশান্তরী করার অপচেষ্ঠা করা হচ্ছে” আমরা মনে করি একটা দেশ থেকে আরেকটা দেশে চলে যেতে বাধ্য করা অথবা চলে যেতে বলাটা রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল। পার্বত্য চট্টগ্রামে এই ধরনের ঘৃন্যতম কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নীতিনির্ধারনী পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

জনাব দীপংকর বলেন, পাহাড়ের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে আ:লীগ রাজনীতি করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে কাউকে রাজা, হেডম্যান, কার্বারী অথবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে পাহাড়ে আওয়ামীলীগ রাজনীতি করেনা। কিন্তু একটি পক্ষ হুমকি-ধামকি ও প্রলোভন দেখিয়ে পাহাড়ের মানুষজনকে তাদের সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি করতে অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করছে। এতেই থেমে নাথেকে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলো স্থানীয় পাহাড়ি জনসাধারণকে আওয়ামীলীগের মিটিং-মিছিলে অংশগ্রহণ না করতেও প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকিসহ হামলা চালাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পাহাড়বাসী।

পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৌকায় ভোট দিন, পাহাড়ে উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৌকার বিকল্প নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ যদি এই অঞ্চলের আসন পায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের উন্নয়নে আরো বেশি আন্তরিক হবে বলেও মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের এই সদস্য। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের পতাকাতলে দলে দলে লোক আসছে কারন আওয়ামীলীগ প্রতিটি মানুষের ভালো চায় এবং সকল সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন।

এদিকে জনসভায় তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আগামী নির্বাচনে রাঙামাটি থেকে দীপংকর তালুকদারকে নৌকা মার্কায় বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রী তথা দলীয় সভানেত্রীকে উপহার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আসন্ন একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমুল পর্যায়ে জনমত গঠনের লক্ষ্যে স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে তৃতীয় উপজেলা হিসেবে রাজস্থলীতে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত জনসভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উবাচ মারমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার ছাড়াও উক্ত জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি জাহিদ আকতার, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা মহিতা দেওয়ান, যুব মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী রোকেয়া বেগম,

জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা, বিলাইছড়ি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য জয়সেন তংচঙ্গ্যা, রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পুলক বড়ুয়া, রবার্ট ত্রিপুরা, মোঃ নুরুল হক, লংবতি ত্রিপুরা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।