শাহেদ মিজান, সিবিএন:
মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ কক্সবাজারে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে স্থানীয় লোকজনকে বঞ্চিত করায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খানের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা। শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে টুয়াক আয়োজিত কক্সবাজার পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মুজিবুর রহমানের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সেখানে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকও উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘কক্সবাজার অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলামান রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কক্সবাজারের মানুষ নিজের একমাত্র সম্ভল জমিগুলো দিয়ে দিয়েছেন। এতে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। কিন্তু এসব উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমে বঞ্চিত স্থানীয় লোকজনকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। বাইর থেকে হাজার হাজার লোকজন এসে সব সুবিধা ভোগ করছে।’
মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের কারণে জমি হারিয়েছে অনেক মানুষ। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। কিন্তু সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন স্তরে ব্যবসা করছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন। স্থানীয়দের সেখানে সুযোগ চাইলে দেয়া হচ্ছে না। সেখানে হাজার হাজার শ্রমিককে কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এটা বড়ই দুঃখ ও কষ্টের বিষয়। এটা হতে দেয়া যায় না। ক্ষতিগ্রস্তদের আগে সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কক্সবাজারে আয়ের ক্ষেত্রে আমাদের ইনভলভড করতে হবে। এখানে আমাদের একটি অংশ থাকতে হবে। আমার বাড়িতে মেজবান হবে, আমার জন্য একটি বাসন থাকবে না, এ হতে পারে না। আমার ভাই আশেক উল্লাহ রফিকের সাথে আমার দ্বন্দ্ব লেগে যায় ওখানে। আমি তাকে বলি এত ভদ্র হয়ো না ভাই। ভদ্র লোকের জন্য বাসনও থাকে না। তোমার জন্য একটা বাসন নেই, আমার জন্য নেই।’
আশেক উল্লাহ রফিককে উদ্দেশ্য করে এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘সে বলুক কত হাজার কোটি টাকার কাজ মাতারবাড়ি-ধলঘাটায় হয়েছে। আমার কোন নেতাকে সে ইনভলভড করতে পেরেছে? আমি এক পয়সা সেখান থেকে ইনকাম করতে পেরেছি কিনা? আমিতো লুটেরান না, আমি চাঁদাবাজি করবো না। আমি কী ব্যবসা করে খেতে পারবো না? আমি সেখানে জমি দিচ্ছি।’
নৌ-মন্ত্রী শাহাজান খানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি গরীবের রাজনীতি করেন, শ্রমিকের রাজনীতি করেন। কক্সবাজারে হাজার হাজার শ্রমিক আছে। বাইরকে থেকে কেন শ্রমিক এনে কাজ করাতে হবে? এটা হতে পারে না। প্রশাসনও অনেক বুঝ দিতে চায়। আমাকে কেন বুঝ দেয়া হবে, আমি কী এত সহজে বুঝ পাওয়ার মানুষ? সে জন্য যেখানে কথা বলতে পারি আমি সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করবো। তারপরও একথা গুলো আমি বলবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমর জনগণ টাকা পাবে এটাতে আমি সব চাইতে খুশি।’ এসময় তিনি কক্সবাজারকে পর্যটন রাজধানী ঘোষণার করারও দাবি জানান।
এড. সিরাজুল মোস্তফার এই প্রতিবাদী বক্তব্যে উপস্থিত লোকজন তালি দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।